বেতন ও রেজিস্ট্রেশনের সাথে অতিরিক্ত টাকা আদায়
জামালগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ে বেতন ও রেজিস্ট্রেশনের সাথে অতিরিক্ত টাকা আদায়।
‘ভাই একটা কথা শুনেন। আমি দিনমজুর, রোজ আনি রোজ খাই, যা পাই, কোন রকম সংসার চলে, অন্যের জায়গায় ঘর বানাইয়া থাকি।
খুব কষ্ট করে মেয়ে দুইটারে লেখা-পড়া করাইতেছি। জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নাইনে পড়ে আমার মেয়েটা,
সারা বছর ইসকুল বন্ধ তার পরেও পেট থেকেই বেতন দিতে অইছে। ইসকুল বন্ধে আমার মেয়ে ইসকুলেও যায়নি টিফিনও খায়নি, তবুও খাওয়ার বিল দিছি।
কইন এহন আমরা গরিবরা কই যাই।’ এমন আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন এক শিক্ষার্থীর দিনমজুর বাবা বুরুজ আলী।
শুধু তিনিই নয় অসংখ্য অভিভাবকবৃন্দ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান ভূষণ চক্রবর্তীর প্রতি
ক্ষোভ ও দু:খ প্রকাশ করে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কারনে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন।
জানা যায়, করোনা কালেও সরকারী নির্দেশ অমান্য করে সেপ্টেম্বর থেকেই শিক্ষার্থীদের শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে প্রায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে
বেতন ও রেজিস্ট্রেশনের সাথে বেতনসহ জলযোগ (দুপুরের টিফিন) বাবত ৬৩০ থেকে ৭’শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বেনাপোলে প্রবীণ ত্যাগী নেতাদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন সমাবেশ
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, জলযোগে টাকা আদায় এক মাত্র প্রধান শিক্ষকের এখতিয়ারেই হয়েছে।
সূত্র জানায়, এই বিদ্যালয়ে ৬-ষ্ঠ থেকে ১০-ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ১৩’শ মতো শিক্ষার্থী রয়েছে।
৯ম শ্রেণী শিক্ষার্থীদের বোর্ডে নাম রেজিষ্ট্রেশনের সময় ‘জলযোগ (দুপুরের টিফিন) বাবত-৭’শ থেকে ৬৩০,
বেতন-১০৪০ থেকে ৩৫’শত পর্যন্ত রেজিস্টেশন-২৩০, সিলেবাস-১০ টাকা নেয়া হয়েছে।
বাকী ৪ ক্লাশের শিক্ষার্থীদের কি অবস্থা এ নিয়ে জনমনে বিরুপ প্রতিক্রীয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সিনিয়র এক গণমাধ্যমকর্মী তার ফেসবুক আইডিতে
ওই বিদ্যালয়ের অসংগতির ব্যাপারে স্যাটাস দিলে বিষটি নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে।
এছাড়া ওই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিয়মনীতি কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়েও
চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকবৃন্দ।
এই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্যেও এলাকাবাসী চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন হেড স্যারের নির্দেশনার পর তারা বেতন ও জলযোগের টাকা নিয়েছেন।
উল্লেখ্য এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ‘রাতের আঁধারে ভুমি অফিসের সীমানা দেয়াল ভেঙ্গে
গেইট ও রাস্তা প্রসস্থ করার জন্য জায়গা দখল করার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় ছবিসহ নিউজ প্রকাশ হলে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর স্থানীয় কয়েক জন কে হাত করে জোরদখল করে
ভুমি অফিসের জায়গায় রাস্তা প্রসস্তকরণ ও গেইট নির্মান করা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা কেন মুখে খুলুপ মেরেছেন
অভিভাবকবৃন্দের এমন প্রশ্নে মুখে পড়তে হয়েছে।
স্পন্দনের বার্তা সম্পাদকের ছোট ভাইয়ের মৃত্যু, শোক
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান ভুষণ চক্রবর্তীর সাথে মেবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,
আমি মোবাইলে কোনো কথা বলবো না। আমার স্কুলে এসে দেখা করলে আলাপ হবে।
উপরোক্ত অভিযোগটা সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মোবাইলে আমার কোনো বক্তব্য নাই। সবকিছু মোবাইলে বলা যাবে না।
জামালগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুল কবীর কে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের রশিদ দেখালে তিনি বলেন,
বিষয়টি আমি জানিনা, এখন দেখলাম, সম্প্রতি একটা নির্দেশনা অছে বেতনের ব্যাপারে তবে নির্দেশনার আগে টাকা নেয়াটা হয়নি,
আর জলযোগের টাকা তো নেয়ার কথাইনা তবোও আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ দেব জানান, বিষয়টি আমি আপনার মাধ্যমে জেনেছি।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি বিষয়টি এখন শুনেছি, খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
- ক্ষুব্ধ অভিভাবকবৃন্দ, স্কুলে টিফিন না খেয়েও বিল দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের’
- প্রধান শিক্ষকের এখতিয়ারে নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী
- করোনা লগ্নেও ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়ানো হচ্ছে
- বেতন তো নিছেই, না খাইয়াও খাওয়ার বিল দেয়া লাগছে’
——— দরিদ্রএক শিক্ষার্থীর বাবা’
Pingback: রংপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের স্মরণে নানা আয়োজন - দ্যা বাংলা ওয়াল