রাজশাহীতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির অপেক্ষায় স্বজনেরা”
রাজশাহীতে আলোচিত শাহেন শাহ হত্যা মামলায় “আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির অপেক্ষায় স্বজনেরা”।
রাজশাহী কোর্ট কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিক্ষানবিশ আইনজীবী শাহীন আলম ওরফে
শাহেন শাহ হত্যা ঘটনার আট বছর কেটে গেলেও বিচার হয়নি এখনো।
রায়ের অপেক্ষায় দিন গুণছেন পরিবারের সদস্যরা। এরই মাঝেঁ স্বাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে হত্যা মামলার রায় দশবার পিছিয়ে এগারো বারে পড়েছে।
সর্বশেষ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য আছে।
একের পর এক চাঞ্চল্যকার এ হত্যা মামলার রায় পেছানোর ঘটনায় মামলার ভবিষ্যত নিয়ে এখন উদ্বিগ্ন শাহিন শাহ’র পরিবার।
নিহত শাহিন শাহ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্যানেল মেয়র-২ ও এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রজব আলীর ছোট ভাই।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট রাসিকের ১নং ওয়ার্ডের তৎকালীন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মনসুর রহমানের নেতৃত্বে
৩০-৩৫ জনের সন্ত্রাসী দল ক্লাব মোড়ের পুকুরপাড়ে চক্রাকারে ঘিরে সশস্ত্র অবস্থান নেয়।
এ সময় শাহেনশাহ মটরসাইকেল যোগে ক্লাব মোড় অতিক্রম করার সময় সন্ত্রাসীরা চারদিক থেকে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মুহূর্তের মধ্যে সন্ত্রাসীদের চাইনিজ কুড়াল, রামদা ও চাপাতির কোপে শাহেন শাহর দেহ ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা তাতেও ক্ষান্ত হয়নি।
শাহেন শাহর ক্ষতবিক্ষত দেহটি পুকুরে নিক্ষেপের পর বীরদর্পে এলাকা ছেড়ে যায়।
রাসিকের উপ-নির্বাচন উপলক্ষে রাসেলের পক্ষে পথসভা
কেশবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ঠিক পেছনেই ভয়ংকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও সে সময় পুলিশ টু শব্দটি পর্যন্ত করেনি।
নিহত শাহেন শাহর ছোট ভাই ও মামলার বাদী রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আকতার নাহান বলেন,
২০১৩ সালের ১৫ জুন) রাজশাহী সিটির নির্বাচন হয়। আমার আরেক ভাই রজব আলী কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
তবে ভোটে তিনি হেরে যান। প্রধান ঘাতক মনসুর রহমান কাউন্সিলর হন। ঘটনার সূত্রপাত নির্বাচন নিয়ে।
সন্ত্রাসীরা পরিকল্পনামাফিক আমার ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। দুঃখের বিষয়, আমরা এখনো ভাই হত্যার বিচার পাইনি।
বিচারের আশায় এখনো কাঁদে শাহেন শাহর দুই সন্তান। উপরন্ত সন্ত্রাসীরা এখন দিনের আলোয় বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়ানো ও
একের পর এক মামলার রায় পেছানোর ঘটনায় মামলার ভবিষ্যত নিয়ে এখন আমরা উদ্বিগ্ন।
নিহত শাহিন শাহ স্ত্রী মোছা শ্যামলী খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে দিনের আলোয় মনসুর তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে হত্যা করেছে
আট বছর হলো এখনও বিচার পাইনি তাহলে আমার ছেলে সাজিদ এখন কলেজে পড়ে আসামিদের ভয়ে ছেলেকে
কলেজে পাঠাতে নিজেকে নিরাপত্তাহীন মনে করি এখনো আশায় আছি আমরা ন্যায়বিচার পাব।
শাহিন শাহ হত্যা ঘটনায় আসামিদের বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে জানা যায়, শাহিন শাহ হত্যা মামলার এক নম্বার আসামি মনসুর রহমান
রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
রাজশাহীতে ৪০ লক্ষ টাকার হেরোইনসহ ১ জন আটক
বিভিন্ন তথ্য মতে ২০০৪ সালে বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে দিনের আলোয় প্রকাশ্যে বিএনপি জামাতের যোগিতায় জি এম বি জঙ্গি সংগঠন
নেতা বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে অসংখ্য জঙ্গি বাহিনীর সদস্যরা বর্তমান রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাংসদ ও
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বাসায় হামলা চালায়।
সে সময় বিএনপি নেতা মনসুর রহমান এক নম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন এবং হামলাকারীদের সার্বিক সহযোগিতা করেন বলে জানা যায়।
এছাড়া মনসুরের বিরুদ্ধে রয়েছে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ হত্যা মামলারও চার্জশিটভুক্ত আসামি ও পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলাসহ
রাজশাহীতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির একাধিক মামলা রয়েছে তার নামে। এদিকে শাহিন শাহ হত্যা মামলার আরেক আসামি বিপ্লব। সেও জেলা বিএনপির কর্মী।
আসামি হাসান নগর যুবদলের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক। হাসানের আরেক সহযোগী বিএনপি কর্মী টিয়া আলমও মাদক মামলার আসামি।
এরা দুজনেই বর্তমানে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। মামলার আরেক আসামি সাইরুল। সদ্যগঠিত কাশিয়াডাঙা থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক।
তিনি রাজশাহী আদালতে বোমা হামলা মামলার এক নম্বর আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নাশকতার মামলাও।
সাইরুলের চাচাত ভাই মাসুদ জামায়াতের ক্যাডার। মামলার অপর আসামিরাও বিএনপি এবং জামায়াতের রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
তাদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ মাদকের একাধিক মামলা ও বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
এরা মনসুর বাহিনীর সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী বলে সবার কাছে পরিচিত।
শাহেন শাহ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা দশবার পিছিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)
অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে আদালতগুলোর কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে।
এ কারণে রায় লেখার কাজও শেষ হয়নি। আশা করি, আগামী ধার্য তারিখে এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একরামুল হক-২ বলেন, আসামি পক্ষের নানা কৌশলের কারণে মামলাটির বিচার কাজ শেষ হতে সময় লেগেছে।
তারপরও রায় ঘোষণার দিন বারবার পিছিয়ে যাওয়ায় শাহেন শাহর স্বজনরা কিছুটা হতাশ।
আশা করব আগামী তারিখে বিজ্ঞ আদালত যেন আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।




Pingback: শার্শায় কেক কেটে প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন পালন - দ্যা বাংলা ওয়াল
Pingback: যশোরে সড়কে নিভে গেলো ছাত্রলীগ নেতার প্রাণ - দ্যা বাংলা ওয়াল