নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেড়া ও সাঁথিয়ায় চলছে প্রাইভেট বাণিজ্য, এক কক্ষে ৩০-৩৫ জন
দেশে মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা তা উপেক্ষা করে কোনো প্রকার সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই নতুন কৌশলে প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব শিক্ষক ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে একসঙ্গে ৩৫ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে একেকটি ব্যাচে পড়াচ্ছেন। এতে দুই উপজেলায় করোনা সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
জানা গেছে, সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করে দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে কাশিনাথপুর এলাকার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলা অংশে প্রকাশ্যে প্রাইভেট পড়ানো হচ্ছে। কাশিনাথপুর এলাকাটি বেড়া ও সাঁথিয়া দুই উপজেলার অংশ নিয়ে জনবহুল স্থানে অবস্থিত। এই এলাকার আশেপাশে চারটি কলেজসহ প্রায় ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে সেখানে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। এলাকাটি উপজেলা সদর থেকে দূরে হওয়ায় প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে নির্ভয়ে শিক্ষকেরা প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেখা গেছে, শুধু কাশিনাথপুরেই অন্তত ২০ জন শিক্ষক বাসা ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রাইভেট পড়ানোর জন্য তারা যে কক্ষগুলো ভাড়া করেছেন তাতে ১৫ থেকে ২০ জনের বসার ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে অতিরিক্ত বেঞ্চ ফেলে সেগুলোতে গাদাগাদি করে ৩৫ থেকে ৪০ জন শিক্ষক বসানো হচ্ছে। এতে বজায় থাকছে না নূন্যতম স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব।
শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষকেরা প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলব্যাগ নিতে নিষেধ করছেন। এর পরিবর্তে চটের ব্যাগ বা পলিথিনে বই নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাশিনাথপুর নয়াবাড়ী গ্রামের দুজন অভিভাবক জানান, তাদের বাড়ির কাছে সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষক প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রতি ব্যাচে একসঙ্গে ৩০ থেকে ৩৫ জনকে বসিয়ে প্রাইভেট পড়ানোয় সামাজিক দূরত্ব বলে কিছুই থাকছে না। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
হরিদেবপুর এলাকায় প্রাইভেট পড়ান এমন একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে শিক্ষকেরা জানান, অনেকেই প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। তাই তারাও পড়ান। এ ছাড়া অভিভাবকেরা প্রাইভেট পড়ানোর জন্য অনুরোধও করছেন।
বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার দুই ইউএনও যথাক্রমে আসিফ আনাম সিদ্দিকী ও এসএম জামাল আহমেদ জানান, প্রাইভেট পড়ানোর ব্যাপারে তারা অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে তারা জানান।
করোনাকালেও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেড়া ও সাঁথিয়ায় চলছে প্রাইভেট বাণিজ্য, এক কক্ষে ৩০-৩৫ জন পড়ছে
/ শেতার