দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাদেশে ফিরছেন আটকে পড়া ৮০
কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে বেসরকারি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে এসে বিপাকে বাংলাদেশের যশোরের ছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরে বিধাননগরের একটি জায়গায় পেইং গেস্ট ছিলেন। করোনা আতঙ্ক সব কিছু ওলোটপালট করে দিল। ঢাকা থেকে ফেরার পর আর ঠাঁই হল না। ত্রাতা হলেন এক বন্ধু। আড়িয়াদহে তাঁর বাড়িতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকছেন যশোরের সমাপ্তি তরফদার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। যোগাযোগ করেছিলেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ–দূতাবাসে। তাদের উদ্যোগে বাংলাদেশে ফিরছেন সমাপ্তি। তাঁর মতো পড়তে, চিকিৎসা করাতে আসা ৮০ জনকে ফেরানোর ব্যবস্থা করছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ–দূতাবাস।
বাবার ক্যান্সার, হার্টের চিকিৎসা করাতে ৩ মার্চ কলকাতায় এসেছেন চট্টগ্রামের বিজন ঘোষ। ক্যান্সারের অস্ত্রোপচার হলেও, হার্টের বাকি। এখন আর চিকিৎসা হবে না। টাকাও প্রায় শেষ। বিজনবাবু জানালেন, পঞ্চসায়র এলাকার হোটেলমালিক রান্নাঘরের দরজা খুলে দিয়েছেন। সেখানেই কোনও মতে থেকে রান্না করে খাচ্ছি। ঢাকার বাসিন্দা মহম্মদ ওমর ফারুখের মা ক্যান্সার আক্রান্ত। অস্ত্রোপচার হয়েছে। দেশে ফেরার অপেক্ষায়।
বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসা করাতে ২৪ ফেব্রুয়ারি কেরলের কোজিকোড়ে এসেছিলেন চট্টগ্রামের ইয়াসমিন লিয়াকা। অস্ত্রোপচার হয়। করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করায় ২২ মার্চ ফিরে আসেন কলকাতায়। ফিরতে পারেননি বাংলাদেশে। টাকাও শেষ হয়ে আসছে। চিন্তিত ইয়াসমিন জানালেন, ‘অসুস্থ মাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে বিমান চাই। জানি না কবে ফিরতে পারব।’
সত্তরোর্ধ্ব সৈয়দ আবদুল মালেক মুক্তিযোদ্ধা। বরিশালে বাস। হাঁটতে সমস্যা হয়। চিকিৎসা করাতে এসে আটকে পড়েছেন। জানালেন, ‘হাসপাতালে যেতে পারছি না। বাংলাদেশে ফিরতে চাই।’
কলকাতার বাংলাদেশ উপ–দূতাবাসের হেড অফ চান্সেরি (মিনিস্টার) বিএম জামাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন পাওয়া গেলেই আটকে পড়াদের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরানো হবে।’ কাউন্সেলর বসির উদ্দিন জানিয়েছেন, ‘কনসুলার বিভাগ পশ্চিমবঙ্গে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সব রকমভাবে সাহায্য করছে।
পশ্চিমবঙ্গে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা প্রয়োজনে হেল্পলাইন ০৩৩৪০১২৭৫০০, ৯১৯০৩৮২২৩৮৩২, ৯১৮২৪০৪০৫৪৯৮ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।’