শ্রীপুরে রাস্তায় গর্ত ও দেয়াল, দিশেহারা মানিক
শ্রীপুরে রাস্তায় গর্ত ও দেয়াল, সৎ ভাইদের কাণ্ডে দিশেহারা মানিক। গাজীপুরের শ্রীপুরে পৈতৃক সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার পর গর্ত করে ও
ইটের দেয়াল দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ উঠেছে সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত আবদুল কাদির ওরফে সুরুজ মিয়ার
ছেলে শহিদুল ইসলাম মানিক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন তার সৎ ভাই নূরুল আমিন, মাহফুজুর রহমান, মিজানুর রহমান সাখাওয়াত ও সৎমা রোকেয়া বেগম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১ হইতে ৩নং বিবাদী মানিকের সৎ ভাই এবং ৪নং বিবাদী সৎ মা।
উক্ত বিবাদীগণ মানিক ও মানিকের স্ত্রী সন্তানদেরকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে জমি জবরদখলের পাঁয়তারা করছে।
সৎ ভাইদের অত্যাচারে মানিক স্ত্রী সন্তান নিয়ে ১৫-২০ বছর বাড়ির বাহিরে অবস্থান করেন।
শহিদুল ইসলাম মানিকের বাবা মৃত আব্দুল কাদির ওরফে সুরুজ মিয়া একজন মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন ।
এ সুযোগে মানিকের সৎ ভাই নুরুল আমিন সহ বিবাদীগণ ধাপে ধাপে সুকৌশলে পিতার নিকট থেকে জমি জমা তাদের নিজ নামে লিখিয়া নেয়।
এতে সম্পত্তির অংশ থেকে বঞ্চিত হয় মানিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরুল আমিন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ঢাকা বড় মগবাজার হেড অফিসের হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তা হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সৎ ভাই এর উপর বিভিন্ন সময় নানাভাবে নির্যাতন করতো।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব তার। তাকে কেউ কিছু বললেই থানা পুলিশের ভয় দেখায়।
এ জন্য এলাকার লোকজন তাদের পারিবারিক বিবাধে কেউ এগিয়ে আসতে রাজি হয় না।
সৎ ভাইদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মানিক স্ত্রী ও সন্তান ১৫ বছরের বেশি সময় বাড়ির বাহিরে অবস্থান করেন।
বাড়িতে আসলে সৎ মা ও সৎ ভাইদের নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করতে হত।
মানিকের পরিবার এর প্রতিবাদ করতে গেলে নুরুল আমিন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির
সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ক্ষমতার দাপট দেখাতো।
গত বছরের নভেম্বরে মানিক সৎ ভাইদের কাছে সম্পত্তির হিসাব চাইলে তারা তাকে মারধোর করে এবং
বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তায় শ্রীপুরে রাস্তায় বড় একটি গর্ত করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
এক দিকে মানিক বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত অপর দিকে সৎ ভাইদের কাছে বাবার সম্পত্তির হিসাব চাইলে গেলে তার উপর বিভিন্ন নির্যাতন শুরু হতো।
নবীগঞ্জে মেয়র কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল
উক্ত বিষয়ে প্রতিবাদ করলে বিবাদীগণ তাহাকে কোন অবস্থাতেই বাড়িতে বসবাস করতে দিবেনা বলিয়া ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করিতে থাকে।
সেই সাথে বাড়ির পূর্ব পাশে চলাচলের রাস্তার উপর বিশাল গর্ত করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়।
এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় মানিকের সাথে।
তিনি জানান তার তিন সৎ ভাই ও সৎ মা মিলে বহু দিন ধরে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত ও বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ পায়তারা করছেন।
সর্বশেষ তার বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তায় গর্ত করে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
মানিক আরো জানাব তার সৎ ভাই নুরুল আমিন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ঢাকা বড় মগবাজার হেড অফিসের একজন হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা।
নুরুল আমিনের কথা তার বাবা বিশ্বাস করতো।
সেই সুযোগে বাবার মোট ১৫২ শতাংশ সম্পত্তির ৩৫ শতাংশ রমজান আলী নিকট বিক্রি করেন।
রোকেয়া বেগম ( স্বামীর নিকট থেকে ক্রয় করে) ১৭.৫ শতাংশ এবং ফজলুল হক ১৭.৫ শতাংশ, নুরুল ইসলাম ( নুরু মিয়া) নামে ১৭.৫ শতাংশ এবং
তিন ভাই (নুরুল আমিন, মাহফুজ, সাখাওত) প্রত্যেকের নিজ নামে মেট ৩৪.৫ শতাংশ জমি দলিল করানো হয়।
এদিকে সৎ ভাই হিসেবে মানিক পাই ১০.৫ শতাংশ। অবশিষ্ট (১৯.৫) শতাংশ সম্পত্তি কোন সুরাহা করা হয় নাই।
এ সবের হিসাব চাওয়ায় তাদের কাছে যেন কাল হয় মানিক। বাবার কাছ থেকে প্রাপ্ত ১০.৫ শতাংশ জমি মানিকের নামে নামজারি করার আগেই
নুরুল আমিন সু-কৌশলে তাদ উকিল শ্বশুরের নামে নাম জারি করায়া ফেলে।
রমজান আলী ও ফজলুল হক হচ্ছেন নুরুল আমিনের আপন মামা।
বাবার নিকট থেকে দুই মামার নামে নামমাত্র দলিল করিয়ে নিজেদের ভোগদখলে রাখা হয়েছে ৫২. ৫ শতাংশ জমি। মানিকে ঠকানোর নতুন এক কৌশল।
এ বিষয়ে মানিকের চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ বলেন,
এ রাস্তাটি দীর্ঘ দিনের পুরাতন একটি রাস্তা। আমরা এলাকাবাসী ২৫-৩০ বছর ধরে এ রাস্তা দিয়ে বাড়িতে আসা যাওয়া করি।
শ্রীপুরে রাস্তায় মানিকের বাড়ির সামনে বড় একটি গর্ত করার কারণে সমাজের মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছে না।
নড়াইলে কিডনি রোগিদের জন্য ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু
আমি আশা করছি খুব দ্রুত এর সঠিক সমাধান হবে। নাম প্রকাশ করার না শর্তে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক জানান, মানিক ছোট সময থেকে অনেক কষ্ট করতো।
সৎ ভাইদের অত্যাচারে তাকে বহু বছর বাড়ির বাহিরে অবস্থান করতে হয়েছে।
জাল জালিয়াতি করে বাবার সম্পত্তি থেকে মানিকে বঞ্চিত করার পায়তারা বহু দিন ধরে।
এখন তার বাড়ির সামনে ২০-২৫ ফিট গর্ত করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে মানিকের সৎ ভাই মিজানুর রহমান সাখাওত বলেন, এ রাস্তাটি বাপ দাদার তৈরি রাস্তা।
দীর্ঘ দিনের তৈরি পুরাতন একটি রাস্তা। এ রাস্তা বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু তার দাবি বসতভিটার মাঝখান দিয়ে রাস্তা দেওয়ার।
এ বিষয়ে মানিকের সৎ ভাই নুরুল আমিনের সাথে বারবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায় নি।
বরমী ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করেছি।
কিন্তু তারা কথা না মানায় ব্যর্থ হয়েছি।শ্রীপুর থানার এসআই সাদিক বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।
দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় একাধিকবার বসা হয়েছিল। রাস্তা বন্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।



