চলনবিলে হাজার হাজার কৃষকের নাম জালিয়াতি করে ধান বিক্রি
চলনবিল এলাকায় একটি চক্র হাজার হাজার কৃষকের নাম জালিয়াতি করে আমন ধান বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত হাজার হাজার কৃষক। এ ঘটনায় সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগী অনেক কৃষক। কিন্তু প্রতিকার নেই।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার এ বছর প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে আমন ধান কেনার জন্য লটারির মাধ্যমে নাম বাছাইয়ের উদ্যোগ নেয়। যাঁদের নাম লটারিতে ওঠে তাঁরাই শুধু গুদামে ধান দিতে পারবেন। সে অনুযায়ী চলনবিল এলাকার ৯ উপজেলায়ও লটারির মাধ্যমে কৃষকদের নাম বাছাই করা হয়। এতে ৯ উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার কৃষকের নামের তালিকা করা হয়।
গুদামে ধান দেওয়া একাধিক কৃষক জানান, সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। লটারি হওয়ার পর স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার প্রত্যয়ণ নিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হয়। সেই আবেদন পত্রের সঙ্গে ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র ও কৃষি প্রণোদনা কার্ডের ফটোকপি যুক্ত করে জমা দিতে হয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছেই।
যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে জমা দিতে হয় খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে। এরপর কৃষককে খুলতে হয় ব্যাংক হিসাব। এত ঝামেলা পেরিয়ে আসার পর খাদ্য গুদামে ধান দিতে পারবেন কৃষকরা। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে দাম পাবেন না। ধান বিক্রির পর বিলের কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য আবারও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে যেতে হয়।
খাদ্য নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর মিললে যেতে হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের টেবিলে। তাঁর স্বাক্ষর নেওয়ার পর বিলের কাগজ ব্যাংকে পৌছালে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। এভাবে পদে পদে নানা বাধা পেরিয়ে একজন কৃষক ধান বিক্রির টাকা হাতে পান।
চলনবিল এলাকার অনেক ভুক্তভোগী কৃষক অভিযোগ করেন, কাগজ পত্রের নানা মুখী ঝামেলা উতরে তাঁরা ধান নিয়ে গুদামে যান। কিন্তু খাদ্য গুদাম কর্মকর্তারা জানান, ক্রয় তালিকা অনুযায়ী তাঁদের ধান কেনা হয়ে গেছে। এমনকি বিলও পরিশোধ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের দাবি, ক্রয় কমিটির লোকজন, প্রভাবশালী চক্র, ব্যাংকের লোকজন ও চালকল মালিকরা যোগসাজশে চলনবিল এলাকার হাজার হাজার কৃষকের নাম জালিয়াতি করে খাদ্য গুদামে আমন ধান ঢুকিয়েছেন।
এ ঘটনায় সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগী অনেক কৃষক। কিন্তু কোন প্রতিকার হচ্ছে না।
/ মোমই