জীবনশৈলীস্বাস্থ্য এবং চিকিৎসাপশ্চিমবঙ্গভ্রমণশিরোনামসর্বশেষসব খবর

লকডাউন কোলকাতা: আজ বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় গোটা রাজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ

কলকাতা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অভূতপূর্ব ব্যবস্থা নিল রাজ্য সরকার। আজ, সোমবার বিকেল পাঁচটা থেকে কলকাতা, হাওড়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন সদর শহর এবং কিছু গ্রামীণ এলাকার একটা বড় অংশে অত্যাবশ্যকীয় নির্দিষ্ট পরিষেবা ছাড়া বাকি সব কাজকর্ম আপাতত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগামী ২৭ মার্চ শুক্রবার পর্যন্ত কার্যত এই লকডাউন পরিস্থিতি চলবে। বাস, অটো, ট্যাক্সির মতো গণ পরিবহণের পাশাপাশি অফিস, দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কারখানা, গুদাম প্রভৃতি বন্ধ থাকবে। তবে খাদ্য সরবরাহ সহ বেশ কিছু জরুরি পরিষেবা চালু রাখার জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব বিবেক কুমারের জারি করা নির্দেশিকায় অবশ্য লকডাউন শব্দটি ব্যবহার না করে এইসব ব্যবস্থা গ্রহণকে ‘কমপ্লিট সেফটি রেস্ট্রিকশন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা ও হাওড়া, নদীয়া, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর জেলার পুরো এলাকায় বিধিনিষেধ থাকবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সব পুরসভা এলাকা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একটা বড় অংশকে বিধিনিষেধের আওতায় আনা হয়েছে। বাকি জেলাগুলির কিছু শহর এলাকা বিধিনিষেধের আওতায় আসবে।

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অবশ্য করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বিধিনিষেধ আরোপ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকার কোন কোন জায়গায় কেন্দ্র বিধিনিষেধ চাইছে, তার একটি বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গউবা রবিবার সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা নবান্ন থেকে এই বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন মুখ্যসচিব। এরপর নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে মুখ্যসচিব ছাড়াও স্বাস্থ্য সচিব, রাজ্য পুলিসের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা সহ পদস্থ আধিকারিকরা ছিলেন।

ওই বৈঠকের পর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। এদিন পরিবহণ দপ্তর বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, রবিবার রাত ১২টার পর থেকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নেই, এমন কোনও ট্রাক, ট্রেলার রাজ্যে ঢুকতে পারবে না।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, সোমবার বিকেলে নবান্নে করোনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ১১টি রাজনৈতিক দলকে যে সর্বদলীয় বৈঠকে ডেকেছেন সেটি নির্ধারিত সময়েই হবে। রাজ্য ইতিমধ্যে সরকারি দপ্তরে বিশেষ রুটিন করে ৫০ শতাংশ কর্মীকে কাজে আনার নির্দেশিকা জারি করেছিল।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অত্যাবশ্যকীয় কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন কর্মীদের আজ, সোমবার থেকে অফিসে না আসতে বলা হয়েছে। তবে বেতনের বিল সহ কিছু জরুরি কাজের জন্য সব অফিসে কিছু কর্মীকে আসতে হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। বিধিনিষেধ চলাকালীন একান্ত জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত কিছু আধিকারিক ও কর্মী নবান্ন সহ অন্য কয়েকটি সরকারি অফিসে আসবেন।

সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই সময়ে লোকজন বাড়িতে থাকবেন। একান্ত জরুরি প্রয়োজনে তাঁরা যেন বের হন। নির্দেশ লঙ্ঘন করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের নির্দেশমতো বাড়িতে ‘কোয়ারেন্টাইনে’ থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *