জাতীয়দেশব্যাপীজীবনশৈলীশিরোনামসর্বশেষসব খবর

বেনাপোল-শার্শায় আম্ফান ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি, গাছ চাপা পড়ে ৪ জনের মৃত্যু

বুধবার রাতে বয়ে যাওয়া আম্ফানের তান্ডবে যশোরের বেনাপোল ও শার্শায় অনেক স্থানে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি, গাছপালা, আম লিচুসহ সবজির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। শার্শার বিভিন্ন স্থানে গাছ চাপা পড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন ৩ জনের কথা নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলো উপজেলার শার্শা গ্রামের জেলে পাড়ায় মৃত সুনিল মন্ডলের পুত্র গোপাল বিশ্বাস (৬৫), জামতলা এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে মুক্তার আলী (৬৫), গোগা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার শাহাজানের স্ত্রী ময়না খাতুন (৪০) ও মহিষাকুড়া গ্রামের মোবারকের পুত্র মিজানুর রহমান(৪০)। নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে বলে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানিয়েছেন।

বুধবার রাত সাড়ে ৭ দিকে আম্ফান আঘাত হানে বেনাপোল ও শার্শার বিভিন্ন এলাকায়। রাত যত বাড়তে থাকে ঝড়ের তীব্রতা তত বাড়তে থাকে। আম্ফানের এ তান্ডব চলে রাত দেড়টা পর্যন্ত। পরে আস্তে আস্তে ঝড় কমতে থাকে। তারপরও মাঝে মাঝে প্রচন্ড বেগে দমকা হাওয়া বইতে থাকে। আম্ফানের এ তান্ডবে উপজেলার বৈদ্যুতিক লাইন, মোবাইল নেটওয়ার্ক, স্যাটেলাইটসহ ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। বেনাপোলসহ শার্শায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার ঘর বাড়ির চালের টিন উড়ে গেছে। আর কাঁচা ঘর গুলি ধ্বসে পড়ে গেছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউস, বিজিবি ক্যাম্প ও বন্দরের সেড গুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কোন কোন সেডের টিন উড়ে গেছে। বেনাপোল-যশোর সড়কে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেগুলো অপসারণের পর যান চলাচল শুরু হয়। বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় গাছ উপড়ে পড়া, আম, লিচুসহ সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শার্শা জোনাল অফিসের সহকারী জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নেয়ামুল হাসান বলেন, উপজেলা ১১টি ইউনিয়নে ঝড়ে লাইনে গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে লাইনের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার সকাল হতে ১১ জন লাইনম্যান ও ৫০ জনের মত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত লেবার বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু করার কাজ চালাচ্ছে। ঈদ উৎসবের আগেই উপজেলায় গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সেবা পাবেন বলে তিনি আরো জানান। করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই আম্ফান ঝড়ে থমকে গেছে শার্শার জনজীবন। বিধ্বস্ত বাড়ি ঘর মেরামতে সকাল হতেই উপজেলার টিন ও হার্ডওয়ার দোকান গুলোতে ক্রেতা সাধারনের ভিড় বেড়েছে।

এদিকে ঝড়ে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি জানান, যশোর জেলায় ১১শ’ হেক্টর জমিতে পানের বরজ, ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আম ও লিচু এবং ২০ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি ক্ষেত রয়েছে। ঝড়ে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে পরিমাণ এখনও নিরুপণ হয়নি। মাঠপর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে।

/ মোজাহো

বেনাপোল (যশোর) করেসপনডেন্ট

Md. Jamal Hossain Mobile: 01713-025356 Email: jamalbpl@gmail.com Blood Group: Alternative Mobile No: Benapole ETV Correspondent

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *