আত্রাই-কালিগঞ্জ সড়ক এখন মরণ ফাঁদ!
কাঁদা আর পানিতে একাকার সড়ক। যেন একখণ্ড চষের জমি। জমিতে লাঙ্গল দেওয়া শেষ, এখন শুধু ধানের চারা রোপণ করতে হবে!
একটু বৃষ্টি হলেও রাস্তায় পানি জমে। আর সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় গর্ত থাকায় বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা অনেকবার উপর মহলে ধর্ণা দিয়েছেন, তাতেও কোন লাভ করতে পারেননি। উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি, সোনাইডাঙ্গা, বাঁকা, মনিয়ারী ইউনিয়নের কচুয়া, পালশা, নওদুলী, দিঘীরপাড়, মস্কিপুরসহ ওই এলাকার অর্ধশতাধিক গ্রামের লোকজন সড়কের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাই জনগনের কষ্ট লাঘবে রাস্তাটির সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নওগাঁর আত্রাই-কালীগঞ্জ প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তার প্রায় সব জায়গাতে কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তাই অল্প বৃষ্টি হলেই ওই গর্তগুলোতে পানি জমে যাওয়ায় যানবাহন ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। জানা গেছে, আত্রাই-কালীগঞ্জ সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। কারণ, এ সড়ক দিয়েই যেতে হয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িতে। যা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পতিসরে প্রতিনিয়ত ভ্রমণ করতে আসে পর্যটকরা। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পর্যটকদের বিপত্তিতে পরতে হয়। এছাড়াও আত্রাই থেকে বগুড়ার সাথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা আত্রাই-কালীগঞ্জ সড়ক।
এ রাস্তায় চলতে সবচেয়ে বেশি বিপত্তিতে পড়তে হয় বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া-আসা করা রোগীদের। এছাড়াও, ওই এলাকার হাজার হাজার জনগণকে বিভিন্ন প্রয়োজনে এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে আসতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। এরকম খানাখন্দে পূর্ণ রাস্তায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় অনেক দুর্ঘটনা।
ভোঁপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, উপজেলা সদরে যাওয়ার ওই একটাই রাস্তা। এই এলাকার হাজার হাজার যাত্রীদের প্রতিদিনই কষ্টকরে তাঁদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হয়। আর রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত থাকায় বিভিন্ন সময় ভটভটি, অটো-রিকশা ও সিএনজি উল্টে গিয়ে আহত হোন। চালকরা সবসময় ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের যানবাহন চালান। তাই জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।
আত্রাই সিএনজি স্ট্যান্ডের অনেক চালকই অভিযোগ করে বলেন, আমরা অনেকবার রাস্তা মেরামতের জন্য শ্রমিক আন্দোলন করেছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অনেক সময় অর্ধেক রাস্তায় যানবাহন নষ্ট হলে সেটি মেরামত করতে আবার উপজেলা সদরে আসতে হয়।
চালকরা জানান, আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন হতে কালীগঞ্জ হয়ে বগুড়া এ রুটে প্রতিদিন শতাধিক সিএনজি চলাচল করে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে সিএনজি চালায়। গত কয়েক বছর থেকে সড়কের এই বেহাল দশা হয়ে রয়েছে। কিন্তু মেরামতের কোন উদ্দ্যেগ এখনো নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে নওগাঁ এলজিইডির সিনিয়র সহকারি প্রকৌশলী মোবারক হোসেন জানান, আত্রাই-কালীগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা সম্পর্কে আমরা খবর পেয়েছি। সড়কটির সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও নির্বাচন করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরেই কাজ শুরু হবে। তবে, এবার সড়কটি প্রস্থে আরো বাড়ানো হবে বলেও জানান এই এলজিইডি কর্মকর্তা।
/ আজু