বেনাপোল সীমান্তে মাদক স্বর্ণসহ কোটি টাকার পণ্য আটক
বেনাপোল সীমান্তে মাদক, স্বর্ণসহ ১শ‘২০ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্যসহ ৩০৪ জন চোরাচালানীকে আটক করেছে বিজিবি।
করোনা কালীন সময়ও নিরাপত্তার সাথে যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পথে চোরাচালান।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রায় প্রতিদিন ঘটেছে মাদকসহ কোন না কোন পণ্যের পাচার কার্যক্রম।
গেল বছর (২০২০) বেনাপোল সীমান্ত থেকে শুধু যশোর ৪৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অভিযানে ১শ‘১৯ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মূল্যের
মাদক, স্বর্ণ, আগ্নেয়াস্ত্র, বৈদেশিক মুদ্রা, চন্দন কাঠ, কসমেটিক্স ও গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান পণ্য জব্দ হয়েছে।
এসময় পাচারের সাথে জড়িত ৩শ‘ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
যশোর ৪৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল সেলিম রেজা চোরাচালানী পণ্যসহ চোরাচালানী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যশোরের চিকিৎসক সমাজে জনপ্রিয় নাম ডা. বেনু
বিজিবি সূত্রে জানায়, সীমান্ত নিরাপত্তা ও চোরাচালান রোধসহ সব ধরনের পাচার কার্যক্রম প্রতিহত করতে বছর ধরে বিজিবির নিয়মিত অভিযান পরিচালনা হয়ে আসছে।
গত বছরের ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজিবির অভিযানে ৩৩ হাজার ৬৯৮ বোতল ফেন্সিডিল, ৪১ কেজি ৭৭২ গ্রাম স্বর্ণ,
৭ লাখ ৩৮ হাজার ইউএস ডলার, ২২ লাখ ৯২ হাজার ২০০ ভারতীয় রুপি, ১৩টি পিস্তল, ২৪ টি ম্যাগাজিন, ৫৮ রাউন্ড গুলি,
৫৪৮ বোতল মদ, ১২১২ পিস ইয়াবা ও ৯১৫ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। এছাড়া আটক হয় বিপুল পরিমানে চন্দন কাঠ, গার্মেন্টস ও কসমেটিক্স সামগ্রী।
এসময় চোরাচালানের সাথে জড়িত ৩শ‘ ৪ জন চোরাচালানীকে আটক করা হয়।
আটককৃত মাদক ও চোরাচালান পণ্যের বাজার মুল্য ১শ‘ ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা বলে জানায় বিজিবি।
স্থানীয় গ্রামবাসী মিলন খান বলেন, ২০১৮ সালে বেনাপোল সীমান্তের ৮.৩ কিলোমিটার বিজিবি-বিএসএফ যৌথ ভাবে
”ক্রাইম ফ্রি জোন” ঘোষণা করলেও তার তেমন সুফল তেমন মেলেনি।
চালিতাতলী বাজারে মাদক বিস্তারের প্রতিবাদে কুপিয়ে আহত
বিজিবি-বিএসএফের নজর এড়িয়ে প্রতিনিয়ত ঢুকছে মাদক, অস্ত্র, স্বর্ণসহ বিভিন্ন চোরাচালান পণ্য।
সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো আধুনিকায় ও জোরদার করতে হবে।
বেনাপোলের সংবাদকর্মী আনিছুর রহমান বলেন, যে ভাবে মাদক প্রবেশ করছে এবং প্রতিদিন আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে
উদ্ধার হচ্ছে এতে করে আমরা সন্তানদের নিয়ে সঙ্কিত। এসব মাদক সব ঢুকছে ভারত থেকে।
তাই চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি‘র পাশাপাশি ভারতীয় বিএসএফেরও আন্তরিক হতে হবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান বলেন, আইনের ফাঁকে মাদক ব্যবসায়ীরা ছাড়া পেয়ে আবার পাচার কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
বেনাপোল সীমান্তে মাদক স্বর্ণসহ এদের বিরুদ্ধে আরো কঠিন আইন হওয়া উচিত।
যশোর ৪৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল সেলিম রেজা জানান, বেনাপোল বিস্তৃর্ন সীমান্ত এলাকা।
এত কাছাকাছি জনবসতি চোরাচালান রোধ কঠিন। মুল হোতারা স্থানীয় অসহায় মানুষগুলোকে ব্যবহার করে পাচার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
ফলে সহজে মাদক প্রবেশ করে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের অভ্যন্তরে। তবে চোরাচালান প্রতিরোধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিজিবি আন্তরিক ভাবে কাজ করছে।
বিজিবি যে ভাবে অভিযান চালাচ্ছে তাতে খুব দ্রুত চোরাচালান শুণ্যের কোঠায় চলে আসবে।
উল্লেখ্য, যশোর এলাকায় ভারতের সাথে ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত পথ রয়েছে।
সেখানে সীমান্ত রক্ষায় ও চোরাচালান প্রতিরোধে কাজ করছে ৫ শতাধিক বিজিবি সদস্য।
বিজিবি সীমান্তে নাইট ভিষন ক্যামেরা, ভাসমান বিওপি, নৌরুটে স্প্রিড বোর্ডসহ বেশ কিছু আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত রয়েছে।
তারপরও ফাঁক ফোকর দিয়ে চলে আসছে চোরাচালানী পণ্য।




Pingback: নড়াইলে পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - দ্যা বাংলা ওয়াল