ভারতে ১৪ ঘন্টা কারফিউ : পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ
করোনা রুখতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ভারতে রবিবার (২২ মার্চ) ১৪ ঘণ্টা জনতা কারফিউ জারি করেছেন।
ঘরের বাইরে কেউ বের হতে পারবে না বলে রবিবার সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে বলে ওপারের সিএন্ডএফ এজেন্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। পাসপোর্টযাত্রী চলাচলও বন্ধ থাকবে। সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় উভয় সীমান্তে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক চালক, সিএন্ডএফ এজেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা শনিবার বিকেল থেকে বাড়িতে চলে গেছে। সোমবার সকাল থেকে আবার এ পথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য চলবে।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে ভারত সরকার রবিবার ১৪ ঘন্টা কারফিউ জারি করেছে গোটা ভারতে। এ কারনে আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত কাজকর্মের সাথে সম্পৃক্ত সিঅ্যান্ডএফ মালিক, কর্মচারী, হ্যান্ডলিং শ্রমিক, ট্রাকচালকরা ইতোমধ্যে নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। ফলে শনিবার দুপুরের পর থেকেই সকল কাজে ভাটা পড়েছে। রবিবার কোন কাজ হবে না পেট্রাপোল বন্দরে। সোমবার এ পথে আমদানি-রফতানি আবারো শুরু হবে।
বেনাপোল চেকপোষ্ট কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা নাশিদুল হক বলেন, ভারতে কারফিউ থাকায় ভারত সীমান্তে কোন কাজ হবে না। সে খবর ভারতীয় কাস্টমস ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা আমাদের শনিবার দুপুরে জানিয়েছেন। সে কারণে রবিবার বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। তবে বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য খালাস ও কাষ্টমস হাউজের শুল্কায়নের কাজকর্ম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। এক দিন বাণিজ্য বন্ধ থাকায় উভয় দেশের বন্দরে পচনশীল পণ্যের ট্রাকসহ শত শত শিল্পকারখানার পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে থাকবে বলে তিনি জানান।
ওপারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশের এই অবস্থায় করোনা রুখতে রবিবার ১৪ ঘণ্টা জনতা কারফিউ জারি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও সবকিছু লকডাউন করে দেওয়া হবে কিনা সেই বিষয়ে সরকারি তরফে বিস্তারিত ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে মারণ এই ভাইরাসের থাবা থেকে দেশবাসীকে বাঁচাতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে কাজ করে চলেছে কেন্দ্র-রাজ্যগুলি। এই অবস্থায় জনতা কারফিউ তথা এই অঘোষিত বন্ধ সফল করতে দলমত নির্বিশেষে সকলেই সমর্থন জানিয়েছেন সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রবিবার যদি ১৪ ঘণ্টা জনতা কারফিউ জারি করার পিছনে রয়েছে মূলত কয়েকটি উদ্দেশ্য। যেমন বিশ্বের বড় বড় চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যেকোনো জীবাণুই খালি চোখে দেখা যায় না। ঠিক তেমনই, আমরা করোনার জীবাণুও খালি চোখে পর্যবেক্ষন করতে পারি না। তবে মারণ এই জীবাণু ১২ ঘণ্টার বেশি বাঁচে না। এছাড়াও করোনাভাইরাসের জীবাণু যেহেতু মানব বাহিত ছোঁয়াচে তাই এটি মানব শরীরে প্রবেশ করলে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, মাটি বা তরল পদার্থেও এই জীবাণুর স্থায়ীত্বকাল ক্ষনিকের। তবে শীতল জিনিসের উপর এই ভাইরাস পড়লে তা জীবিত থাকবে বহুক্ষন। এ কারণে অন্তত একদিন ১৪ ঘন্টা কারফিউ জারি করে দেখা যাক পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।
/ মোজাহো