এমপিওর দাবিতে সাতক্ষীরায় নন এমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজে কর্মরত নন এমপিও অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকরা এমপিও ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (২২ জুন) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাষ্টার্স শিক্ষক ফোরাম সাতক্ষীরা জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সাতক্ষীরা জেলা কমিটির আহবায়ক মো. আনারুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ২৮ বছর ‘জনবল কাঠামো এমপিও নীতিমালার’ অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারণে আমরা সরকারি অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন আর্থিক সুবিধা পাইনা। সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক শিক্ষক হিসাবে আমাদের নিয়োগ দিয়েও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বেতন ভাতার দায়িত্ব গ্রহণ করে না।
এছাড়া যাতায়াত ও পোশাক পরিচ্ছন্ন করা বাবদ কলেজ থেকে মাসিক ২ থেকে ৮ হাজার টাকা (কলেজ ভেদে) সম্মানী হিসাবে আমাদের দেয়া হতো ঢাকা শহরের কয়েকটি কলেজ বাদে সারা দেশে ২ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত তা বন্ধ করে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯৩ সালে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডিগ্রী কলেজগুলোতে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করায় দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। সরকারি কলেজসমূহে মাসিক ২৫ টাকা বেতন নির্ধারণ করা আছে। অথচ সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষ উচ্চ শিক্ষাকে ব্যবসায়িক পণ্য হিসাবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক ৫শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা পর্যন্ত বেতন আদায় করছে। ফলে বেসরকারি কলেজে মাত্রাতিরিক্ত শিক্ষা ব্যয়ের কারণে লেখা পড়া শেষ না করেই অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে।
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের আইনকে অগ্রাহ্য করায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় যা আদালত পর্যন্ত গাড়য়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে ২২৬০ কোটিরও বেশি টাকা অলস পড়ে আছে। এই সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে আমাদের জন্য প্রণোদনা চাইলেও তা দেয়া হয়নি। অথচ করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষকদের বর্তমানে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করা সহ পরিবারের ভরণপোষণ করা একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না।
আনারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উপজেলা পর্যায় একটি করে কলেজ সরকারি করণ করায় নন এমপিও অনার্স মাস্টার্স কোর্সের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষক কর্মচারী সরকারি আত্বিকরণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এমতবাস্থায় জনবল কাঠামোও এমপিও নীতিমালায় আমাদের ৫৫০০ শিক্ষক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত করে এমপিও ভুক্তির জন্য ব্যাৎসরিক মাত্র ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বরাদ্দ প্রয়োজন।
তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত এমপিও ভুক্ত বেসরকারি কলেজে কর্মরত নন এমপিও অনার্স মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের দ্রুত এমপিও ভুক্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাষ্টার্স শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক পব্রিত কুমার মন্ডল, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সহ সভাপতি মো. আব্দুল হাকিম, সিনিয়র সহ-সভাপতি গৌতম কুমার মজুমদার, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিহির কুমার মন্ডল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আদিত্য মন্ডল।
/ মোআআ