নওগাঁয় চাঁদাবাজির অভিযোগে কাউন্সিলরসহ গ্রেপ্তার ৪
চাঁদাবাজি ও যৌনহয়রানির অভিযোগে নওগাঁ পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাপ রহমান বনরাজসহ (৫১) আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। সোমবার ১৩ জুলাই সকালে নওগাঁ শহরের খাঁস-নওগাঁ এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্য গ্রেপ্তাররা হলেন, নওগাঁ পৌরসভার খাঁস-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা আবু রিহান (১৯), রাসেল হোসেন (২০) এবং হৃদয় মন্ডল (২০)।
মামলার এজহার থেকে জানা গেছে, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা রিপন ও তাঁর স্ত্রী শান্ত্বনা খাতুন গত আট মাস ধরে নওগাঁ পৌরসভার খাঁস-নওগাঁ এলাকার আজাদ সোনারের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করতেন। রিপন শহরের একটি পোশাকের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন।
গতকাল রবিবার রাত দশটার দিকে নওগাঁ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাপের নেতৃত্বে স্থানীয় সাত-আটজন যুবক রিপনের ভাড়া বাসায় যান। এসময় তাঁরা রিপন দম্পতিকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করেন। তাঁরা বলেন, তোমরা প্রকৃত স্বামী-স্ত্রী নও। অভিনয় করছো। বৈবাহিক কোন সম্পর্ক ছাড়াই তোমরা এই বাসায় বসবাস করছো।
এ সময় তাঁরা রিপনের স্ত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। একসময় বিষয়টি মীমাংসার জন্য কাউন্সিলর রিপনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
কাউন্সিলর রিপনকে হুমকি দিয়ে রাতেই ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করতে বলেন। এদিকে, তাঁরা রিপন দম্পতিকে ওই ফ্লাটের বাইরে থেকে তালা দিয়ে আবদ্ধ করে চলে যান।
আজ সোমবার সকালে রিপনের বাসায় চাঁদার টাকা হস্তান্তর হওয়ার কথা ছিল। নওগাঁ সদর থানা পুলিশ রিপনের স্বজনদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে কাউন্সিলর বনরাজসহ ও তাঁর সঙ্গীদের হাতেনাতে আটক করে।
পরে চাঁদাবাজি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে রিপন কাউন্সিলর বনরাজসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রিপন মন্ডল জানান, দুই বছর আগে শান্ত্বনার সঙ্গে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু গতকাল রাতে কাউন্সিলর ও তাঁর সঙ্গীরা আমার বাসায় এসে আমাদের অপমান করেন। আমাদের বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে নোংরা মন্তব্য করেন।
এসময় তারাঁ বলেন, আমরা নাকি অবৈধভাবে বসবাস করছি। তাঁরা আমার স্ত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। একপর্যায়ে তিনি (কাউন্সিলর) এলাকার বখাটে ছেলেদের পিকনিক (ভোজ) খাওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলেন।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি মো. সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে কাউন্সিলরসহ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
/ আজু