বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসব খবর

নাসার ক্যামেরায় বিক্রম অধরা

অবতরণস্থলের ছবি মিলেছে। কিন্তু ভারতের ‘চন্দ্রদূত’ কোথায়, তার কোনও সন্ধান পায়নি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

অবতরণস্থলের ছবি মিলেছে। কিন্তু ভারতের ‘চন্দ্রদূত’ কোথায়, তার কোনও সন্ধান পায়নি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তারা টুইট করে জানিয়েছে, অবতরণস্থলের ছবি পেলেও বিক্রমকে ক্যামেরার ধরা যায়নি। কারণ, ছবি তোলার সময় চাঁদে সূর্যাস্ত হয়ে গিয়েছিল। আলো কম থাকায় চাঁদের মাটিতে বিক্রম ঠিক কোথায় আছে, তা বোঝা যায়নি। 

তবে নাসা জানিয়েছে, চন্দ্রপৃষ্ঠের ঠিক যে-জায়গায় বিক্রমের নামার কথা ছিল, তাদের লুনার রিকনিস্যান্স অরবিটার অক্টোবরে আবার ওই জায়গার উপরে আসবে। সেই সময় দিনের আলোয় ফের বিক্রমের ছবি তোলার চেষ্টা চালানো হবে। ইসরো সূত্রের খবর, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ‘সিমপেলিয়াস এন’ এবং ‘ম্যানজিনাস সি’ নামে দু’টি গহ্বরের মাঝখানে বিক্রমের অবতরণের কথা ছিল। নাসার ছবিতে গহ্বর দু’টিকে দেখা গেলেও আধো-অন্ধকারে বিক্রমের কোনও চিহ্ন দেখা যায় নি।

বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকের মতে, অবতরণের সময় নির্দিষ্ট জায়গার বদলে আশপাশে কোথাও আছড়ে পড়ে থাকতে পারে বিক্রম। চাঁদের এবড়োখেবড়ো জমিতে গোধূলির সময় অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যেতে পারে সে। তার ফলেই হয়তো ক্যামেরাবন্দি করা যায় নি তাকে। দিনের আলোয় ফের ছবি তোলা হলে বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত ২২শে জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে ‘জিএসএলভি মার্ক থ্রি’ ওরফে বাহুবলী রকেটে চাপিয়ে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। তার তিনটি অংশ: অরবিটার, ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। ৬ই সেপ্টেম্বর গভীর রাতে প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতরে নিয়ে পাখির পালকের মতো অবতরণের (সফট ল্যান্ডিং) কথা ছিল বিক্রমের। অবতরণের পরে প্রজ্ঞান বিক্রমের শরীর থেকে বেরিয়ে আসত রোভার প্রজ্ঞান। চাঁদের মাটি ছোঁয়ার তিন মিনিট আগে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায় ইসরোর। তার পর থেকে সেই অন্তর্ধান রহস্যের সমাধান হয়নি। বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকেরই ধারণা, অবতরণের সময় গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না-পেরে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়েছে (হার্ড ল্যান্ডিং) বিক্রম।

ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন একটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, বিক্রমের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। তবে অরবিটার নিজের কাজ করে চলেছে। বিক্রমের অবতরণের ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে একটি কমিটি। সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *