কালিগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ! অর্ধলক্ষ টাকার বাণিজ্য
কালিগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ! ঘটনা ধামাচাপা দিতে অর্ধলক্ষ টাকার বাণিজ্য।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাবু (২৩) নামে এক কবিরাজের বিরুদ্ধে।
সে উপজেলার বরেয়া গ্রামের মৃত বয়ে গাজীর ছেলে।
ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে অর্ধ লক্ষ টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় দফাদার তপন এবং ইউ.পি সদস্য আবু বক্কারের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ১২টার সময় উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের ঋষি পাড়া ঘুষুড়ী গ্রামে।
তবে এত বড় ঘটনা ঘটলেও জানেনা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশ।
বিষয়টি ফাঁস হওয়ার খবর পেয়ে শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর)সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে
ঘুষুড়ি গ্রামের ঋষিপাড়ার ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা সাংবাদিকদের জানান,
কথিত কবিরাজ বাবুর সঙ্গে তাদের পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গত শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বাবু কবিরাজ তাদের বাড়িতে আসে।
এসে বলে তোমাদের মেয়ের (ঘুষুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী) উপরি দোষ আছে,
এক্ষুনি ভালো চিকিৎসা ঝাড়ফুঁক না করালে মেয়ে বাঁচবে না বলে ভয় দেখায়।
তখন আমরা বলি গরিব মানুষ এত টাকা কোথা থেকে পাব তখন বাবু কবিরাজ বাজার হতে কিছু মাছ তরকারি কিনে আমাদের বাড়িতে দেয়।
এরপর মেয়েকে চিকিৎসার নাম করে তার মোটরসাইকেল যোগে আমার মেয়ে ও আমার ভাইয়ের মেয়েকে সাথে নিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
তার বাড়িতে নিয় খাবারের সাথে ঘুমের চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে দেয়।
তারা ঘুমিয়ে পড়লে বাবু কবিরাজ তার যৌন ক্ষুধা চরিতার্থ করার জন্য আমার মেয়েকে পায়ুুপথে ধর্ষণ করে।
ঢাকার ইলিশ রফতানির শর্তে শঙ্কায় কলকাতা
পরবর্তীতে ওইদিন বিকাল ৪ টায় আমার মেয়ে ঘুম থেকে উঠে প্রচন্ড ব্যথা যন্ত্রনায় কান্নাকাটি শুরু করে।
এসময় কবিরাজ মোটরসাইকেলযোগে তাদেরকে আমার বাড়িতে পৌছে দিয়ে দ্রুত চলে যায়।
বাড়িতে আসার পরেই আমার মেয়েকে আমি অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পাই।
তাৎক্ষণিকভাবে তারালী বাজার গ্রাম্য ডাক্তার নাজমুছ শাহাদাৎ রাহান এর নিকটে নিয়ে যায়।
সেখান থেকে ঔষধ কিনে নিয়ে এসে মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসি।
বাড়িতে এনে চাম্পাফুল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আবু বক্কর এর নিকট আমি সবকিছু খুলে বলি।
তখন তিনি চেয়ারম্যান সাহেব কে না জানিয়ে দফাদার তপনকে সংবাদ দিয়ে তার পরদিন বাবুকে খবর দিয়ে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে।
বাড়িতে এনে মেম্বর, চৌকিদার সহ স্থানীয় একটি গ্রুপ কবিরাজ বাবুকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে মোটরসাইকেল আটকে ৫০ হাজার টাকা না দিলে তাকে থানায় দেওয়ার ভয় দেখায়।
পরে উপায়ন্তর না পেয়ে কবিরাজ বাবু তারপরের দিন ৫০ হাজার টাকা মেম্বর আবু বক্কার এবং দফাদার তপনের হাতে দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ছাড়া পায়।
রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গায় জুয়া খেলা অবস্থায় ৮ জুয়াড়ি আটক
কালিগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী এরপর মেম্বর এবং তপন দফাদার এসে আমাদের হাতে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে
১৫ হাজার টাকা তুলে দিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে কাউকে কিছু জানাতে নিষেধ করে।
আমরা সেই ভয়ে কাউকে কিছু না বলে অসুস্থ মেয়েকে বাড়িতে রেখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
আমরা থানায় যেতে চাইলে তপন দফাদার ও মেম্বর আবু বক্কার এবং তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা আমাদের বলে থানায় মামলা করতে গেলে
তোমার মেয়ের বিয়ে হবে না এবং তোমার মেয়েকে কাটা ছেড়া করবে। কাউকে কিছু না বলে বাড়িতে চুপচাপ থাকো। কেউ আসলে কারো সাথে কথা বলবে না।
বিষয়টি জানার জন্য কবিরাজ বাবুর বাড়িতে একাধিকবার গেলেও দেখা পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন গত কয়েকদিন ধরে কবিরাজ বাড়িতে থাকেনা।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে সে সরল মনে সমস্ত ঘটনা অকপটে বলে যায়। (যা ভিডিও আকারে সংরক্ষিত আছে)।
একইভাবে তার (মা-বাবা এবং দাদির বক্তব্য ভিডিও আকারে সংরক্ষিত আছে)। বর্তমান ওই স্কুলছাত্রী ভয়ে আতঙ্কে ভালো চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে দিন কাটাচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য চাম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদে গেলে দফাদার তপনকে জিজ্ঞাসা করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলে,
ছাত্রীর বাবাকে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা হয়েছিল। পরে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি আমি থানার উপ-সহকারী পরিদর্শক তরুণ বাবুকে জানিয়েছিলাম। তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।
তালা পুনঃনির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন
পরে আমি মেম্বরকে জানালে মেম্বর এসে মীমাংসা করে দেন।
সে একজন দফাদার হয়ে থানায় না জানিয়ে মীমাংসা করতে পারেন কিনা এ প্রশ্নে সে কোন উত্তর না দিয়ে
বিষয়টি খবরের কাগজে না লেখার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করতে থাকেন।
এবিষয়ে ইউ.পি সদস্য আবু বক্কারে নিকট জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দফাদার তপন আমাকে বিষয়টি জানালে
আমি ঘটনাস্থলে গেলে তারা আমার মাধ্যমে রবীন্দ্র এবং তার স্ত্রীর হাতে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে মিমাংসা হয়ে গেছে বলে আমাকে জানান।
বাকি থানা ফাঁড়ি তপন দেখবেন বলে কবিরাজকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
একটি ধর্ষণের ঘটনা ইউ.পি সদস্য হয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে জরিমানা দিয়ে মিমাংশা করতে পারেন কিনা
এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি ইউপি সদস্য আবু বক্কার।
চম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক গাইন এর নিকট ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন
আমি আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। তখন পাশে দাঁডানো তপনকে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এতবড় একটা ঘটনা আমাকে জানালে না কেন?
কালিগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী এ বিষয়ে কোন জবাব না দিয়ে ভুল স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে থানার উপ-পরিদর্শক তরুণের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন একদিন তপন দফাদার ফোন করে বলে
ছোট একটি নারী ঘটিত ব্যাপারে মিমাংশা করেছে বলে জানিয়েছিলো। এতবড় ঘটনা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নাই।
থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নিকট জিজ্ঞাসা করলে বিষটি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান।
এব্যাপারে কোনো অভিযোগ কেউ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।




Pingback: কালিগঞ্জে ফেনসিডিলসহ আটক ১ - দ্যা বাংলা ওয়াল