রংপুরে সাবেক এপিপি আসাদুল হকের দাফন সম্পন্ন
রংপুর নগরীতে চোরের হাতে নিহত রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ও সাবেক এপিপি আসাদুল হকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত আসাদুল হক রংপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক এপিপি এবং জাসদ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ছিলেন। এ ঘটনায় ঘাতক চোর রতন (২৭) কে আটক করেছে আরপিএমপি তাজহাট থানা পুলিশ। আটককৃত রতন ওই গ্রামের মৃত জাফর ড্রাইভারে ছেলে। গত শুক্রবার দুুপুর ২টার দিকে নগরীর ৩২ নং ওয়ার্ডের মর্ডাণ ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ওই আইনজীবীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় নিহতের ছোট মেয়ে অংকন হক বাদি হয়ে তাজহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে শনিবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত আইনজীবী আসাদুল হকের পোষ্ট মোর্টেম শেষে নগরীর ধর্মদাস বারো আউলিয়ায় প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র, সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম চেয়ারম্যান, তাজহাট থানার ওসি শেখ রোকনুজ্জামান রোকন, রংপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট ফিরোজ কবীর চৌধুরী গুনজন প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক বৃন্দ, আইনজীবিবৃন্দসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। পরে নিহতের গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ছড়ান এলাকায় দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পুলিশ ও স্থনীয়রা জানান, নিহত আইনজীবীর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে আশা হক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। করোনা পরিস্থিতিতে ছোট মেয়ে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী অংকন হককে নিয়ে স্ত্রী সাবেরা হক শেফালী তাদের গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ছড়ান এলাকায় অবস্থান করছিলেন। আর ধর্মদাস বারো আউলিয়ার ওই বাড়িতে আসাদুল হক একা থাকতেন।
শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন রতন। এসময় আসাদুল হকের গলায় এবং পেটে ছুরিকাঘাত করে দেয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা রতনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে তাজহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আইনজীবীর লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ঘাতক রতন একজন মাদকাসক্ত। সে ইয়াবা, হেরোয়িনসহ বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত। সে এলাকায় নিয়মিত চুরি ছিনতাই করতো। তার নামে থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও আইনজীবি আসাদুল হকের বাড়িতে বেশ কয়েকবার চুরি করেছে। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিসও হয়েছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করে আরপিএমপি তাজহাট থানার ওসি শেখ রোকনুজ্জামান বলেন, রতন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। কী কারণে এ হত্যাকান্ড এবং ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে ওই ঘটনার খবর পেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহীদুল্লাহ্ কাওছার, সহকারি কমিশনার জমির উদ্দিন, রংপুর বার সমিতির সভাপতি পিপি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামানিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় পিপি আব্দুল মালেক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমরা মর্মাহত এই হত্যাকান্ডের ঘটনায়। আজ রোববার বার সমিতির সভা করে হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
/ রাচৌ