দেশব্যাপীজীবনশৈলীশিরোনামসর্বশেষসব খবর

করোনা: স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে হবিগঞ্জের নিরাপত্তা কর্মীরা

করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে যেসব পেশার কর্মীরা কাজ করছেন তাদের মধ্যে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা কর্মীরাও আছেন। কিন্তু এই কর্মীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

অনেকের ভাগেই জুটছে না ন্যূনতম মাস্ক, গ্লাভস কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারাদেশে চলছে একরকম ‘লকডডাউন’ অবস্থা। সেবাখাত সংশ্লিষ্ট ছাড়া বন্ধ আছে সরকারি বেসরকারি সবধরনের সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান। এমনই প্রেক্ষাপটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় কাজ করছেন প্রায় ৭০০ ব্যক্তি মালিকানাধীন নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রহরীরা।

বিভিন্ন ব্যাংক, ব্যাংকের এটিএম বুথ, নির্মাণাধীন অবকাঠামো, হাসপাতালসহ নাগরিকদের সেবা দেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার দায়িত্বে আছেন তারা। নিশ্চিত করছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সম্পদের নিরাপত্তা। তবে এমন গুরু দায়িত্ব পালন করা নিম্ন বেতনের এসব কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এখন পর্যন্ত খুব একটা প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়নি বিভিন্ন সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানের।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের দেওয়া এক তথ্যমতে, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত দেশে মোট এটিএম বুথের সংখ্যা ১০ হাজার ৭৪৭টি। বর্তমানে যা প্রায় ১১ হাজার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে কাজ করতে হয়। দৈনিক আট ঘণ্টা করে হিসেব করলেও একটি এটিএম বুথে দিনে দায়িত্ব পালন করেন ৩ জন নিরাপত্তা কর্মী। তার মানে প্রায় ১১ হাজার এটিএম বুথের জন্য নিয়োজিত আছেন প্রায় ৩৩ হাজার নিরাপত্তা কর্মী।

এছাড়া নগদ অর্থ আনা নেওয়া, হাসপাতাল, নির্মাণাধীন অবকাঠামো এবং অন্যান্য দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন আরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী। এর বাইরেও বিভিন্ন আবাসিক ভবন এবং আবাসিক এলাকায়ও কাজ করেন নিরাপত্তা কর্মীরা। তবে তাদের বেশিরভাগই আবাসিক ভবন বা এলাকার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কমিটির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিয়োগপ্রাপ্ত। সবমিলিয়ে এই পেশায় নিয়োজিত আছেন অন্তত ৫০ হাজার কর্মী। বিগত কয়েকদিন সিলেটের বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকটি এটিএম বুথে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, নিরাপত্তা কর্মীরা নিয়োগকারী সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কোনো কিছুই পাচ্ছেন না।

বিশেষ করে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভসও পাচ্ছেন না তারা। উপায়ন্তর না দেখে,অনেকেই নিজ উদ্যোগে ‘সস্তা’ মাস্ক কিনে পরছেন। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে একটি এটিএম বুথে এলিট ফোর্সের নিরাপত্তা কর্মী মৌলদ আহমেদ জনি দায়িত্ব পালন করছেন মাস্ক ছাড়াই। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাস্ক, গ্লাভস বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মৌলদ বলেন, নাহ, এই পর্যন্ত পাই নাই।

কোম্পানির লোকরা কিছু তো দিল না। আমি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানেই ডিউটি করি। কোথাও গিয়ে নেবারও তো উপায় নাই। আরেকটি এটিএম বুথে জেএসএস নামের আরেক সিকিউরিটি ফার্মের কর্মী স্বাধীন দায়িত্ব পালন করছেন। এক বন্ধুর কাছ থেকে একটি মাস্ক নিজ উদ্যোগে জোগাড় করেছেন। ঝুঁকি নিয়েও কেন কাজ করছেন জানতে চাইলে স্বাধীন বলেন, প্রচুর ঝুঁকি আছে। কোম্পানি বলছিল কিছু জিনিস দেবে। আর কোনো খবর নাই। এর মাঝেও কাজ করতে হচ্ছে। অভাবের সংসার। নিরাপত্তা কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠান কিছু করছে কি না এমন প্রশ্ন নিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্টানেের সাথে তবে যোগাযোগের চেষ্টায় সাড়া দিয়েছেন দেশীয় প্রতিষ্ঠান এলিট ফোর্সের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা মোকাম্মেল হাসান। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কর্মীদের সচেতন করতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির সচিত্র প্রতিবেদন দেখান তিনি।

তবে কোথাও কোথাও ‘ত্রুটি’ হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার। আমি ‘ডিফেন্ড’ করছি না তবে কোথাও কোথাও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি হয়তো পৌঁছেনি। আবার কোথাও হয়তো বদলি গার্ড আছে যিনি সেগুলো পাননি বিতরণের সময় সেখানে না থাকার কারণে। তবে সেটাও এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই আমাদের জন্য। আপনি (প্রতিবেদক) বিষয়টি আমাদের নজরে আনার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। এখনও যারা পাননি আমরা যত দ্রুত সম্ভব ফলো আপ করে ব্যবস্থা নেব।

এদিকে নিরাপত্তা কর্মীদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা না থাকায় চিন্তিত এটিএম বুথ ব্যবহার করতে আসা ব্যাংক গ্রাহকেরাও। ঈমান আলী নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখন তো ব্যাংক বলতে গেলে বন্ধই। তাই টাকা তুলতে হলে এটিএম বুথই ভরসা। এখানে অনেক ধরনের মানুষ আসে। তাদের থেকে নিরাপত্তা রক্ষী আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। আবার আরেকজন সুস্থ ব্যক্তি বুথে এলে নিরাপত্তা রক্ষী কাছ থেকে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন।

কাজেই নিরাপত্তা রক্ষীদের সুরক্ষার বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট মহলের গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা উচিত।

/ মোসেউ

হবিগঞ্জ ডিষ্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট

Md. Selim Uddin মোঃ সেলিম উদ্দিন গ্রাম- বাজকাশারা, ডাকঘর- নবীগঞ্জ ৩৩৭০, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ মোবাইল: 01711460048 ইমেইল: selimahmedpress18gmail.com এন আইডি নাম্বার :- ৩৬১৭৭৭৩৬৭৫৫১৩। রক্তের গ্রুপ :- O, positive SSC বর্তমানে স্থানীয় দৈনিক হবিগঞ্জ সময় www.dailyshomoy.com স্টাফ রিপোর্টার, জাতীয় দৈনিক দেশের কণ্ঠ সাপ্তাহিক সময়ের সত্যের সংবাদ পত্রিকায় নবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি এছাড়াও An Tv (আলোকিত নিউজ টিভি), দৈনিক পত্রিকা, দৈনিক মুক্তপ্রকাশ, জেকে টিভি'র হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে বর্তমানে কাজ করছি এসএনবি নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট কম এর সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান হিসেবে কাজ করছি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *