রাজবাড়িতে দরিদ্র পরিবারগুলো কিস্তির চাপে দিশেহারা
সারাদেশে মহামারিতে রূপ নিয়েছে নভেল করোনা ভাইরাস। যার প্রভাব পরেছে বাংলাদেশেও। সম্প্রতি সময়ে যিনি বিদেশ ভ্রমন করে এসেছে ঝুকিতে আছে তিনিসহ তার পুরো পরিবার এমনকি পুরো জাতি। জেলা পুলিশের তথ্যমতে চলতি মাসে বিদেশ থেকে রাজবাড়ীতে এসেছে ১৭৮৭ জন প্রবাসী। তারা কেমন আছেন? হোম কোয়ারেনটাইন সঠিকভাবে মানছেন কিনা ? তার নজরদারিতে কাজ করছে জেলা পুলিশ। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া সারাদিন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই যখন বাড়িতে থাকার কথা চিন্তা করছে, ঠিক তখনই ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির কথা চেপে বসছে এ জেলার দরিদ্র মানুষের মাথায়। এসব মানুষের মধ্যে আছে দিন মুজুর, রিকশাচালক, অটো চালক, ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী।
ইতোমধ্যে জেলার হোটেল, চায়ের দোকান বন্ধ করে দেয়ায় বেকার জীবন যাপন করছে সেখানে কর্মরত কর্মচারীরা। কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হলেও তাদের চোখমুখে আতঙ্কের ছাপ যাত্রী পাচ্ছেন না অটোরিকশার বা ভ্যান চালকরা। কাজ না পেয়ে বসে বসে সময় কাটছে দিন-মজুরদের। বাজারেও কমছে জনসমাগম।
তবে দরিদ্র মানুষের কাছে করোনার পাশাপাশি আরেক আতঙ্কের নাম এনজিও। করোনা আতঙ্কে মানুষ ঘরবন্দি হলেও তাদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় বন্ধ করেনি এনজিও কর্তৃপক্ষ।
একাধিক ঋণগ্রহীতারা জানান, কাজ করলে আমাদের পেটে ভাত জোটে, আর না করলে পরিবারসহ না খেয়ে থাকতে হয়। করোনা আতংকিত হয়ে কাজ না থাকায় অনাহারে দিন কাটছে এসব মানুষের। এরপরও এনজিওগুলো আমাদের কোনও সাহায্য সহযোগিতা না করে উল্টো কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের নিজের কোনও টাকা নেই। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দোকান করি। ঘরে থাকতে হলে তো দোকান চালাতে পারবো না। এর ওপর কম-বেশি কিস্তি আছে সবার। তাহলে ঋণের কিস্তি শোধ করবো কীভাবে? তাই সরকারের কাছে অনুরোধ ভাইরাস যতদিন না যায় ততদিন অন্তত আমাদের কিস্তিটা বন্ধ রাখুন। একদিকে করোনার আতঙ্ক তার ওপর কিস্তির চাপে দিশেহারা হয়ে পড়বো।
বেশিভাগ মানুষের দাবি, দেশের এই সংকটের সময়ে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি উত্তোলন বন্ধ করা হোক। তা না হলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ বিপদে পড়বে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাঠ পর্যায়ের এনজিও কর্মী জানান, ঋণ বিতরণ করার পর উত্তোলন করার দায়িত্ব তাদের। কেউ কিস্তি না দিলে পকেট থেকে অফিসকে জমা দিতে হয়। সরকার কিস্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত দিলে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। অফিস আমাদের যে নির্দেশনা দিবে আমরা তাই পালন করব।
/ আই