ঋতু পরিবর্তনে রাজশাহীতে বেড়েছে রোগব্যাধি

তীব্র গরমের প্রবণতা শেষ। তবে দিনের বেলা গরম থেমে নেই! দিন শেষে সন্ধ্যায় নামছে হালকা ঠাণ্ডা, আর ভোর রাতে কাঁথা কিংবা কম্বল জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। গরম শেষে এখন শীতের আগমনী বার্তা। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে।

এর সঙ্গে বেড়েছে নানান রোগের প্রবণতা। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে প্রতিনিয়ত শিশুসহ সব বয়সের মানুষ এখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অসুস্থ হয়ে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন রামেক হাসপাতালে। রামেক হাসপাতালের তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে মেডিসিন, শিশু ও চর্ম বিভাগে।

মেডিসিনের চারটি ইউনিটে নারী-পুরুষ মিলে দুই সপ্তাহ আগে এক হাজারের অধিক রোগী থাকলেও রবিবার ২ হাজার ২০০ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত এক মাসে চার হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত রোগে। যাদের মাঝে জ্বর-সর্দি ইনফ্লুয়েঞ্জা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, অ্যাজমা ও হাঁপানি রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। শিশুদের মাঝে নিউমনিয়া, জ্বর-সর্দি শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কখনো ঠাণ্ডা কখনো গরম ও বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হচ্ছে নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা। এ সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা ও ভাইরাসজনিত রোগে মানুষ খুব সহজেই আক্রান্ত হচ্ছে। দিনে গরমের কারণে কখনো শরীর থেকে ঘাম ঝরছে, আবার রাতে ঘুমনোর সময় ঘরে ফ্যান চলায় ঠাণ্ডা লেগে শরীরে তাপমাত্রার হেরফের হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে অসুস্থতা ও জ্বরের স্বাভাবিক কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে রাস্তার ধুলোবালি উড়ে চোখমুখ জ্বালাপোড়া করছে, চোখে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটছে। আর বাইরের বিভিন্ন খাবার ও পানি খাওয়ায় ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টজনিত, বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগ একজন থেকে আরেক জনের মাঝে চলে যায়। এ সময় ব্যাকটেরিয়া, ইনফেকশন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যা মানুষের শরীর সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে পারে না।

রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থ মণি জানান, এখন শীতের আগমন ঘটছে। দিনে গরম থাকলেও রাতে ও ভোর বেলায় হালকা ঠাণ্ডা লাগছে। অনেকে বাসায় ফ্যান ছেড়ে ঘুমানোর কারণে রাতে ঠাণ্ডা লাগছে। আর বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেক বেশি। শিশুদের শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।

দিনের বেলায় গরমে ঘাম বসে যাচ্ছে। এ সময়ের মাঝে জ্বর-সর্দি ইনফ্লুয়েঞ্জা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, অ্যাজমা ও হাঁপানি রোগীদের সর্বদা সাবধান থাকতে হবে। দিনে শরীরে ঘাম না বসে, আর রাতে ঠাণ্ডা না লাগে- সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। জ্বর সর্দিতে প্রাথমিক অবস্থায় প্যারাসিটামল খেতে হবে। অবস্থার অবনতি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা.মাহাবুবুর রহমান খান বাদশা জানান, ঋতু পরিবর্তনের সময়ে বড় ছোট সবাইকে সতকর্তা অবলম্বন করে থাকতে হবে। এ সময় সকল মানুষের অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। ইনফ্লুয়েঞ্জা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ার প্রবণতা অ্যাজমার প্রবণতা বেড়ে যায়।

তিনি আরও জানান, রাতে বিশেষ করে ফ্যানের বাতাসে ঠাণ্ডা লাগে। এই সময় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে যেন ঠাণ্ডা না লাগে। আর কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে চলতে হবে।

Total Page Visits: 314 - Today Page Visits: 1

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *