দেশব্যাপীআইন- আদালতপরিবেশ ও সমাজশিরোনামসর্বশেষসব খবর

অবশেষে শিশু সোহানা হত্যার জট খুললো, মায়ের দায় স্বীকার

অবশেষে শিশু সোহানা হত্যার জট খুললো, দায় স্বীকার করে মায়ের জবানবন্দি।

সকল জল্পনা কল্পনা ও নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ১৭দিন বয়সী শিশু হত্যার জট খুলেছে।

বাবা, চাচা ও ফুফা কেউ নয় মা শান্তা আক্তার পিংকি-ই হত্যা করেছে তার ১৭দিন বয়সীয় নবজাতক সোহানাকে।

হত্যার বর্ণনা ও দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছেন হত্যার শিকার শিশুটির মা শান্তা আক্তার @ পিংকি (২২)।

শনিবার (২৮ নভেম্বর)দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে হ্যত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে সস্তি ফিরে এসেছে।

অন্যদিকে নিজের ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে শিশুটির বাবা সুজনের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন মা ও বাবা।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, প্রথম থেকেই আমরা সোহানা হত্যাকান্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখেছি।

কপোতাক্ষী বিশ্বাস ও ডক্টরস ডায়াগনস্টিকের কার্যক্রম বন্ধ

ঘটনাস্থল পরিদর্শণ, পরিবারের সাথে কথোপোকথন ও বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করি।আমাদের ধারণা ছিল হত্যাকান্ডের সাথে পরিবারের কেউ জড়িত রয়েছে।

আমরা শিশুটির বাবা সুজন খানকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ এবং রিমান্ড আবেদন করি।

অবশেষে শিশু সোহানা হত্যার বিষয়ে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে সুজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আমাদের মনে হয় নবজাতকের মা ও বাবাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

দুইজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিশুটির মা আমাদের কাছে হত্যার বর্ণনা দেয়। নিজেই নিজের সন্তানকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন।

পরবর্তীতে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে বাগেরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ খোকন হোসেনের সামনে শিশুটির মা শান্তা আক্তার পিংকি হত্যার দায় স্বীকার করে

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় যা আদালত রেকর্ড করেছেন।

সকল তথ্য উপাত্য সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অতিদ্রæত সময়ের মধ্যে এই মামলার চুড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত ঠাকুর দাস বলেন, হত্যার শিকার শিশুটির বাবা সুজন ও মা শান্তা আক্তার @ পিংকি দুই জনেরেই আগে বিয়ে ছিল।

পিংকি ব্রা²নবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার বনগঞ্জ গ্রামের মোঃ ইউনুছ শেখের মেয়ে।

২০১৭ সালে একই এলাকার উজ্জল ভুইয়া নামের এক ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়।

সেখানে পিংকির একটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে ২০১৯ সালের দিকে পিংকির সাথে বর্তমান এই স্বামী মোরেলগঞ্জ উপজেলার

গাবতলা গ্রামের সুজন খানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়।

নবীগঞ্জে মিনি নাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

প্রেমের সূত্র ধরে পিংকি তার নাম পরিচয় ও বিয়ের বিষয় গোপন করে সুজনের কাছে চলে আসেন।

২০ দিন ধরে সুজনের বোনজামাই এনামুলের ঢাকাস্ত বাসায় থেকে বিয়ের পরে সুজনের বাড়িতে আসেন পিংকি।

কিন্তু পিংকি পূর্বের বিয়ে ও সন্তানের কথা এই স্বামী ও তার পরিবারের কাছে গোপন রাখেন।

আমরা মামলার সূত্র ধরে পিংকির বাবার পরিবার, পিংকির পূর্বের স্বামী-সন্তান ও কয়েকজন আত্মীয়ের সাথে কথা বলেছি।

সুজনের পূর্বের স্ত্রী ও শান্তা আক্তার পিংকির পূর্বের স্বামীসহ বিভিন্ন পারিবারিক ঝামেলার জন্য পিংকি তার সন্তানকে হত্যা করতে পারেন এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।

পিংকি আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানিয়েছেন, তিনি রাতে ঘুমানোর পরে তার শরীরে প্রচন্ড জালা শুরু হয়।

নিজের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বের হয়ে বাড়ির সামনের খাল, বাগান ও পুকুরের পাড়ে দৌড়াদৌড়ি করেন।

এক পর্যায়ে ঘরের সামনের পুকুরের ঘাটে জামরুল (লকট) গাছের নিচে ফেলে দিয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েন শান্তা আক্তার পিংকি।

পরবর্তীতে রাত দেড়টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে সন্তানের জন্য কান্নাকাটি শুরু করেন শান্তা আক্তার পিংকি।

অবশেষে শিশু সোহানা হত্যার শিকার নবজাতকের প্রতিবেশী মরিয়ম বেগম, খলিলুর রহমান, হাসি বেগমসহ কয়েকজন বলেন, শিশুটি হারিয়ে যাওয়া ও

মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে আমরা খুবই চিন্তিত ছিলাম কিভাবে ঘটনা ঘটল এই চিন্তা করে।

ঘুষ বাণিজ্যে লিপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার

তবে এখন জানতে পারলাম সোহানার মা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।

হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি।এ ধরণের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য এই ঘটনার কটোর শাস্তি দাবি করেন তারা।

হত্যার শিকার নবজাতক সোহানার দাদা ও মামলার বাদী আলী হোসেন বলেন, আমার সন্তান সুজন খান নির্দোষ। আমি তার মুক্তি চাই।

আমি নাতিও হারালাম, আবার ছেলেও জেলে এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

সুজনের মা নাসিমা বেগম বলেন, আমাদের আদরের ধন সোহানাকে হারিয়েছে। আমাদের চোখের পানি এখনও শুকায়নি।

আমরা সুজনকে হারাতে চাই না। আমি সুজনের মুক্তি চাই।

সুজনেরবোন রজিনা বেগম বলেন, শান্তা ভাবি আমাদের বাড়িতে আসার পরে বেশ কয়েকবার অস্বাভাবিক আচরণকরে বেহুশ হয়ে পড়তেন।

আমরা তাকে স্থানীয় ওঝা-কবিরাজও দেখিয়েছি।সে আমাদেরকে বলেছিল তারসাথে জ্বীন রয়েছে।

রোববার (১৫ নভেম্বর) রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামে বাবা সুজন খান ও মা শান্তা আক্তারের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল ১৭ দিন বয়সী সোহানা।

মধ্য রাতে ঘুম ভেঙে তারা দেখেন যে শিশুটি হারিয়ে গেছে।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) ভোর থেকে পুলিশের একাধিক টিম শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করলেও কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছিল না পুলিশ।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা করেন শিশুটির দাদা আলী হোসেন খান।

বুধবার ভোরে নামাজের পর নিজ ঘরের সামনের পুকুরে নাতির মরদেহ ভাসতে দেখেন আলী হোসেন।

পরে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

The Bangla Wall
http://shopno-tv.com/
https://shopnotelevision.wixsite.com/reporters
Shopno Television
Shopno Television
http://shopno-tv.com/

বাগেরহাট ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট

S M Shamsur Rahman Bagerhat District Correspondance 01718455026

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *