জীবনশৈলীধর্ম চিন্তাশিক্ষাঙ্গনশিরোনামসব খবরসর্বশেষ

আল হামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ, মাশা আল্লাহ… কখন কোনটি বলতে হবে!

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না
রহমান রহীম আল্লাহ্‌ তায়ালার নামে-

ইসলামী বিষয়ে জ্ঞানার্জনের সুযোগ আমাদের সমাজে দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগে যেখানে বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন ভোর সকালে মকতবে পাঠানো হতো কুরআন পড়ার জন্য, সেখানে এখন তাদেরকে পাঠানো হয় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গুলোতে টুইংকল টুইংকল শেখানোর জন্য। আগে যেখানে ফজরের পর মুসলিম পরিবার গুলোর জানালা দিয়ে কুরআন তিলাওয়াতের সূর ভেসে আসতো, আজ সেখান থেকে শোনা যায় হারমোনিয়াম আর গিটারের আওয়াজ।

এভাবে আমাদের এই পুরো সমাজের চেহারাটাই দিন দিন কেমন যেন পাল্টে যাচ্ছে। তাই তো আজ অনেক নামাজী আর দীনদার ব্যক্তিরাও ইসলামের অনেক পরিভাষার যথোপযুক্ত ব্যবহার সম্পর্কে প্রায় সময়ই দ্বিধান্বিত হয়ে পরেন। এই যেখানে ধর্মীয় আবহে থাকা লোকদের অবস্থা সেখানে ধর্ম থেকে দূরে কিংবা বিমুখ মুসলিমদের অবস্থা কেমন হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

আমার পরিচিত একজন শীর্ষ ইসলামী বুদ্ধিজীবি আছেন, তার সাথে আমার আমার দেখা হলে যখনি আমি তাকে জিজ্ঞেস করি ভাই কেমন আছেন? তখনি তিনি উত্তর দেন ইনশাআল্লাহ্ ভালো আছি। তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি ইসলামের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পারিভাষিক শব্দ বা দোয়ার যথোপযুক্ত ব্যবহার সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাচ্ছি।

আল হামদুলিল্লাহ:
আল হামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যে কোন সুখবর বা ভালো অবস্থা সম্পর্কিত সংবাদের বিপরীতে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন ভাই আপনি কেমন আছেন? জবাবে বলা উচিত, আল হামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

ইনশাআল্লাহ:
ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে। ভবিষ্যতের হবে, করবো বা ঘটবে এমন কোন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নাত। যেমন ইনশাআল্লাহ আমি আগামী কাল আপনার কাজটি করে দিবো। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন।

মাশা আল্লাহ:
মাশা আল্লাহ শব্দের অর্থ, আল্লাহ যেমন চেয়েছেন। এটি আল হামদুলিল্লাহ শব্দের মতোই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে কোনো সুন্দর এবং ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন, মাশা আল্লাহ তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছো।

সুবহানাল্লাহ:
সুবহানাল্লাহ শব্দের অর্থ আল্লাহ পবিত্র ও সুমহান। আশ্চর্য জনক ভালো কোন কাজ হতে দেখলে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন সুবহানাল্লাহ! আগুনে পুরো ঘর পুরে গেলেও কুরআন শরীফ অক্ষত আছে।

নাউযুবিল্লাহ:
নাউযুবিল্লাহ শব্দের অর্থ, আমরা মহান আল্লাহর কাছে এ থেকে আশ্রয় চাই। যে কোনো মন্দ ও গুনাহের কাজ দেখলে তার থেকে নিজেকে আত্মরক্ষার্থে এটি বলা হয়ে থাকে।

আসতাগফিরুল্লাহ:
আসতাগফিরুল্লাহ শব্দের অর্থ আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। অনাকাঙ্খিত কোন অন্যায় বা গুনাহ হয়ে গেলে আমরা এটি বলবো।

ইন্নালিল্লাহ বা ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা-জিউন:
অর্থ, নিশ্চয়ই আমরা মহান আল্লাহর জন্য এবং আমরা তার দিকেই ফিরে যাবো। যে কোনো দু:সংবাদ বা বিপদের সময় আমরা এটি বলবো।

লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ:
অর্থ; মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া আর কোন আশ্রয় ও সাহায্য নেই। শয়তানের কোন ওয়াসওয়াসা বা দূরভিসন্ধিমূলক কোন প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য এটি পড়া উচিত।

পাশ্চাত্য সংস্কৃতির নিন্মোক্ত কয়েকটি বাক্যের স্থলে আসুন আমরা কুরআন ও সুন্নাহ নির্দেশিত বাক্য প্রয়োগ করি:

আস সালামু আলাইকুম
কারো সাথে দেখা হলে– হাই, হ্যালো না বলে বলুন- আস সালামু আলাইকুম (আপনার উপর মহান আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক)

জাযাকাল্লাহু খায়রান
কেউ আপনার কোন উপকার করলে– তাকে থ্যাংক ইউ না বলে বলুন- জাযাকাল্লাহু খায়রান (মহান আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন)

আল্লাহ হাফেজ অথবা ফি আমানিল্লাহ
কারো কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময়– টা টা না বলে বলুন- আল্লাহ হাফেজ (মহান আল্লাহ সর্বোত্তম হিফাজতকারী) অথবা ফি আমানিল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *