করোনার প্রভাবে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে অচলাবস্থা
করোনার প্রভাবে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত ১ সপ্তাহ ধরে সারবাহী কোন জাহাজ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে আসছে না।
এতে এ বন্দরটি কর্মহীন হয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে হাতে কাজ না থাকায় এ বন্দরের প্রায় ৭‘শ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এরমধ্যে বিভিন্ন এনজিও ও বিভিন্ন সমিতি থেকে উচ্চ সুদে নেওয়া ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এদিকে বন্দরে কোন কাজ না থাকায় লেবার ইজারাদারের মাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা লোকশানের পাশাপাশি সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। এ ছাড়া সার সরবরাহ বন্ধ থাকায় চলতি সেচ মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সারের কৃত্রিম সংকটের আশংকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বন্দর লেবার এজেন্ট ও শ্রমিকরা এ বিষয়ে করণীয় ও এই অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের লেবার এজেন্ট আব্দুস সালাম ব্যাপারী বলেন, করোনার প্রভাবে গত এক মাস ধরে নৌপথে চট্টগ্রাম থেকে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে জাহাজ চলাচল কমে গেছে। এর মধ্যে গত ১ সপ্তাহ ধরে সারবাহী কার্গো-জাহাজ আসা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাঘাবাড়ি নৌবন্দর কর্মহীন হয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এতে এ বন্দরে কর্মরত প্রায় ৭‘শ শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ ছাড়া তাদের প্রতিমাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা করে লোকসান হচ্ছে।তিনি আরো বলেন,সার সরবরাহ বন্ধ থাকায় চলতি সেচ মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সারের কৃত্রিম সংকটের আশংকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ অচলাবস্থা নিরসনে তিনি সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের শ্রমিক আজিবর খান,মোঃ আলাউদ্দিন,আল মাহমুদ জানান,করোনার প্রভাবে গত ১ সপ্তাহ ধরে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে সারবাহী কার্গো-জাহাজ আসা বন্ধ রয়েছে। ফলে এ বন্দরে কর্মরত প্রায় ৭‘শ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এরমধ্যে বিভিন্ন এনজিও ও বিভিন্ন সমিতি থেকে উচ্চ সুদে নেওয়া ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাড়িতে কিস্তি নিতে এনজিও কর্মীরা কিস্তি নিতে বাড়িতে এসে ভিড় করছে। ফলে কিস্তি দেওয়ার ভয়ে আমরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে ফিরছি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলার চরাচিথুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আলীম,সোহেল রানা,ইউসুফ আলী,রওশন সরকার বলেন,বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে সারবাহী জাহাজ না এলে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ইরি-বোরো আবাদে সার সংকট সৃষ্ঠি হয়ে এ বছর উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের উপ-পরিচালক সাজ্জাদ আলম বলেন,করোনার প্রভাবে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে জাহাজ চলাচল সিমিত হলেও উত্তরাঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার মজুদ আছে। ফলে সার সংকটের কোন আশংকা নেই। তিনি কৃষকদের এ বিষয়ে শংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাঘবাড়ি নৌবন্দরের বাফার গুদামের ইনচার্জ সোলায়মান হোসেন জানান,বাঘাবাড়ি সহ উত্তরাঞ্চলের ১৪টি বাফার গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুদ রয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলে সার সংকট হবে বলে আমি মনে করিনা। তিনিও কৃষকদের এ বিষয়ে শংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।