চুড়ামনকাটিতে ব্যবসায়ীর লাশ ভৈরব নদে
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটিতে কাঠ ব্যবসায়ীর গোলাম মোস্তফাকে (৫৫) জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার রাতের কোন এক সময় ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। রোববার সকালে এলাকার ভৈরব নদ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
নিহত মোস্তফা চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা সরদার পাড়ার মৃত পাঁচু মন্ডলের ছেলে।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চুড়ামনকাটি গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহকে আটক করেছে। রাত ৯টা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি।
পুলিশ তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্তে নেমেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
নিহতের জামাই মেহেদী সজিব ও চাচা নূর ইসলাম জানিয়েছেন, গোলাম মোস্তফা শনিবার বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বের হন।
এসময় তিনি বাড়ি বলে আসেন ঘোনা গ্রামের বাসুদেবের কাছে পাওনা দুই লাখ টাকা আনতে যাবেন।
টাকা পেলে গাছের বাগান কিনতে হবে। রাত ১০ টার পর তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন।
তার মোবাইলে কল বাজলেও কেউ রিসিভ করেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান মেলেনি। তার মোবাইলে কল বাজলেও কেউ রিসিভ করেননি।
রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সন্ধান মেলেনি। রোববার সকাল ৯টার দিকেও মোস্তফার মোবাইলে দুই বার কল করা হয়।
নড়াইলে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতারোধে সাইকেল র্যালি
দুইবারই রিসিভ করলেও অপর প্রান্ত থেকে কথা বলেনি। নিহতের ছোট ছেলে হাবিবুর রহমান জানান,
রোববার সকালে জানতে পারি চুড়ামনকাটি-কাশিমপুর সড়কের ঘোনা গ্রামের রাম প্রসাদের মেহেগনি বাগানের নিচে বুড়ি ভৈরন নদে একজনের মৃতদেহ ভাসছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় নদের পাড়ে পড়ে চামড়ার স্যান্ডেলটি আমার পিতার ব্যবহৃত স্যান্ডেলের মতো দেখতে। তখন অন্যান্য স্বজনদের খবর দেয়া হয়।
নদ থেকে ওঠানো পর দেখতে পায় আমার বাবার গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। হাবিবুর রহমান আরো জানান, আমার পিতার সাথে কারো তেমন কোন শত্রুতা নেই।
খুন হওয়ার মতো কোন অপরাধ তিনি করেননি। ব্যবসায়ী আর্থিক লেনদেনের জেরে তাকে খুন করা হতে পারে।
সাজিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় ভৈরব নদের পানিতে একজনের লাশ ভাসছে।
তার মুখ নিচে আর পিট ছিলো পানির ওপরের অংশে। শরীরের ওপর কিছু কচুরিপনাও রাখা ছিলো।
স্থানীয়দের সহায়তায় লাশ ওঠানোর পর দেখা যায়, দুর্বৃত্তরা গোলাম মোস্তফার গলায় ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন রয়েছে।
সেখানে তার লাশ ভাসছে সেখান থেকে ১৫ খেকে ২০ গজ দুরের পাড়ে তাকে জবাই করেছে দুর্বৃত্তরা।
কি কারণে কারা তাকে খুন করেছে তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
চুড়ামনকাটিতে ব্যবসায়ীর লাশের ময়নাতদন্ত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মূলত তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত করছে।
সেগুলো হলো অভ্যান্তরীন কোন্দল, আর্থিক লেনদেন ও মাদক সেবন নিয়ে তার কাছের লোকজনের সাথে দ্বন্দ্ব।
এরমধ্যে যে কোন একটি ঘটনার জেরে গোলাম মোস্তফা খুন হতে পারে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন,
ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও একজন উঠতি বয়সের সন্ত্রাসীর ওপর নজর রয়েছে।
এছাড়া সন্দিগ্ধ হিসেবে আটক যুবকের কাছ থেকেও মিলতে পারে খুনের সম্পর্কে তথ্য।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ২০ অক্টোবর সদর উপজেলার চেয়ারম্যানে পদের উপ-নির্বাচনে
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুর জাহান ইসলাম নীরার পক্ষে ভোটের মাঠে থাকায় প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি কর্তৃক লাঞ্চিত হয়েছিলেন গোলাম মোস্তফা।
এই নিয়ে উভয়ের মধ্যে ক্ষোভ ছিলো। আবার খুনের আগের দিন গোলাম মোস্তফার সাথে অনেক সময় ছিলো উঠতি বয়সের ওই সন্ত্রাসী।
যে কারণে তারা সন্দেহের বাইরে নয়।
নিহতের স্বজন আব্দুল মান্নান, আমিরুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহর মোটরসাইকেলের পিছনে বসে
গোলাম মোস্তফা চুড়ামনকাটি বাজার থেকে ঘোনা রোডের দিকে যাচ্ছিলেন বলে অনেকে দেখেছে।
তাদের ধারণা আব্দুল্লাহর পরিকল্পনায় গোলাম মোস্তফাকে নদের পাড়ে নিয়ে মাদক সেবন করিয়ে দুর্বল করা হয়।
পরে আব্দুল্লাহসহ অন্য দুর্বৃত্তরা কাছে থাকা টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে জবাই করে লাশ নদে ফেলে দেয়।
শাহ আমানতে বিদেশি মুদ্রাসহ ২ যাত্রী আটক
তারা আরো জানান, ব্যবসায়ীক কারণে আব্দুল্লাহর কাছে কয়েক লাখ টাকা পাবেন গোলাম মোস্তফা।
চুড়ামনকাটিতে ব্যবসায়ীর নগদ টাকার লোভ ও পাওনা টাকা আত্মসাৎ করার জন্য আব্দুল্লার পরিকল্পনায় তাকে খুন করা হতে পারে।
বিষয়টির সঠিক তদন্ত করলে সত্য ঘটনা জানা যাবে।
এদিকে ,বাগডাঙ্গা ও চুড়ামনকাটি এলাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, খুনিরা গোলাম মোস্তফার খুব কাছের লোক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেননা সেখানে তাকে খুন করা হয়েছে সন্ধ্যা নামার সাথেই সচরাচর সেখানে কোন মানুষ যায় না।
ফলে পরিচিত মানুষ ছাড়া সেখানে গোলাম মোস্তফা যাওয়ার কথা না। মোস্তফা নিয়মিত ফেনসিডিল সেবন করতেন।
ফলে মাদক সেবনের কথা বলেই তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সূত্রের ধারণা।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানিয়েছেন, চুড়ামনকাটিতে ব্যবসায়ীর
এই ঘটনায় চুড়ামনকাটি এলাকার স মিল ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
রাত ৯টা পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেননি। পুলিশ হত্যার কারণ ও খুনিদের শনাক্তে মাঠে নেমেছে।
Pingback: নওগাঁয় দু’বারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতায় চাল বিতরন - দ্যা বাংলা ওয়াল
Pingback: নিহত মোস্তফার ফোন উদ্ধারের গুঞ্জন, স্ত্রীর মামলা - দ্যা বাংলা ওয়াল