কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ভুতুড়ে কোটি টাকা!
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া): কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার সোনালী খবরের কথিত সাংবাদিক সোহেল রানা এন্ড গং এর রেজিষ্ট্রি অফিস কেন্দ্রীক দুর্নীতির কারিগর সোহেল দৌলতপুর ছেড়েছেন। ভুয়া পে অর্ডারের মাধ্যমে গ্রাহকের নিকট থেকে উত্তোলিত অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে সোনালী ব্যাংক দৌলতপুর শাখার কর্মকর্তাদেরকে ধোঁকা দিয়ে ৯৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে ধরা খেয়েছেন। শেষমেশ সহযোগীকে ৫ কাঠা জমি লিখে দিয়ে পিঠ বাঁচিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন।
অনুসন্ধানকালে ঘটনার বিষয়ে খবর রাখেন তাদের মুখ থেকে জানা যায় কথিত এই সাংবাদিক সোহেল রানা উপজেলা পরিষদ চত্বরে ভুক্তভোগীদের হাতে উত্তম মধ্যম খেয়েছেন। খবরটির সত্যতা জানার জন্য দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন সাংবাদিক বা কথিত সাংবাদিক এরকম কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা বিষয়টি অবগত নন।
যদিও প্রতিবেদকের কাছে একাধিক সুত্রে তথ্য আছে সোহেল এবং মনিরুজ্জামান নামের দুই ব্যাক্তি অর্থ আত্মসাৎ করে গণপিটুনি খেয়েছেন। তবে ওসি আরও জানান, শারিরীক প্রতিবন্ধী একজন ব্যাংক কর্মকর্তা থানায় জিডি করার জন্য এসেছিলেন।
ধুর্ত সোহেল রানা ব্যাংকে পে অর্ডার টাকা উত্তোলনের জন্য জমা দানের পুর্বেই এগুলোকে ভুয়া পে অর্ডার বলে উল্লেখ করে ১২ টি তার ভাষ্যমতে ভুয়া পে অর্ডারের ফটোকপি সংযুক্ত করে ব্যাংকের দায়িত্বশীল ও বিশ্বস্থ একজন জেষ্ঠ কর্মকর্তার উপর দায়ভার দিয়ে ও তার বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ম্যানেজার বরাবরে একখানা অবৈধ মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে নিজেকে ধোয়া তুলসীপাতা বলে উপস্থাপন করার কৌশল নিয়েছেন।
সোনালী ব্যাংক দৌলতপুর শাখার ম্যানেজার মোহাঃ ওবায়দুর রহমান (এসপিও) এই প্রতিবেদক এর নিকট বাজুডাঙ্গার মৃত জামিরুল ইসলাম এর পুত্র সোহেল রানা অত্র ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ভুয়া পেমেন্ট অর্ডার ব্লক সরবরাহ করেছেন মর্মে তাকে এড্রেস করে একখানা অভিযোগ দিয়েছেন।
ওবায়দুর রহমান সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন অভিযোগপত্রের সাথে সংযুক্ত পে অর্ডার এখনো ব্যাংকে উপস্থাপন করেনি কেউ। তার আগে পে অর্ডারের ফটোকপি ব্যাংকে উপস্থাপন করা ষড়যন্ত্র মুলক। ব্যাংকের সুনামহানী ঘটিয়ে সোহেল রানা মুল সত্যকে আড়াল করার অসৎ উদ্দেশ্যে ঢাল স্বরুপ অভিযোগ করেছেন। ব্যাংকের এই পর্যায়ের প্রতিটি অফিসার ব্যাংকিং কাজে সচেতন ও সৎ।
পরিস্থিতি ও বিশ্বাস ভঙ্গের কারনে সাধারন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সোহেল রানার প্রতারনার কারনে ব্যাংকের আর্থিক কোন ক্ষতি হয়নি। ব্যাংক ম্যানেজার বলেন, সোহেল রানা রেজিষ্ট্রি অফিস চলাকালীন প্রায়ই ব্যাংকে আসেন। গত ২৪ নভেম্বর তারিখে সোহেল রানা ব্যাংকে অনাকাংক্ষিত আচরণ করেন। সোনালী ব্যাংকের জেলার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা শাখা পরিদর্শন করে জানান,ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেনা।
খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধানের জন্য দৌলতপুর শাখার ম্যানেজার কে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন ঐ কর্মকর্তা,এমন তথ্যও পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা জমির উদ্দিন বর্তমানে প্যারালাইসিস রোগাক্রান্ত হলেও ব্যাংক কে অপব্যবহার করে অর্থ আয়ের অভ্যাস তার দীর্ঘ দিনের বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। শাখা ব্যবস্থাপনায়ও ত্রুটি রয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। বড় অংকের এই আর্থিক কেলেঙ্কারী নিয়ে এলাকায় শুনশান অবস্থা বিরাজ করছে।
অভিযুক্ত সোহেল রানার অবৈধ আয় ও প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এদিকে সোহেল অর্থ মন্ত্রনালয়ে নিজ সাক্ষরিত একটি চিঠি দিয়ে কর্মকর্তা জমির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ জানান। যদিও এধরনের অভিযোগ যে কেউই করতে পারেন মন্ত্রনালয় বরাবর,তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হয়। জামির উদ্দিন,সোহেল রানা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আর পাওনাদারদের পারস্পারিক দোষারপে ঘটনাটি চলছে।