গ্রাম পুলিশ চাচার ধর্ষণে মাদ্রাসাছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশের দ্বারা লাগাতার ধর্ষণের শিকার হয়ে এক মাদ্রাসাছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেইসাথে ওই ভুক্তভোগীর গর্ভের বাচ্চাকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই মাদ্রাসাছাত্রী। এ ঘটনায় ওই ভূক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত ওই গ্রাম পুলিশের নাম বাবুল হোসেন ফেলু। তিনি ওই উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত এবং একই ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা।
অন্যদিকে, ওই ভুক্তভোগী স্থানীয় একটি মাদ্রাসর দাখিল নবম শ্রেণির ছাত্রী। গ্রাম পুলিশ বাবুল তাঁর প্রতিবেশী এবং সম্পর্কে চাচা হোন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ওই মাদ্রাসাছাত্রীর পরিবারটি খুবই গরিব। নুন আনতে পানতা ফুরানোর মত অবস্থা। পারিবারিক অবস্থার দূর্বলতার সুযোগ কাজে লাগায় প্রতিবেশি গ্রাম পুলিশ বাবুল। বিয়ের কথা বলে বাবুল শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে ওই কিশোরীর সাথে।
ওই কিশোরীর পরিবার জানায়, বিভিন্ন সময়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করে বাবুল। ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ওই কিশোরী বিয়ের কথা বললে কোন সাড়া দিতনা বাবুল। গত ১১ জুন বিয়ের কথা বলে ওই কিশোরীকে জয়পুরহাটে নিয়ে যায় সে। ওই জায়গায় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের মাধ্যমে গর্ভপাত করায় বাবুল।
পরে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে, বাবুল ওই ভুক্তভোগীকে নানা ধরণের হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বাবুল। গত ১২ জুন শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় সালেম মোহাম্মদ, আজিজার এবং অভিযুক্তের বড় ভাই সাইদুল হোসেন ওই পরিবারের সাথে সমঝোতার জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা রাজি হোন। কিন্তু, ওই ভুক্তভোগীর পরিবার সমঝোতা সায় দেননি।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জানায়, ‘বিয়ের কথা বলে বাবুল তাঁর সঙ্গে অনেকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর অনেকবার বিয়ের কথা বললেও সে কোন জবাব দিত না। আমি যদি গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করি, এই শর্তে সে আমাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়। ’
তিনি আরও জানান, ’আমি ১২ জুন শুক্রবার তাঁর আশ্বাসে জয়পুরহাটে গিয়ে বাচ্চা নষ্ট করি। এরপর তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে পাত্তা দেয় না। এমনকি, সে আমাকে এখন আর বিয়ে করতেও চাচ্ছেনা। এজন্য নানাভাবে আমার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে ওই গ্রাম পুলিশ।’
তবে অভিযুক্তের বড় ভাই সাইদুল হোসেন বলেন, লোক মুখে শুনেছি-ওই মেয়ের অনেক ছেলের সাথেই সম্পর্ক রয়েছে। এখন আমার ভাইকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসাচ্ছে ওই দুশ্চরিত্রা মেয়ে। যাতে আমাদের বিরুদ্ধে গুজব রটিয়ে কিছু অর্থ উপার্জন করা যায়।
এ ব্যাপারে বদলগাছী থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহম্মদ বলেন, গতকাল ১৩ জুন রাতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বাবুল হোসেনকে আসামী করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
/ আজু