যশোর হাসপাতাল ইন্টার্ন নির্ভর বিশেষজ্ঞরা বাণিজ্যে ব্যস্ত
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ইন্টার্ন নির্ভর, বিশেষজ্ঞরা বাণিজ্যে ব্যস্ত। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা ইন্টার্ন নির্ভর হয়ে পড়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, তারাই এখন মূল চিকিৎসকের ভুমিকায় রয়েছেন। আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ব্যস্ত থাকেন ব্যক্তিগত বাণিজ্যে।
গত ১৫ দিনে ইন্টার্নরা একাধিক রোগীকে অন্যত্র রেফার্ড ও মৃত ঘোষণা করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলে আসলেও কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে নিরব রয়েছেন। বর্তমানে এখানে চিকিৎসাসেবার মান নিয়ে রোগীদের অভিযোগের শেষ নেই।
জানা গেছে, যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রতিদিন দ্বিগুনের বেশি রোগি ভর্তি থাকেন।
যশোর ছাড়া ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার আশায় এখানে আসেন।
এখানে আসার পর হাসপাতাল নিয়ে তাদের অভিযোগের শেষ নেই।
গত ২৩ ডিসেম্বর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে হাসপাতালে আসেন যশোর শহরের বকচর এলাকার জিন্নাত আলীর ছেলে সুজন (২৫)।
দুপুর ২টা ২২ মিনিটে ভর্তি হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সার্জারী ওয়ার্ডে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ছিলেন।
নুর হোসেন সৈকত কৈজুরী ইউনিয়নকে দুর্ণীতি মুক্ত করতে চান
কিন্তু কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে আসেননি। ইন্টার্নরা গুরুতর সুজনের চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন ।
পরে ইন্টার্ন ডা. আলী তাকে রেফার্ড করেন ঢাকা অথবা অথবা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
গত ২১ ডিসেম্বর ছুরিকাহত হন আরবপুর এলাকার মালেক শেখের ছেলে আমিনুর রহমান বিষে (৪৫)।
দুপুর ৩টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে চিকিৎসাসেবা দিতে আসেননি।
৪ টার দিকে বিষেকে ঢাকায় রেফার্ড করেন ইন্টার্ন ডা. নুসরাত। স্বজনরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার আগেই বিষে মারা যান।
যশোর হাসপাতাল ইন্টার্ন নির্ভর বিকেল ৪ টা ৪৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন আরেক ইন্টার্ন ডা. দিপ্তী।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন চৌগাছা উপজেলার গরিবপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে সামসুর রহমান (৪৫) ও
বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষণ রায়কে (৬৫) মৃত ঘোষণা করেন ইন্টার্ন ডা. মিনারুল ও ডা. রায়হান।
সূত্র জানায়, দুপুরের পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত রোগীরা কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখা পাননা। তারা ব্যক্তিগত বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
ওয়ার্ডে কোন গুরুতর রোগী আসলে ইন্টার্নরা দেখভাল করেন।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের ‘নাজুক’ চিত্র
আর রোগীর অবস্থা একটু খারাপ মনে হলেই তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে অন্যত্র রেফার্ড করে দায় এড়ান।
ইন্টার্ণরা যেন রোগীদের শেষ ভরসা। বিশেষজ্ঞদের অবহেলায় রোগীর ভাগ্যে ফলোআপ চিকিৎসা জোটেনা ঠিকমতো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইন্টার্ন জানান, কোন গুরুতর রোগী আসার পর আগে বিশেষজ্ঞের সাথে মোবাইলে কথা বলতেন।
রোগীর শারীরির অবস্থা ভালো করে না শুনেই মোবাইলে নির্দেশনা দেয়া হয় “চিকিৎসা দাও, আর যদি খারাপ মনে করো তাহলে রেফার্ড করে দিও”।
যে কারণে এখন আর কথা বলতে মন চায়না। রোগীর অবস্থা বুঝে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সার্জারী বিভাগের মতো অন্যান্য বিভাগগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রতিদিন সকালে একবার ওয়ার্ড রাউন্ড দেয়ার পর আর ওয়ার্ডে যান না কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
রোগীর চিকিৎসাসেবা, রেফার্ড, মৃত ঘোষণা সবকিছু করেন ইন্টার্নরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জ্যেষ্ট সেবিকা জানান,
হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। আগে এমন অবস্থা কখনো চোখে পড়েনি।
যেদিন এখানে ইন্টার্নরা এসেছেন সেদিন থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলা শুরু করেছেন। বর্তমানে ইন্টার্নরা সব কিছু।
কর্তৃপক্ষের সঠিকভাবে জবাবদিহিতা ও কঠোরতা না থাকায় যা ইচ্ছা তাই চলছে।
এমন অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত। এই বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আরিফ আহমেদ জানান,
ইন্টার্নরা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করতে পারবেন।
এরপর রোগীর অবস্থা বুঝে তারা সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার অথবা কনসালটেন্টের সাথে কথা বলবেন।
তিনি আরো জানান, বিশেষজ্ঞের অনুপস্থিতিতে ইন্টানরা রোগীকে অন্যত্র রেফার্ড, মৃত ঘোষণা ও ছাড়পত্র দিতে পারবেন না।
এই ধরণের ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Pingback: নওমুসলিম পরিবারের খাদ্য ও কম্বল নিয়ে উদ্ভাবক মিজানুর - দ্যা বাংলা ওয়াল
Pingback: মাগুরায় ২ মাথাওয়ালা কন্যা সন্তানের জন্ম - দ্যা বাংলা ওয়াল