দেশব্যাপীআইন- আদালতপরিবেশ ও সমাজশিরোনামসর্বশেষসব খবর

পাবনা চাটমোহরের চাঞ্চল্যকর ইমন হত্যার রহস্য উন্মোচন

পাবনা চাটমোহরের চাঞ্চল্যকর স্কুল শিক্ষার্থী, সিএনজি চালক ইমন হোসেন হত্যার রহস্য উন্মোচন ও ৫জন গ্রেফতার।

পাবনা জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্যটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

মোঃ ইমন হোসেন, বয়স ১৭ বছর। পিতা সিএনজি চালক জাকিরের বড় ছেলে। এবার এস.এস.সি পরীক্ষার জন্য ছিল তার ভালো প্রস্তুতি।

করোনাকালীন সিএনজি বন্ধ থাকায় তিন সন্তানসহ পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়ে পিতা জাকির।

লক ডাউন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পালা করে সিএনজি চালাতে থাকে জাকির ও তার শিশু পুত্র ইমন।

পরিবারকে সাহায্য করতে পেরে ইমনের খুব ভালো লাগে। হয়তো অল্প বয়সেই ইমন পরিবারের বড় সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছিল।

সে হয়তো জানতো না সমাজের অন্ধকার দুনিয়া সম্পর্কে । যেখানে অপরাধীরা উৎ পেতে থাকে ইমনের মতো নিরীহ কাউকে শিকার করার জন্য ।

ঘটনার শুরু:
গত ১৮/০৮/২০২১ তারিখ রোজ বুধবার রাত্রি ০৮.০০ টার দিকে পিতা পুত্র বাড়ি ফিরছিল যেখানে পিতা জাকির সিএনজি গাড়িতে যাত্রী

আর পুত্র ইমন সিএনজি গাড়ির ড্রাইভার এর আসনে বসে আছে।

পিতা কে মাঝগ্রাম বাসায় পৌঁছে দিয়ে শিশু ইমন একটি রিজার্ভ ভাড়া মারার জন্য মান্নাননগর উদ্দেশ্যে রওনা করে।

মান্নাননগর তখন রাত প্রায় দশটা বাজে। ইমনের প্রতিবেশী মন্টু ঢাকা থেকে আগত তার মেয়েকে রিসিভ করার জন্য মান্নাননগর অপেক্ষা করছে।

মন্টু তার মেয়েকে নিয়ে ইমনের রিজার্ভ করা সিএনজি গাড়িতে করে বাড়ি ফিরবে। সেখানে ঘোরাফেরা করছে শিকারি আসামিরা।

চারজন যুবক বয়সী শিকারি খুঁজে বেড়াচ্ছে শিকারকে। তারা আজকে রাত্রেই যেকোনো মূল্যে সিএনজি ছিনতাই করবে।

রুয়েটে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন

আসামিদের পরিকল্পনা:
ঘটনার দিন ১৮/০৮/২০২১ ইং তারিখ সন্ধ্যা ০৭.৩০ ঘটিকার সময় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি রাকিব, নুরুজ্জামান সেলিম,

হৃদয় ও টুটুল মির্জাপুর কোবাদবাজার মিলিত হয়। তারা পরিকল্পনা করে একটি সিএনজি অথবা অটো ছিনতাই করে বিক্রয়লব্ধ টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিবে।

নুরুজ্জামান তার পূর্ব পরিচিত চোরাই মাল ক্রেতা সিন্ডিকেটের সদস্য উল্লাপাড়ার নাঈম এর সাথে যোগাযোগ করে। নাঈম গ্রিন সিগন্যাল দিলে আসামিরা এবার পরিকল্পনার ছক কষে।

পরিকল্পনা করে সিএনজি যাত্রী সেজে সুবিধাজনক জায়গায় সিএনজি চালকের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে সিএনজি গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাবে।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইনের সংঘাতে শিশু টুটুল একটি শক্ত রশি আনে। মূল অপরেশন টিমে থাকে ০৪ জন আসামি রাকিব, নুরুজ্জামান, হৃদয় ও সেলিম।

আর রেসকিউ সদস্য হিসেবে মির্জাপুর অবস্থান করে আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু টুটুল।

একই দিন একটি অটো গাড়ি ভাড়া আসামি রাকিব নুরুজ্জামান হৃদয় ও টুটুল রাত ১০টার সময় মান্নাননগর উপস্থিত হয়। এবার অপারেশনের পালা।

