সাতক্ষীরায় কলেজ ছাত্র জিম হত্যার মুল রহস্য উদঘাটন
মোটা অংকের মুক্তিপণের আশায় হত্যা করা হয় সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র রাসুল আহমেদ জিমকে (২২)।
গত বৃহস্পতিবার ( ২৩ জানুয়ারি) মাটির নিচ থেকে জিমের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ। তাকে হত্যা করা হয় গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার চালতেতলা বাগানবাড়ি এলাকায়। জিমকে হত্যা কারী আর কেউ নয় তার অতি পরিচিত শহরের মুনজিতপুর এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে জাহিদ হাসান (২৩), ও তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার টুনি।
নিহত জিম খুলনার ফুলবাড়িগেট এলাকার শেখ হেমায়েত হোসেন হিমুর ছেলে। বর্তমানে তাদের পরিবার পুরাতন সাতক্ষীরা হাটেরমোড় এলাকায় মৃত আব্দুস সবুর গাজীর ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। যে কারণে হত্যা করা হয় জিমকে সেটি তুলে ধরা হল।জিমের সাথে জাহিদ হাসানের সাথে সু’সম্পর্ক ছিল। হাসানের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে জিম তার ফ্রিলেস্নিংয়ের মাধ্যমে আয়ের টাকা দিয়ে প্রতিমাসে তাদেরকে সহযোগিতা করত।
কিন্তু জাহিদের মাথায় ছিল ভিন্ন চিন্তা জিমকে পুঁজি করে সে ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখত। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সে একটা ফাঁদ পাতে। গত মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) হাসান তার বাসায় জিমকে নিয়ে যায়। এরপর জিমকে বাসায় বসতে দিয়ে হাসান বাইরে চলে আসে। তার স্ত্রী পাশের বাড়ী থেকে একটি কোদাল এনে হাসানকে দেয়। সেই কোদাল দিয়ে জিমের মাথায় আঘাত করে হাসান। কোদালের আঘাতে ঘটনা স্থলে জিমের মৃত্যু হয়। এরপরও লাঠি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে হাসান ও তার স্ত্রী।
জীমের হত্যা নিশ্চিত করার জন্য গোলায় রশি দিয়ে ফাঁস ও দেয় হত্যা কারীরা। এরপর হাসানের স্ত্রী তাদের ছাদে গিয়ে কোন লোকজন আছে কিনা সেটা দেখতে থাকে। যাতে করে সবার অগোচরে জিমের মরদেহ মাটির নিচে পুঁতে রাখতে পারে তার স্বামী। সাতক্ষীরা আদালতে বিচারক মেহেদী হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় এমনই জবানবন্দী দেন হাসান ও তার স্ত্রী টুনি। তারা আদালতে আরও জানায় জিমকে হত্যা করার মুল উদ্দেশ্য ছিল ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা তার পরিবারের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) রাসুল আহমেদ জিম নিখোঁজ হয়।অনেক খোঁজাখুঁজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে জিমের বাবা হেমায়েত হোসেন হিমু বাদী হয়ে পরদিন (২২জানুয়ারি) শহরের মুনজিতপুর এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে জাহিদ হাসান (২৩) সহ অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ জাহিদকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপহরণের দুই দিন পর সাতক্ষীরার চালতেতলা বাগানবাড়ি এলাকার জনৈক লিটনের বাড়ি থেকে জিমের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাহ্উদ্দিন জানান, আদালাতে জবানবন্দী শেষে আসামী জাহিদ হাসান ও তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার টুনি তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
/ এমডিআআ