হবিগঞ্জে সর্বত্র করোনার আতঙ্ক: আক্রান্ত ৪৮
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে মানুষ।
গত ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলাকে লকডউন ঘোষণা করা হলেও এ জেলা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে লোকজন। তেমনি হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা যারা নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় কর্মরত ছিলেন তারাও করোনার আতঙ্কে ফিরেছেন বাড়িতে। আর তাতেই গোটা হবিগঞ্জ এখন করোনা আতঙ্ক। গত ১৫ দিনে ৪৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সিএনজি চালকসহ এক শিশু মারা গেছেন এ জেলায়।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ওইদিন যে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জেরই দুইজন।
হবিগঞ্জে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১১ এপ্রিল। তিনি পেশায় ট্রাক চালক এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছিলেন। এই পনের দিনে এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা ফেরত।
জেলার নয়টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস, তবে নবীগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় এখনো করোনা ভাইরাসে কেউ আক্রান্তের খবর পাওয় যায়নি।
জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মুখলিছুর রহমান উজ্জল এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান- এ জেলায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ২৫ এপ্রিল। এইদিন ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তার, নার্সসহ ২১ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সদর হাসপাতালের চিকিৎসক একজন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একজন ষ্টেনোগ্রাফার, নার্স দুইজন, চালক দুইজন, প্যাথোলজি বিভাগের দুইজন, ব্রাদার দুইজন এবং দুইজন আয়া ও ঝাঁড়ুদার।
এর আগে ২০ এপ্রিল আক্রান্ত এক চিকিৎসক ও এক নার্সসহ ১০ জন, ২১ এপ্রিল একজন নার্সসহ দুইজন, ২২ এপ্রিল পাঁচজন, ২৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যকর্মীসহ তিনজন, ২৪ এপ্রিল চিকিৎসকসহ পাঁচজন, ২৬ এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছেন ১ জন। সব মিলিয়ে হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরত ব্যক্তিদের নিয়ে হবিগঞ্জের মানুষ উদ্বিগ্ন, যা বিভিন্ন ব্যক্তির ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, লকডাউন অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কীভাবে অন্য জেলায় লোকজন ছড়িয়ে পড়ছে।
সচেতন মহলের অভিযোগ- এ জেলাতে প্রতি ঘন্টায় ১ জন করোনা রোগী বাড়ছে। অথচ জেলাকে এখনো ‘লকডাউন’ করা হয়নি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন- হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগে কর্মরত তিনজনের মধ্যে দুইজন আক্রান্ত হওয়ায় করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ করবেন এখন থেকে মাত্র একজনে। যে কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটিতে কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটবে।
/ মোসেউ