টাঙ্গাইলের মধুপুরে ওষধ আছে চিকিৎসা নেই
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে ওষধ আছে চিকিৎসা নেই। টাঙ্গাইলের মধুপুরে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য কোন ব্যবস্থা নেই।
নামেমাত্র ওষধ থাকলেও চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় রোগীদের পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
কিন্তু এতে অনেক সাপে কাটা রোগী পথিমধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
গত একসপ্তাহে চার জন সাপে কাটা রোগীর মৃত্যুর খবরে মধুপুরবাসী খুব আতঙ্কে জীবনযাপন করছেন।
জানা যায়, মধুপুরের ফুলবাগচালা, শোলাকুড়ি, অরণখোলা, কুড়াগাছা বেরিবাইদ ও মহিষমারাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ী অঞ্চলে সর্বত্র সাপের উপদ্রব লক্ষ্য করা যায়।
বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে গ্রামগঞ্জেও সাপের উপদ্রব বেশী দেখা যায়।
গত ১৬ জুলাই বেরীবাইদ ইউনিয়নের দক্ষিন জাঙ্গালিয়া গ্রামের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রী সাদিয়া সাপের কামড়ে মারা যায়।
৯ জুলাই আনারস বাগনে লেবুর চারা লাগাতে গিয়ে উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নের সিংহেরচালা গ্রামের নুরুল ইসলাম সাপের কামড়ে মৃত্যুবরন করেন।
তার চাচাতো ভাই পারিজুল ইসলাম বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে অবশেষে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
কুড়াগাছা ইউনিয়নের পিরোজপুর ঘোনাপাড়া গ্রামের মাহফুজা নামের এক নারী সাপের কামড়ে মৃত্যুবরন করেন।
মধুপুরে কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা না পেয়ে তার স্বামী তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে নিলে সেখানে তার মৃত্য হয়।
রংপুরে অসহায় শ্রমিক ও দুঃস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
তার কিছুদিন পরেই একই ইউনিয়নের সাইমাসহ আরো দুজন নারীকে সাপে কামড়ালে কবিরাজী ঝাড় ফুকের মাধ্যমে তারা মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসে।
১০ জুলাই রাতে ধনবাড়ীর পাইস্কা ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের সেকান্দর আলী নামে এক ব্যাক্তি সাপের কামড়ে মারা যান।
ধনবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটার চিকিৎসা না থাকায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
মধুপুর ড্রাগিস্ট এন্ড কেমিস্ট সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহফুজুল হক বলেন, সরকারী হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা পাবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু সাপে কাটা রোগী নিয়ে অভিভাবকদের অসহায়ত্ব সবাইকে ভাবিয়ে তোলে। ওষধ ও চিকিৎসা পেতে দেরি হলে এতে রোগীর মৃত্যু হয়।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে ওষধ আছে ইনসেপ্টা ওষধ কোম্পানীর টাঙ্গাইল ডিপোপ্রধান নেছার উদ্দিন জানান,
প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগীর ¯œ্যাক অ্যান্টিভেনম ইনসেপ্টা সরবরাহ করে থাকে।
প্রতি বছর ৪ শতাধিক লোক সাপের কামড়ের শিকার হয়ে থাকে।
জলছত্র জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, ৪ বছর যাবত জলছত্র হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী দুস্থের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ
মধুপুর সরকারী হাসপাতালে কোন দিনই তো সাপে কাটার চিকিৎসা ছিলনা এখনও নেই। চিকিৎসার জন্য দুরে কোথাও নেওয়ার আগেই রোগী মারা যায়।
মধুপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুবিনা ইয়াসমিন জানান, সাপে কাটা রোগীদের জন্য ¯œ্যাক অ্যান্টিভেনম আছে
কিন্ত চিকিৎসা উপকরণ অপ্রতুলতার কারণে চিকিৎসা সেবা সম্ভব হয়না। এ ধরনের রোগীর অবস্থা সবসময় ঝুঁকিপুর্ণ থাকে।
তাই তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।
টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন জানান, টাঙ্গাইলের কোন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল
এমনকি টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই।
তবে টাঙ্গাইল কুমদিনী হাসপাতালে এ ধরণের রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।
কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) অনিমেষ ভৌমিক লিটন জানান,
সাপে কাটা রোগীদের জন্য এখানে চিকিৎসার সব ধরণের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে অ্যান্টিভেনম রোগীর পক্ষ থেকে কিনে আনতে হবে।
তারপর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করে থাকে।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।




Pingback: রাজশাহীতে বারসিক’র ফ্রি ভেকসিন রেজিষ্ট্রেশন শুরু - দ্যা বাংলা ওয়াল