খুলনা-কলকাতা রুটে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ এবার চলাচল করবে সপ্তাহে দুই দিন
টিকিটের মূল্য এবং সময় অপরিবর্তিত রেখে খুলনা বেনাপোল-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেন ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ এখন থেকে সপ্তাহে দুইদিন চলাচল করবে।
‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ আগে প্রতি বৃহস্পতিবার চলাচল করতো। সেই সাথে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী থেকে সপ্তাহের প্রতি রবিবার খুলনা বেনাপোল-কলকাতার মধ্যে দিনের দিন চলাচল করবে। অতিরিক্ত আরো একটি ট্রেন দেওয়ায় জনদুর্ভোগ কমবে এবং যাত্রা সহজ হবে বলেই আশা করছেন যাত্রীরা। তবে খুলনা থেকে যে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বেনাপোল-যশোর থেকে যাত্রী উঠলে তাদেরও একই ভাড়া দেয়া লাগছে। সাধারণ যাত্রীরা ভারতের পেট্রাপোল থেকে বনগাঁ রেল স্টেশনে যান ২৫ রুপিতে। সেখান থেকে শিয়ালদহ স্টেশন যেতে লাগে মাত্র ২০ রুপি। আর ভ্রমণকর ও টার্মিনাল চার্জ বাংলাদেশী ৫৪৫ টাকা। যা মোট বাংলাদেশী টাকায় ৬০০ টাকা। সেক্ষেত্রে রেলের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ভ্রমণকরসহ চেয়ার ১৫০০ টাকা ও এসি ২০০০ হাজার টাকা। এ কারণেও অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্বেও কম টাকায় সড়ক পথে চলাচল করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে একদিন করে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ খুলনা-কলকাতার মধ্যে চলাচল করে থাকে। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা থেকে ছেড়ে এসে বেনাপোল রেল স্টেশনে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সেরে দুপুরে পৌঁছায় খুলনা রেলস্টেশনে। কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে বন্ধন এক্সপ্রেস খুলনা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যায় কলকাতা পৌঁছায়। এখন বৃহস্পতিবারসহ প্রতি সপ্তাহের রবিবারও সকাল-দুপুর ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ খুলনা-বেনাপোল-কলকাতার মধ্যে চলাচল করবে। রবিবার সকালে কলকাতা থেকে ছেড়ে দুপুরে পৌঁছাবে খুলনায়। এদিনই কিছুক্ষণ বিরতি কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। দু’দেশের মধ্যে মানুষের মধ্যে আন্ত:সংযোগ বৃদ্ধি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দিক লক্ষ্য রেখেই এ পদক্ষেপ বলে জানান বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে বড় ভূমিকা রয়েছে বন্ধন এক্সপ্রেসের। চিকিৎসা, বাণিজ্য-সহ একাধিক কাজে বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ভারত যান। অবশ্য অধিকাংশেরই গন্তব্য হয় কলকাতা শহর। তেমনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকেই বাংলাদেশ আসেন।
ব্রিটিশ আমলেই চালু হয় খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা ট্রেন চলাচল। ওই সময় ট্রেনগুলিতে প্রতিদিনই সফর করতেন অনেক যাত্রী। চাঁদপুর, বরিশাল, ফরিদপুরের যাত্রীরা একই টিকিটে স্টিমারে চেপে খুলনায় এসে ট্রেনে করে কলকাতা যেতেন। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর খুলনা-কলকাতা ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তঃদেশীয় সরকারি রেলওয়ে সভায় খুলনা-কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয়। তারপর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনার পর ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে বন্ধন এক্সপ্রেস। যাত্রার শুরুতে খুলনা ছাড়া আর কোন স্টেশনে যাত্রী উঠানামা বা টিকিট বিক্রির কোন ব্যবস্থা ছিল না। পরে সীমিত আকারে যশোর ও বেনাপোলে টিকিট বিক্রি শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। টিকিটের মূল্যও নেয়া হচ্ছে খুলনা-কলকাতার একই মূল্য।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস যখন চালু হয় তখন থেকে বেনাপোলবাসীর দাবি ছিল আমরাও বন্ধন এক্সপ্রেসে করে বেনাপোল স্টেশন থেকে কলকাতা যাবো। আমাদের দাবি পূরণ করা হলেও ভাড়াটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। ভাড়া সহনীয় পর্যায় না আনলে বেনাপোল স্টেশনের যাত্রী না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।
/ মোজাহো