আসামীদের মুল অপারেশন:

আসামি নুরুজ্জামান মান্নাননগর অপেক্ষমান একটি সিএনজি দেখে এগিয়ে যায়।

সেই সিএনজি গাড়ি নিয়েই শিশু ইমন মন্টুর মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল।

আসামিরা ইমনকে চেনে না, তারা চেনে শুধু একটি সিএনজি গাড়ি। নুরুজ্জামান বওসা ঘাটে যাওয়ার কথা বলে ৩০০ টাকায় ইমনের সিএনজি গাড়ি ভাড়া করে।

শিশু ইমন মন্টুর অনুমতি নিয়ে ০৪ জন যাত্রী নিয়ে বওসা ঘাটের উদ্দেশ্যে রাত ১১.০০ টায় রওনা করে।

মন্টুর মেয়ে ঢাকা চান্দুরা জ্যামে আটকে থাকায় অনেক রাতে মান্নাননগর পৌছাবে বিধায় ইমন অল্প সময়ের জন্য

একটি ভাড়া মেরে ফিরে আসবে এটা ভেবে মন্টুর কোন আপত্তি ছিল না।

রাত ১১.৩০ টা ছুই ছুই। যাত্রী সেজে পেছনের আসনে বসে থাকা রাকিব ততক্ষণে কাছে থাকা দড়িতে ফাঁস তৈরি করে ফেলেছে।

নুরুজ্জামান প্রস্তুত ফাঁসি গলায় পরিয়ে দেওয়ার জন্য, আসামি সেলিম ও হৃদয় প্রস্তুত শিশু ইমনের হাত-পা শক্ত করে ধরে থাকার জন্য।

চাটমোহর দরাপপুর ভাঙ্গা ব্রিজ পার হওয়া মাত্র মোবাইল পড়ে গেছে এমন মিথ্যা অজুহাতে সিএনজি গাড়ি দাঁড় করায় নুরুজ্জামান।

আসামিরা প্রস্রাব করার কথা বলে গাড়ি থেকে নেমে ইমনের অগোচরে আবার তাদের পরিকল্পনা ঝালিয়ে নেয়।

সিএনজি ড্রাইভার ইমনের অগোচরে গাড়ীর পিছন দিক থেকে সিএনজি গাড়ির মধ্যে উঠে আসামি রাকিব রশির একপ্রান্তে বানানো ফাঁসটি

নুরুজ্জামানের দিকে এগিয়ে দেয়। ড্রাইভার ইমনের বাম পাশে দাঁড়ানো নুরুজ্জামান কৌশলে ইমনের গলায় ফাঁসি লাগিয়ে দেয়।

রাকিব পিছন দিক হতে সজোরে রশি টান দিয়ে ইমনের গলায় ফাঁস লাগায়। অন্যদিকে আসামি সেলিম ও হৃদয় শিশুমনের পা ও মুখ চেপে ধরে থাকে।

সিএনজি ড্রাইভার ইমন নিস্তেজ হয়ে গেলে আসামিরা তাকে মৃত ভেবে ফাঁস লাগানো রশির অপর প্রান্ত দিয়ে ইমনের পা বেঁধে

ঘটনাস্থলে পাশেই কাশবনের জঙ্গলের মধ্যে তার লাশটি লুকিয়ে রাখে।

পাকা ড্রাইভার নুরুজ্জামান ইমনের সিএনজি গাড়ি চালিয়ে সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া তার সহযোগী নাঈম এর কাছে বিক্রির জন্য রাখে।

তখন রাত প্রায় ০২.০০ টা বাজে। রেসকিউ সদস্য টুটূল সার্বক্ষণিক অন্যান্য আসামীদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখে।

আসামিরা হেঁটে বড়াল ব্রীজ পর্যন্ত আসলে টুটুল একটি সিএনজি রিজার্ভ করে আসামিদের নিরাপদে চাটমোহর নিয়ে আসে।

ঘটনাটি এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু অপরাধীরা তাদের অপকর্ম ঢেকে রাখতে পারে নি।

পাবনার ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ায় দূর্ঘটনায় ২ জন গুরুতর আহত

মাত্র ১৮ ঘন্টায় পুলিশের জালে অপরাধীরা :
২০/০৮/২০২১ তারিখ দুপুর বেলা শিশু ইমনের লাশ ঘটনাস্থলে বিলের পানিতে ভেসে থাকতে দেখে ইমনের পিতা ইমনের লাশ সনাক্ত করে

