দেশব্যাপীধর্ম চিন্তাসব খবর

বাংলাদেশেই প্রথম দুর্গা পুজোর মন্দিরের চমক অষ্টধাতুর মূর্তি

রাজশাহী: খাতায় কলমে সাল তারিখ নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে৷ তবুও ৮৮৭ বঙ্গাব্দ বা ইংরাজির ১৪৮০ খ্রি:-কে মোটামুটি প্রাতিষ্ঠানিক শারদীয়া দুর্গা পুজোর সূচনা বছর বলে ধরা হয়৷ সেই হিসেবে অন্তত সাড়ে পাঁচশ বছর পার হয়েছে৷ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম দুর্গা পূজা যেখানে হয়েছিল সেই অঞ্চলটি পড়ে এখন বাংলাদেশে৷

রাজশাহীর তাহেরপুরের রাজামশাই কংসনারায়ণ তাঁর পারিবারিক মন্দিরে প্রথম দুর্গা আরাধনা করেছিলেন৷ শারদ প্রাতে দেবী বন্দনার সেই শুরু৷ সময় পেরিয়েছে অনেক৷ তাহেরপুর কখনো পূর্ব পাকিস্তানে পরে বাংলাদেশের অন্তর্গত একটি বর্ধিষ্ণু স্থান হিসেবে সুপরিচিত৷ আর এখানকার রাজবাড়িতেই রয়েছেন বাংলার প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক পূজিতা দেবী দুর্গা৷

কালের নিয়মে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের অন্যতম সেই মন্দির৷ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের তরফে বারবার দাবি উঠেছিল সেটির সংস্কারের৷ এবার সেই কাজে হাত দিতে চলেছে সরকার৷ আসন্ন দুর্গোৎসবের আগেই মন্দির সংস্কারের বিষয়ে একজোট হয়েছেন এলাকাবাসী৷ রাজশাহী পৌরসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ৷ বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও স্থানীয় বাগমারার সাংসদ এনামুল হকের উদ্যোগে এই মন্দিরের জন্য দান করা হল অষ্টধাতু দিতে তৈরি ব্রোঞ্জের দুর্গা মূর্তি৷

এক টনের বেশি ওজনের এই প্রতিমা তৈরি করতে ২২ লক্ষের (বাংলাদেশি মুদ্রা) বেশি অর্থ খরচ হয়েছে৷ গত ছয় মাস ধরে মন্দিরে সংস্কার কাজ করেছে কেএন ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রায় সাড়ে পাঁচ শত বছর আগে রাজা কংস নারায়ণ রায় বাহাদুর তাহেরপুর রাজবাড়ীতে অবস্থিত শ্রী শ্রী দুর্গা মাতা মন্দির থেকে শারদীয় দুর্গা পূজা শুরু করেন৷ তিনি চারটি মন্দির তৈরি করিয়েছিলেন৷

এই সব স্থাপত্য গোবিন্দ মন্দির, শিব মন্দির, দুর্গা মাতা মন্দির এবং কালীমন্দির নামে সুপরিচিত। এই চারটি মন্দিরেই পূজা করতেন রাজা কংস নারায়ণ। তাহেরপুর থেকেই যেহেতু শারদীয় দুর্গা পূজার প্রচলন হয়েছিল, তাই সেই ইতিহাসকে স্মরণীয় রাখতে উদ্যোগী হয়েছে রাজশাহী প্রশাসন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *