শ্রীপুরে প্রচারনায় ব্যবহৃত হচ্ছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্র
শ্রীপুরে পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারনায় ব্যবহৃত হচ্ছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্র। আসন্ন শ্রীপুর পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচার এখন তুঙ্গে।
প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই পোস্টার, লিফলেটে ছেয়েগেছে পোর পৌর এলাকা পাশাপাশি প্রার্থীরা ব্যবহার করছেন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন শব্দযন্ত্র।
কেউ কেউ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গানবাজনাসহ মাইকিং এর মাধ্যমে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
হাসপাতাল, বাজার, মসজিদ-মন্দির ও আবাসিক এলাকাসহ সবখানেই প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিং চলছে।
নির্বাচনি প্রচারে ব্যবহৃত উচ্চমাত্রার এমন শব্দযন্ত্রের যন্ত্রণায় বিরক্ততে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
বিশেষ করে বাজারের রাস্তার পাশে থাকা বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন।
প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকেও কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।
পৌর নির্বাচনী আচরণ বিধিমালাতে প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে মাইক ব্যবহার করতে বলা থাকলেও
কিছু প্রার্থীদের একাধিক শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। শুধু মাইক নয়, মোড়ে মোড়ে সাউন্ড স্পিকারও ব্যবহার করছে অনেকেই।
যেখানে চলছে প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচনি গান-বাজনাও। এমন প্রচারকে আচরণবিধির লঙ্ঘন কি-না অনেকেই প্রশ্ন করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে একসাথে একাধিক মাইকের আওয়াজে প্রকট শব্দ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে।
শ্রীপুরে প্রচারনায় ব্যবহৃত হচ্ছে প্রচারণায় প্রার্থীরা যেন এখন শব্দযন্ত্র ব্যবহারের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। অনেক সময় ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীদের একই সড়কে অটো
রিক্সায় ৭/৮ টি প্রচারণার মাইক চলে। যদিও জনসাধারণ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওই সময়টুকু দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরতে দেখা গেছে।
সরকারি জায়গায় বিল্ডিং করলে সরকার দেখবে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,অতিমাত্রায় শব্দ দূষণে হার্ট, কান ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা রয়েছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
শ্রীপুর গরু হাটা মোড়ের আমিনুল নামের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, রাস্তার পাশেই আমার দোকান।
দুপুরের পর থেকে একটার পর একটা মাইক আসতে থাকে। মাইকের উচ্চ শব্দে দোকানে বসে থাকতে পারি না। দেখা গেছে কাস্টমার একটা কথা বললে আরেকটা শুনি।
বাজার মসজিদের কয়েকজন মুসল্লি বলেন, মাইকের শব্দের যন্ত্রণায় খুব বিরক্তে আছি। একটির পর একটি মাইক আসতেই থাকে। এতে কান ঝালাপালা হয়ে যায়।
মাইকের যন্ত্রণাদায়ক শব্দের কারণে মুঠোফোনে কথা বলাসহ কাজকর্ম করা যায় না। যদি মাইকের আওয়াজটা কমিয়ে প্রচার করা হয় তাহলে ভালো হতো।
মাইকিং এ প্রচার কম করে প্রার্থীরা লিফলেট দিয়ে ভোটারদের কাছে প্রচার করলে আমরা কিছুটা স্বস্থিরতা পাবো।
নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের মাইকিং প্রচারণার পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে
সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। রাতে ঘুমানো যায় না। মাথাব্যথা করে। এসব বন্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপ প্রয়োজন।
প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টসহ কঠোর নজরদারি না হলে এই উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়।
ফটোকপির দোকানে সরকারি দফতরের জাল কাগজপত্র
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মইনুল আতিক বলেন, ‘সহনীয় মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত শব্দ মানুষের স্বাস্থ্যের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ।
কেননা, মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণে শ্রবণশক্তি লোপসহ উচ্চ রক্তচাপ, মাথাধরা, খিটখিটে মেজাজ, বিরক্তি বোধ, অনিদ্রা ও
হৃদ্যন্ত্রের সমস্যাসহ নানা রকম মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।’
পৌরসভা রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, প্রচারণার ক্ষেত্রে আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী প্রার্থীরা ১টি করে শব্দ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রার্থীদের আচরণবিধি মানার তদারকিতে ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মাঠে কাজ করছেন। কোন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২৬টি কেন্দ্রের ১৯০টি বুথে আগামী ১৬ জানুয়ারী এ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে ৬৭হাজার ৯২৭জন ভোটারের মন জয় করতে ৬৪জন প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়ছেন। সবগুলো কেন্দ্রেই ভোট ইভিএমে নেয়া হবে জানা গেছে।
আওয়ামীলীগ-বিএনপি প্রার্থীসহ মেয়র পদে ৪জন, কাউন্সিলর পদে ৪৯জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১জন প্রতিন্ধীতা করছেন।
Pingback: নড়াইলে মেয়র প্রার্থী আঞ্জুুমানয়ারা শুভেচ্ছা বিনিময় - দ্যা বাংলা ওয়াল