অজ্ঞাত ০৪ জন যাত্রীকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করে।

বিলের পানিতে লাশ ভেসে উঠার ঘটনায় ছায়া তদন্ত করতে থাকা চাটমোহর থানা পুলিশ পাবনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে

পাবনা চাটমোহরের চাঞ্চল্যকর ইমন চাটমোহর সার্কেল অফিসারের নেতৃত্বে এজাহারের কপি নিয়ে পুরোদমে মাঠে নেমে যায়।

কিছুক্ষণের মধ্যে যোগ দেন পাবনা জেলা পুলিশের চৌকস কর্মকর্তা অতিঃপুলিশ সুপার (প্রশাসন) ও অতিঃ পুলিশ সুপার (অপরাধ)।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, মান্নাননগর সহ বিভিন্ন এলাকায় সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাত প্রায় ১০টার দিকে আসামি রাকিবকে সনাক্ত করা হয়।

আসামি রাকিব পুলিশি অভিযানের পূর্বেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়।

আবারো জেলা পুলিশের চৌকস কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে অভিযানিক দল রাত প্রায় ০২.৩০ টার দিকে আসামি নুরুজ্জামান হৃদয় ও টুটুলকে আটক করে।

আসামীরা ইমনকে হত্যা করে সিএনজি গাড়িটি চুরি করার কথা স্বীকার করে। শুরু হয় সিএনজি উদ্ধার অভিযান।

আসামিদের সঙ্গে নিয়ে উল্লাপাড়া থানাধীন গোয়েটা বাজারে উপস্থিত হয়ে নাইমের বসতবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কিন্তু কৌশলী নাঈম ইমন হত্যার বিষয়ে পুলিশ অভিযানে নেমেছে জেনে ইমনের উক্ত সিএনজিটি উল্লাপাড়া থানা এলাকায় ফেলে রাখে।

উল্লাপাড়া থানা পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় রাখে। আসামিদের সনাক্ত মতে উল্লাপাড়া থানা চত্বরে ইমনের ছিনতাই হওয়া সিএনজিটি শনাক্ত হয়।

তখন প্রায় সকাল ০৭.৩০ মিনিট। মাত্র ১৮ ঘন্টায় ইমন হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়।

আসামী নুরুজ্জামান (৩৪), হৃদয় (১৯) ও সেলিম (১৯) বিজ্ঞ আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করে।

এছাড়াও পরবর্তীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামী রাকিবুল (১৯) কে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করলে

সেও নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করে।

পুলিশের চৌকস আভিযানিক দলের সদস্য:
পুলিশের আভিযানিক দলকে সার্বক্ষণিক সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করছিলেন পাবনা জেলার পুলিশ সুপার জনাব মহিবুল ইসলাম খান, বিপিএম।

এছাড়া টিমে ছিলেন জনাব স্নিগ্ধ আক্তার , অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন), জনাব মোঃ মাসুদ আলম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ),

জনাব সজীব শাহরীন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার চাটমোহর সার্কেল, অফিসার ইনচার্জ আনোয়ান হোসেন,

পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব হাসান বাসির, তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিরস্ত্র)/ সুব্রত কুমার ঘোষ,

এসআই (নিরস্ত্র)/ সুব্রত কুমার দাস সহ চাটমোহর থানার সকল অফিসার ফোর্সবৃন্দ।

/ শেখ তারেক রহমান

http://shopno-tv.com, http://thebanglawall.com
প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।
www.thebanglawall.com
দ্যা বাংলা ওয়াল, The Bangla Wall, www.thebanglawall.com
দ্যা বাংলা ওয়াল, The Bangla Wall, www.thebanglawall.com
www.thebanglawall.com
www.thebanglawall.com

পাবনা ডিষ্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট

Sheikh Tarek Rahman Father's Name: Late Sheikh Abdur Rouf Mother's Name: Begum Lotifun Nesa Date of Birth: 01 February 1973 Blood Group: B+ (ve) National ID No: 911 661 1212 Contact No. +8801712171823 Alternative Contact No. +8801720804120 E-mail: tareqpabna1973@gmail.com News Editor The Weekly Nonya Andolon, News Editor, Inter News Service the Daily Industry District Correspondent, The Daily Bartoman, Join Secretary Reporter unity, Pabna

One thought on “পাবনা চাটমোহরের চাঞ্চল্যকর ইমন হত্যার রহস্য উন্মোচন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *