টোল টেক্সের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজী প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার দেশের বৃহত্তম বালু পাথর মহাল সীমান্তনদী যাদুকাটায় বালি পাথরবাহী নৌযান থেকে টোল টেক্স আদায়ের নামে অতিরিক্ত চাঁদাবজীর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্টিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ফাজিলপুর নদীর তীরে আধা ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্টিত হয়। মানবন্ধনে নৌ মালিক, বালি পাথর ব্যাবসায়ী ও শত শত শ্রমিকরা অংশ গ্রহন করে। মানববন্ধনের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্য রাখেন, মিয়ারচড় বালি পাথর ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গণি, সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া, বালি পাথর ব্যাবসায়ী সালাম সর্দার, একিন আলী, শাহিনুর, মতি মিয়া, গণি মিয়া, আবু তাহের, ফরিদ মিয়া, হাছান আলী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, টোল টেক্স আদায়ের নামে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নিজেদের নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণকূল গ্রামের মর্তুজ আলীর ছেলে আবুল কাসেম, তার সহোদর ফয়সল, সেলিম গংরা প্রতি বাল্কহেড নৌকা থেকে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে আসছে। যা সরকারী নিয়মে নৌকা ভেদে ২০০ থেকে ৯৫০টাকা টোলটেক্স আদায় করা কথা। অথচ তারা জোর পূর্বক ২থেকে ৪হাজার টাকা আদায় করছে। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে বালি পাথর বুজাই নৌকা আটকে রেখে নৌকার মাঝি ও শ্রমিকদের মারধোর করে।
এদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক সন্ত্রাসী মামলাও রয়েছে। এদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে পুরো যাদুকাটা নদীর ব্যাবসায়ী, নৌ শ্রমিক ও মালিকরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। প্রতিবাদ করলেই হামলা মামলার শিকার হতে হচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে কাসেম ও ফয়সল গংদের গ্রেপ্তার করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জোড় দাবী জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাশ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচড় গ্রামের বালি পাথর ব্যাবসায়ী জাকির হোসেন ডালিমের নৌকা আটক করে ৩হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে কাসেম গংরা। টাকা না দেয়ায় দিনভর নৌকা আটকে রাখে তারা।
এঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে জাকির হোসেন ডালিম বাদী হয়ে আবুল কাসেমসহ তার দুই সহোদরকে আসামী করে তাহিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এখবর পাওয়ার পর রাত নয়টার সময় কোন প্রকার টেক্স আদায়ের রশিদ ছাড়াই ১ হাজার টাকা রেখে নৌকাটি ছেড়ে দেয় তারা।
শুক্রবার দুপুরে তাহিরপুর থানার এসআই মিজানুর রহমান, এসআই শংকর চন্দ্র দেব অভিযোগের তদন্ত করতে ঘটনাস্থল আনোয়ারপুর বাজারে গিয়ে বালিজুরী ইউপি কার্যালয়ে বাদী ও স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তাদের সামনেই অভিযুক্ত সেলিম আহমদ বাদী ও স্বাক্ষীদেও কথা কাটাকাটি ও হুমকি দেয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে থামাতে রীতিমতো হিমশিম খান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে টোলটেক্সের ইজারাদার অভিযুক্ত আবুল কাসেম এ প্রতিবেদক কে কোন সদোত্তর না দিয়ে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকরু রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের তদন্ত চলছে, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে প্রয়োজনীয় এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
/ মোআসা