দেশব্যাপীবিশেষ প্রতিবেদনপরিবেশ ও সমাজশিরোনামসর্বশেষসব খবর

নিরাপত্তা বাহিনী থাকার পরও বেনাপোল বন্দরের চুরি থামছে না

কোটি টাকার মাল চুরি : নিরাপত্তা বাহিনী থাকার পরও বেনাপোল বন্দরের চুরি থামছে না।

দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন শেডে থেকে কোটি কোটি টাকার পণ্য চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

বন্দরের কিছু কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বন্দরে পণ্য চুরির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে কর্তৃপক্ষকে

একাধিকবার অভিযোগ করে কোন সমাধান পায়নি বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো।

প্রতিনিয়ত বন্দর থেকে আমদানিকৃত মালামাল চুরির ঘটনা নিয়ে বর্তমানে কাস্টমস ও বন্দরের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।

বিশেষ করে কাস্টমসের নিলামকতৃ পণ্য চুরি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ফলে সরকারকে মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, খুলনার আমদানিকারক সান ওয়ার্ল্ড ট্রেড ভারত থেকে ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৩২০ কেজি ব্রোকেন স্টোন আমদানি করেন।

যা বন্দরের টিটিআইতে সংরক্ষন করা হয়। যার কাস্টমস মেনিফেস্ট নং -২৬৪১৩/১৭, ২৪৫১৬/১৩,২৫৫৩৬/১০,২৭৩০৮/৭।

পণ্য চালানটি কাস্টমস এর ডেপুটি কমিশনার (আইআর এম) এর নেতৃত্ব ইনভেন্ট্রি করে ১৭ লাখ ৯১ হাজার ৩২০ কেজি কম পাওয়া যায়।

বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দর কর্তৃপক্ষকে পত্র প্রদান করেছেন যার পত্র নং-৫ম/২০(০৮)এলসি/নিলাম/বেনা-২০২০ /৫৮৭৬(১-৮)।

অন্যদিকে বন্দরের ১নং শেডে থেকে ১১০২ টন উন্নতমানের শার্টিং ও প্যান্টিং কাপড় চুরি হয়ে যায়।

যার আমদানিকারক বেনাপোলের এইচবি ইন্টারন্যাশনাল। কাস্টমস মেনিফেস্ট নং ৩৬৩৪০/১।

বেনাপোল বন্দরকে গতিশীল করতে নতুন সফটওয়্যার

পণ্যটি মিথ্যা ঘোষণার অভিযোগে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটক করে। পরে চালানটি নিলামে বিক্রি করা হয় ৬১ লাখ টাকায়।

নিলামকারী বেনাপোলের নোভা এন্টারপ্রাইজ পণ্যচালানটি খালাস নিতে গিয়ে ১১০২ কেজি চুরি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন।

নিলামকারী তাৎক্ষনিক বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদারকে জানালে

তিনি নিলাম ক্রেতা মোহাম্মদ আলী খানকে হুমকী দিয়ে বন্দর থেকে বের করে দেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নিলামকারী মোহাম্মদ আলী খান জানান, বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবির তরফদারের নেতৃত্বে বন্দরে একটি শক্তিশালী চোর সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।

তিন গত ২ বছর বেনাপোলে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বড় ধরনের পণ্য চুরির ঘটনা ঘটছে।

নিরাপত্তা বাহিনী থাকার পরও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি।

বন্দরের প্রতিটি শেডে ট্যান্ডেল নামে বহিরাগত একজন করে চোর নিয়োগ দেয়া হয়েছে গোপনে।

তারা সরাসরি রাজস্ব ফাঁকি ও শেড থেকে মালামাল চুরির সঙ্গে জড়িত এমন অভিযোগ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো।

নিলামকারীরাও তাদের নিলামকৃত মালামালের সাথে অন্য মালামাল নিয়ে যাওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

বন্দরে মোট ৪২টি শেড রয়েছে, যার প্রতিটি শেডে বহিরাগত ট্যান্ডেল চোর কর্মরত আছে বর্তমানে।

সংশিষ্ট সূত্র জানায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বছরে ২০ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয় ভারত থেকে।

এসব পণ্য থেকে সরকার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকেন।

বেনাপোল কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়।

আর চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৫০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৫০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

কুকুরের সাথে ধাক্কা মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

বন্দর সংশ্লিস্টরা জানিয়েছে, বন্দরের প্রতিটি গেটে নিরাপত্তাকর্মীরা দায়িত্বে থাকার পরও অবাধে প্রবেশ করছে বহিরাগত।

বন্দর একটি বন্ডেড কেপিআইভুক্ত এলাকা সত্তে¡ও কীভাবে বন্দরে অবৈধ লোকজন প্রবেশ করছে, তা নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল হক বলেন, বন্দর থেকে পণ্য চুরি হচ্ছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।

চুরি যাওয়া মালামালের কোন ক্ষতিপুরন দেন না বন্দর কর্তৃপক্ষ।

তাছাড়া বন্দরের উপ পরিচালক মামুন তরফদার ওপারে ভারতের বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রতিদিন কত ট্রাক পণ্য আমদানি হবে

তা অবহিত করার পর ভারত থেকে সেই সংখ্যক ট্রাক পণ্য আমদানি হয়ে থাকে।

ফলে ওপারে হাজার হাজার ট্রাক পণ্য আটক পড়ে থাকে। এছাড়া বন্দরের বিকল ওজন স্কেলের ওজন নিয়েও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিটি ওজন স্কেলের ওজন বেশি দেখিয়ে বন্দরের মাসুল বেশি আদায় করেছেন কয়েক বছর যাবত।

ভারত থেকে সঠিক ওজন করে পণ্য এনে কাস্টমসের কাছে আমদানিকারকরা নানা ভাবে হয়রানিসহ অতিরিক্ত শুল্ক ও জরিমানার শিকার হয়েছেন।

ইন্দো-বাংলা চেম্বার অফ কমার্স সাব কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, বন্দরে কত ট্রাক পণ্য আমদানি হবে সেটি নিয়ন্ত্রন করে মামুন তরফদার,

সে বন্দরে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তার সাথে কাস্টমস ও রেল কতৃপক্ষের মধ্যে রশি টানাটানি হচ্ছে।

ফলে প্রশাসনিক চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়ে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি হচ্ছে।

বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, চুরির বিষয়টি নিয়ে উওর দেবেন পরিচালক।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন পরিচালক। আমি উওর দিতে বাধ্য নই।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল জলিল বলেন, বন্দর থেকে পণ্য চুরির অভিযোগ পাওয়ার পর

বন্দরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান,

বন্দরের অধিকাংশ সমস্যা আমরা বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে নিয়ে সমাধান করেছি।

মামুন কবির তরফদারের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো নেই।

টিটিআই থেকে ব্রোকেন স্টোন ও ১ নং শেড থেকে উন্নত মানের মূল্যবান শাটিং সুটিং কাপড় চুরি গেছে।

বিষয়টি নিয়ে আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি।

/ মোঃ জামাল হোসেন

https://shopnotelevision.wixsite.com/reporters
http://shopno-tv.com/
The Bangla Wall
http://shopno-tv.com/
https://shopnotelevision.wixsite.com/reporters
http://shopno-tv.com/

বেনাপোল (যশোর) করেসপনডেন্ট

Md. Jamal Hossain Mobile: 01713-025356 Email: jamalbpl@gmail.com Blood Group: Alternative Mobile No: Benapole ETV Correspondent

One thought on “নিরাপত্তা বাহিনী থাকার পরও বেনাপোল বন্দরের চুরি থামছে না

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *