দেশব্যাপীপরিবেশ ও সমাজজীবনশৈলীশিরোনামসর্বশেষসব খবর

এবার আমাগো ঈদ নাই : বিপর্যস্ত টাঙ্গাইলের অগণন মানুষ

এবার আমাগো ঈদ নাই, একদিকে করোনা রোগীর সংখ্যা দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, অন্যদিকে বন্যায় পানিবন্দি মানুষের অসহনীয় দুর্ভোগ।

দুই মিলিয়ে বিপর্যস্ত টাঙ্গাইলের অগণন মানুষ। ফলে এবারের ঈদুল আজহার আনন্দ মান হতে বসেছে।

এমন পরিবেশ হয়তো কল্পনাও করেনি কেউ। দিন দিন বাড়ছে দীর্ঘশ্বাস। অভাবী অসহায় মানুষ বলছেন- ‘এবার আমগো ঈদ নাই’।

বন্যার পানি ঘরে প্রবেশ করায় মানুষের বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তায় কিংবা উঁচু জায়গায়।

গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে ও ভেঙে বন্ধ হয়ে গেছে অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ব্যবস্থা।

সাতক্ষীরায় সেফটি ট্যাংকের ভিতর তিন জনের মৃত্যু

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের পুরনো ভূঞাপুর রোড পানিতে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন- একদিকে করোনার প্রভাব, অন্যদিকে বন্যার পানি। সব মিলিয়ে আমরা আছি মহাসংকটে।

ব্যবসা বাণিজ্য নেই বললেই চলে। এবার আমাদের মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই, এবার আমাগো ঈদ নাই।

কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আনোয়ার হোসেন প্রামাণিক বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় পুরোটাই বন্যাকবলিত।

বন্যায় মানুষ খুবই অসহায় পড়েছে। যেখানে খাবার নিয়মিত জুটছে না, সেখানে ঈদের আনন্দ হবে কীভাবে?

তালায় ছাত্রলীগের ২য় বারের মত বৃক্ষের রোপণ

বন্যাকবলিত হায়দার আলী, রশিদ মিয়া, লাল মিয়াসহ আরও অনেকে আক্ষেপ নিয়ে বলেন, করোনার মধ্যে বন্যা। আমরা দিনমজুর।

আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। এবার আমাগো ঈদ নাই

অন্যদিকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক আতাউল গনিসহ জেলায় নতুন ৫২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫১৫ জনে। করোনায় টাঙ্গাইলে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫ জন।

গতকাল জেলা প্রশাসক আতাউল গনি তার করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে অবহিত করেন।

নাগরপুরে চলমান বন্যা কবলিত এলাকায় সাংসদ টিটু

তিনি এখন সরকারি বাসভবনে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ছাড়া সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ওয়াহেদুজ্জামান কয়েক দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ত্রাণ শাখা জানায়, জেলার ১১ উপজেলায় বন্যার করাল থাবা পড়েছে।

এর মধ্যে গোপালপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়ন, ভূঞাপুরের ৬, কালিহাতীর ১৩, টাঙ্গাইল সদরের ১১, নাগরপুরের ১২, ধনবাড়ীর ৬,

বাসাইলের ৬, মির্জাপুরের ১২, সখিপুরের ৩, ঘাটাইলের ৮ ও দেলদুয়ারের ৫টিসহ ৮৯টি ইউনিয়ন এবং ৬ পৌরসভা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলায় পানিবন্দি পরিবার ৭১ হাজার ৭২০টি। ৭৫০ গ্রামের ১ লাখ ২০ হাজার ৩৭৬ পরিবার এবং

৫ লাখ ৪১ হাজার ১৩৫ জন বন্যায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

১০৮৫টি বাড়ি নদীতে একেবারে বিলীন এবং ৩৫ হাজার ৩১১টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যা এলে চরের মানুষ আনন্দ যাই ভুলে

৭৬৬ কিলোমিটার কাঁচারাস্তা এবং ১৭৬ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ১৬৫টি ব্রিজ-কালভার্ট, ১৪ কিলোমিটার বাঁধ ও

২১১টি ধর্মীয় ও ২৫০ প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১১২৫ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমির ফসল।

/ মোজরলু

http://shopno-tv.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *