আনসার ভবনের নামফলক অপসারণের দাবি এক মুক্তিযোদ্ধার
মহান মাতৃভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতাবিরোধী আত্বস্বীকৃত দালাল নূরুল আমিনের নামে এখনো সুনামগঞ্জের সরকারি একটি ভবনের নাম বহাল রয়েছে। ‘নূরুল আমিন আনসার হল’ নামে তার নামের নামাঙ্কিত সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা কার্যালয়ের এখনো বহাল আছে নাম ফলক। সেটি অপসারণ করে জাতিকে কলঙ্কমুক্তির দাবিতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন এক প্রতিবাদী মুক্তিযোদ্ধা। রবিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্যসচিব মালেক হুনে পীর নূরুল আমিনের নামকৃত ভবনের স্মৃতি ফলক অপসারণের দাবি জানান।
মালেক হুসেন পীরের লিখিত আবেদন থেকে জানা যায়, ভাষা আন্দোলন চলাকালে ১৯৫২ সনের ১৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের মন্ত্রী ও রাষ্ট্রভাষা বিরোধী নূরুল আমিন সুনামগঞ্জে আসেন। এসময় প্রশাসন ও স্থানীয় পিডিবি নেতৃবৃন্ত তাকে খুশি করতে তার নামে সুনামগঞ্জ শহরে ‘নূরুল আমিন আনসার হল’ নামে একটি ভবন উদ্বোধন করে। তার নামের এই নাম ফলকটি সুনামগঞ্জ আনসার ও প্রতিরক্ষা অফিসের দেয়ালে বহাল রয়েছে।
সম্প্রতি এই বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীরের। তাই তিনি ক্ষুব্দ হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে সেটার দ্রুত অপসারণ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন স্টেডিয়াম ও জেলা পরিষদ সংলগ্ন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা কার্যালয়ে এখনো দালাল নূরুল আমিনের নাম ফলকটি বহাল রয়েছে। ভাষা আন্দোলনের বিরোধী নূরুল আমিনের নির্দেশের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের কর্মীদের উপর গুলি বর্ষণ করা হয়।
রাষ্ট্রভাষার বিরোধীতাকারী নূরুল আমিন পরবর্তীতে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধেও বিরোধীতা করে। স্বাধীনতার কয়েকদিন আগে সে পাকিস্তান পালিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করায় নূরুল আমিন সেখানে গিয়ে পাকিস্তানের উপরাষ্ট্রপতির পদ অলঙ্কিত করে। এমন আতœস্বীকৃত দেশদ্রোহীর নামে স্বাধীন বাংলাদেশের একটি ভবনের নাম ও নামফলক থাকা জাতির জন্য লজ্জার। তাই এই দালালের নামফলক অবিলম্বে ভেঙ্গে ফেলতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর বলেন, কয়েকদিন আগে দালাল নূরুল আমিনের নামের নামফলকটি আমার চোখে পড়ে। এরপরেই আমি সিদ্ধান্ত নেই এটি অপসারণ করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করব। আমি রবিবার বিকেলে আবেদন করেছি। অবিলম্বে এটি অপসারণ করতে হবে। নাহলে আমরা মুক্তিযোদ্ধারাই এটা অপসারণ করব।
/ মোআসা