জাল দলিলে শার্শার কাচারি বাড়ির সরকারি সম্পত্তি দখল
জাল দলিলে মাধ্যমে শার্শার কাচারি বাড়ির সরকারি সম্পত্তি দখল : উচ্ছেদ করতে সরকারি কৌঁসুলির মতামত।
অবশেষে যশোরের শার্শার ঐতিহ্যবাহী কাচারি বাড়ির জমি দখলদার উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসনকে আইনগত মতামত দিয়েছে আদালতের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) দফতর।
ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয়া ওই জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন থেকে মামলা করার জন্য চিঠি দেয়া হলে প্রথম ধাপে এই মতামত দেন
যশোর আদালতের পিপি কাজী বাহাউদ্দীন ইকবাল। এরপর প্রিন্ট পর্চার গেজেট এলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করে রেকর্ড সংশোধন করা হবে বলেও
জেলা প্রশাসনকে তিনি অবহিত করেন।
বিষয়টি জানাজানির পর সরকারি কাছারিবাড়ির জমি উদ্ধারে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেন স্থানীয়রা।
সর্বশেষ গত বছরের ১৭ ফেব্রæয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে জমিটি উদ্ধারে যশোরের জেলা প্রশাসককে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, শার্শার কাচারি বাড়ির সরকারি প্রায় এক বিঘা বাস্তুু শ্রেণির জমি ধানী শ্রেণি দেখিয়ে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয়ার অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় ফজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রথমে একসনা বন্দোবস্ত নিলেও পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সরকারি জমি নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেন।
উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার দফতর থেকে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
শার্শা উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী ওই জমি সরকারের অনুকূলে নেয়ার জন্য
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে এলএসটি মামলা করার নির্দেশ দেন (স্মারক নং-০৫.৫৩৫.০১৮.০০.০০০.০০৩.২০১৯-১৮৪৮)।
শার্শার ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭২ নম্বর শার্শার মৌজার সাবেক ১২৫৫ দাগের ৩৫ শতক সরকারি জমি
ফজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রথমে একসনা বন্দোবস্ত নেন।
এরমধ্যে ৩২ দশমিক ৬৩ শতক (প্রায় এক বিঘা) জমি ১৯৮০ সালের ২ ফেব্রæয়ারি নিজ নামে রেকর্ড করে নেন ফজলুর রহমান।
প্রথম দিকে অতি গোপন থাকলেও তার মৃত্যুর পর ছেলে কবির হোসেন, জসিম উদ্দিন, মনির হোসেন ও
ইমাম হোসেন সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রকাশ্যে দখলে নেয়।
ওই জমির ওপর দিয়ে রাস্তা ও ড্রেন গেলেও স্থানীয়দের ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। বাসাবাড়ির পানি ড্রেনে দিতে নিষেধ করেন তারা।
এ নিয়ে প্রতিবেশীদের মারধর করেছে কবির-জসিম ও তার ভাইয়েরা।
সরকারি জমি রেকর্ড করে নিজেদের দাবি করা কবির-জসিমদের বেপরোয়া আচরণ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠকও হয়েছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। এদিকে সরকারি ওই জমি কীভাবে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড হলো তা নিয়ে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসনও।
জাল দলিলে মাধ্যমে শার্শার উপজেলা ভূমি অফিস থেকে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়।
শার্শায় ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের আট লাখ টাকা ছিনতাই
তৎকালিন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করেন,
কালেক্টরেট যশোরের নামে কাচারি বাড়ির বাস্তুু শ্রেণির জমি। কাছারি বাড়ির জমি ধানী হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।
ফজলুর রহমানের মারা যাওয়ার পর তার সন্তানদের নামে রেকর্ড করা হয়। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে চিঠি লেখেন।
এরপর যশোরের জেলা প্রশাসকের দফতর থেকে এলএসটি মামলা করার জন্য সরকারের পিপিকে চিঠি দেয়া হয়।
রাজশাহীর চারঘাটে পৌর নিবার্চনে নৌকার নির্বাচনী সভা
যশোর আদালতের পিপি কাজী বাহাউদ্দীন ইকবাল জানান, চিঠি পেয়ে তিনি সরেজমিনে যান।
কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন সরকারের কাছারি বাড়ির সম্পত্তি জাল দলিল করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শার্শা মৌজার প্রিন্ট পর্চার রেকর্ড প্রকাশিত হলেও এখনো গেজেট হয়নি।
যে কারণে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করে রেকর্ড সংশোধন করতে অপেক্ষা করতে হবে।
তাই আপাতত দখলদার উচ্ছেদ করে সরকারের এই সম্পত্তি তারকাঁটা বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখতে মতামত দেয়া হয়েছে।

Pingback: তিন বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাকিমের জানাজা অনুষ্ঠিত - দ্যা বাংলা ওয়াল