পাবনা সুগার মিলে কৃষকদের পাওনা ১৬ কোটি টাকা
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়ায় অবস্থিত পাবনা সুগার মিলে আখের দাম বাবদ কৃষকদের পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি টাকা।
সপ্তাহে দু’বার আখ সরবরাহ করার পরপরই কৃষকরা টাকা পাবেন এমন সিদ্ধান্ত ছিল। অথচ এক মাস ১০ দিন ধরে ঈশ্বরদীর প্রায় চার হাজার আখচাষি জমি থেকে আখ কেটে নিজ দায়িত্বে মিলে সরবরাহ করার পরও টাকা পাচ্ছেন না। মিল কর্তৃপক্ষ জানায়, টাকার অভাবে ১৯ জানুয়ারির পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) পর্যন্ত কোনো আখচাষিকে মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
ইতোমধ্যে কৃষকের পাওনার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ১৬ কোটি ৭২ লাখে দাঁড়িয়েছে। এর উপর প্রতিদিন দেনা ৪০- ৪২ লাখ টাকা করে বাড়ছে। চাষিরা প্রতিদিন পাওনা টাকার জন্য এসেও পাচ্ছেন না। আখ চাষিরা জানান, লাভের আশায় আখচাষ করে বিক্রির টাকা সময় মতো না পেয়ে অর্থ সংকটে পড়েছেন চার হাজার আখচাষি। বার বার মিল কর্তৃপক্ষের কাছে পাওনা টাকা চেয়েও পাচ্ছেন না তারা।
ঈশ্বরদী উপজেলার বাঘইল গ্রামের আখচাষি নজরুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, আখ বিক্রি করে এক মাস ধরে বিল না পাওয়ার কারণে জমিতে অন্য ফসলের আবাদ করতে পারছি না। সার-কীটনাশক কিনতে না পেরে নতুন আখের জমি কিংবা অন্য ফসলের ক্ষেতে পরিচর্যা করাও সম্ভব হচ্ছে না। আবার পরিবারের মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারছি না। পাবনা সুগার মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, প্রতিদিন কৃষকরা তাদের পাওনা না পেয়ে মিলে এসে আমাদের কাছে অভিযোগ করছেন। আমরাও মিল ও করপোরেশনে দেন-দরবার করছি বিল পরিশোধের জন্য। কিন্তু টাকা না থাকায় তাদের পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
মিলের জিএম (অর্থ) ওয়াকার হাসান বলেন, ইতোমধ্যে কৃষকের পাওনার পরিমাণ ১৬ কোটি ৭২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪২ লাখ টাকা করে বাড়ছে দেনার পরিমাণ। কৃষকের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আমাদেরও খারাপ লাগছে। তবে পাওনা পরিশোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।
পাবনা সুগার মিলের জিএম (কৃষি) হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিদিন পাওনা টাকার জন্য মিলে আসছেন কৃষকরা। টাকার ব্যবস্থা হলে পর্যায়ক্রমে তাদের টাকা দেয়া হবে। মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুলাহ বলেন, কৃষকের টাকা পরিশোধের জন্য আমরা কয়েকজন কর্মকর্তা চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু এখনও টাকার ব্যবস্থা করা যায়নি।
/ শেতার