স্বপ্নের দেশ ইতালি পাড়ি জমাতে গিয়ে নিখোজ নবীগঞ্জের কবির: মানবপাচার কারীর বিরুদ্ধে মামলা অসহায় পিতা টেনু মিয়ার

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রবাসী অধ্যুষিত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের মামদপুর গ্রামের কৃষক টনু মিয়ার পুত্র কবির হোসেন দালাল চক্র (মানব পাচারকারী) এর মাধ্যমে স্বপ্নের দেশ ইউরোপ (ইতালি) পাড়ি জমাতে গিয়ে এখন নিখোঁজ।

এ খবরে কবিরের পরিবারে চলছে অজানা আতংক। জানা যায়, উপজেলার ওই গ্রামের ও ইউপি কৃষকলীগের সভাপতি টনু মিয়ার পুত্র কবির হোসেন (৩৫), নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় স্বপ্নের দেশ ইউরোপের ইতালি যেতে একই উপজেলার একই গ্রামের লেবানন প্রবাসী আব্দুস ছত্তার এর মাধ্যমে তার পুত্র নুরুল আমীনগংদের সাথে কথা বার্তা সাব্যস্তক্রমে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে ৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা চুক্তি সাপেক্ষে ইতালীতে বিমান ফ্লাইটে পৌঁছানোর কথা বলে হাতিয়ে নেন মানবপাচারী চক্র।

দালালদের কথামত টাকা দিলেও আজ অবদি স্বপ্নের দেশ ইতালিতে পাড়ি জমাতে পাড়েনি কবির। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী দালাল চক্র কবিরকে প্রথমে লেবাননের একটি ফ্লাইটে লেবানন নিয়ে যায় এবং সেখানে দালাল সত্তার ও তার স্ত্রী আমেনা বেগম তাকে তাদের বাসায় ভাষা শিখানোর কথা বলে ২/৩ মাস সময় ক্ষ্যাপন করে। পরবর্তীতে কবিবরকে ফ্লাইটে ইতালী না পাঠিয়ে সাগর দিয়ে জাহাজ যোগে পাঠানোর চেষ্টা করিলে এতে কবির জাহাজে যেতে না চাইলে তাকে জোরপূর্বক জাহাজে তোলে নিয়ে যায়। এবং ইউরোপের সীমান্তে সাগর পাড়ে নিয়ে তাকে নামিয়ে দেয় দালাল চক্র, সেখানে জলদস্যুরা কবিরকে জিম্মি করে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং নানা নির্যাতন শুরু করে এমনকি মুক্তিপনের টাকা আসামী আমিনার নিকট না দিলে তাকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয় জলদস্যুরা। এই সংবাদ কবির তার পিতাকে জানালে গত ১ নভেম্বর কবিরের পিতা এলাকার গনমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে সামাজিক বিচার প্রার্থী হন।

সামাজিক বিচারে সিদ্ধান্ত হয় আব্দুস সত্তার ও তার স্ত্রী আমেনা বেগম ও তাদের লোকজন কবিরকে নিঃশর্তে দেশে ফেরত এনে ক্ষতিপূরণ দেবার জন্য। একপর্যায়ে সামাজিক বিচার পঞ্চায়েতের রায় অমান্য করে সে ভিন্ন পথ অবলম্বন করে। এর পর থেকে কবিরের আর কোন সন্ধান মিলছেনা। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে হবিগঞ্জ মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অসহায় পিতা টনু মিয়া।

উক্ত মামলাটি নবীগঞ্জ থানার গোপলা বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কাওছার আলমের নিকট তদন্তাধীন রয়েছে। এব্যাপারে ইনচার্জ কাওছার আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মামলাটি তদন্ত চলছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অচিরেই বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

/ মোসেউ

Total Page Visits: 487 - Today Page Visits: 1

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares