রংপুরে দুস্থদের ভিজিডির চাল চাকরিজীবির ঘরে
রংপুর ব্যুরো: রংপুরে দুস্থদের ভিজিডির চাল চাকরিজীবির ঘরে।
করোনা ভাইরাসের মধ্যে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত
দুস্থদের মাঝে সরকারি ভিজিডি কার্ড নিয়ে অনিয়ম-র্দুনীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিডি কার্ড প্রভাবশালীদের নামে তিনি নিজেই তালিকায় নিদ্রিষ্ট করে দিছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক, চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী, ছাদপিটা বাড়ি, ইউনিয়ন পরিষদের
মেম্বারদের পরিবারের কারো নামে এমন কার্ড ইস্যু করার কোনো বিধান নাই।
সুধু তাই নয় ওই ইউপি,র সকল সদস্যদের সাথে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান দুই শতাধিক দুস্থদের বরাদ্দকুত ভিজিডি র্কাড দিয়েছেন প্রভাবশালীদের নামে।
যাদের অনেক ধন সম্পদ থাকার পরেও প্রতি মাসে ভিজিডির ৩০ কেজি চাল তুলে আসছেন তারা।
ইউপি সদস্যরা গ্রামের সকলকে চেনে এবং জানে। কারণ হলো যে, কার বাড়ি কোথায় ইউপি সদস্যরা জেনে শুনেই দিয়েছে তাদের চুড়ান্ত নামের তালিকা।
ওই তালিকায় সকল সদস্যদের সিলসহ স্বাক্ষরও রয়েছে। চুড়ান্ত নামের তালিকায় নেই কোন পিতার নাম ও স্বামীর নাম।
তাহলে তারা কিভাবে পেলো প্রতি মাসে ভিজিডির ৩০ কেজি চাল। এমন অনিয়ম-র্দুনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার রংপুর সদর উপজেলার ৪ নং সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয় দেখা যায়,
পিতার/স্বামীর নাম নেই, এমন বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ মিলেছে। যারা ভিজিডির র্কাড পেয়েছে তারা হলেন শিক্ষক,চাকরিজীবী,ড,প্রভাবশালীব্যাক্তি।
এদিকে,ওই ইউনিয়নের কয়েকজন নাম প্রকাশে অন ইচ্ছুক, তারা বলেন এখানে যা কিছুই হোক না কেন ‘ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজসেই হয়।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় সব সদস্যই নিজের বা পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে ভিজিডি কার্ড ইস্যু করে সরকারি চাল
নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন বলে দাবি তাদের।
আবার তাদের বিরুদ্ধে অন্যের নামে ইস্যু করা কার্ডও নিজের কাছে রেখে দুস্থদের বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে।
নড়াইলের তিন বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু শোকের ছায়া পরিবারে
এভাবে দেখলে ইউনিয়নের প্রায় সব সদস্যই কোনো না কোনোভাবে সরকারি এসব নানা সুবিধা নিচ্ছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পশু চিকিৎক একরামুল বলেন,আগে চাকরি করতাম,এখন ওষুধ এর দোকান আছে,
চেয়ারম্যান সাহেবকে বলছিলাম আমার স্ত্রী শিরিনা বেগমের নামে একটি ভিজিডি র্কাড করে দেওয়ার জন্য।
তারপর তিনি আমার বউ এর নামে একটি ভিজিডি কার্ড করে দিয়েছে,ছাদপিটা বাড়ি থাকলে কি আমরা বড় লোক,
আমরা কি গরীব না, সরকারের জিনিস,তারাও খাবে আমরাও খাবো। ভিজিডি কার্ড নং-৩২।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইস্যুকৃত ৮ নম্বর ভিজিডি কার্ডের অনুকুলে দেওয়া মাসিক ৩০ কেজি
চাল তুলে আসছেন স্বীকার করে মোছা: সায়মা খাতুন বলেন,নিয়ম না থাকলেও
আমার উপর চেয়ারম্যান সাহেবের একটু নেক নজর আছে-তাই কোনো সমস্যা হয় না।
আমার স্বামীর দুইটা ট্র্যাকট্টর আছে,মেম্বারকে বলার পর তিনি আমাকে একটা ভিজিডির র্কাড করে দেয়,
আমরা চার বস্তা ভিজিডির চাউল পাইছি। ভিজিডি কার্ড নং-৮।
শ্রীমতি জোসনা রানী জানান,আমি দুইদন জমি আবাদ করি এবং শাক সবজি,আলু,ভিট্টা,ধান চাষ-আবাদ করি। এবার ২৫ মন ধান পেয়েছি।
সোহল চেয়ারম্যান আমাকে ভিজিডি কার্ড দিছে। আমি ভিজিডি র্কাড সোবাহানের কাছে সেই ৫ হাজার টাকা বিক্রি করে দিয়েছি। ভিজিডি কার্ড নং-৪।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে,দক্ষিণ অযোদ্ধাপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম নিসবেতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজর সহকারী শিক্ষক।
তার স্ত্রীর মোছা: ফরিদা পারভীন এর নামের ভিজিডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। ভিজিডি কার্ড নং-৩৬।
এ ব্যাপারে ৪ নং সদ্যপুস্করনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান সোহেল রানা বলেন, এন আইডি কার্ডে নাম বুঝা যায়নি।
অর্স্পশ্য নাম থাকার কারনে আমার উদ্যেক্তা নাই কথাটা ব্যবহার করেছে। এজন্য এমন টা হয়েছে।
এখন ডিজিটালের যুগ, অনেকে অন লাইনে আবেদন করেছে, এর মধ্যে কয়েক জন চাকরিজীবির র্কাড হয়েছে।
ইউনিয়ন পর্যায়ে ভিজিডি উপকারভোগী বাছাই কমিটি গঠন করে তালিকা তৈরী করা হয়।
রংপুরে দুস্থদের ভিজিডির চাল পরে এসব নামের তালিকায় স্বাক্ষর করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
রোজিনাকে হেনস্তা সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নিন্দা
“তাছাড়া নিয়ম না থাকলে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসব কার্ড অনুমোদন দিলেন কীভাবে?”
এমন প্রশ্নও ছুড়ে দেন ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা।
রংপুর সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা/প্রোগ্রাম অফিসার হাবিবা হেলেন জানান,
কোনো জনপ্রতিনিধি অথবা সরকারি কর্মচারী তার নামে ভিজিডিসহ এ ধরনের কার্ড ইস্যু করার নিয়ম নেই।
অনলাইনে সাধারন মানুষ আবেদন করার পর চেয়ারম্যান নিজে তালিকা থেকে র্মাক করে চিনিত করেছেন।
এর পর আমাদেরকে ভিজিডির র্কাড তৈরি করতে বলছে এবং সেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যরা
তাদের কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদেরকে তালিকা প্রদান করেন।
সেই তালিকা দিয়ে আমরা ভিজিডি র্কাড প্রদান করি, কেননা আমরা তো আর সেই এলাকার মানুষদেরকে চিনি না। ,
কে ডাক্তার,কে চাকরিজীবি আর কে ব্যবসায়ী,তবে আমাদের কাছে যদি লিখিত অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা সেই র্কাড বাতিল করে দিবো।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার/উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ইসরাত সাদিয়া সুমি জানান,
ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা আমাকে না জানায় মাইকিং করছে এবং আমি মনে করি যে সে নিজে থেকে এইসব কাজ
ইচ্ছাকৃত ভাবেই করছে,তবে আমার কাছে অভিযোগ আসছে, আমি খুব তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে তদন্ত করে ঢাকায় রিপোট পাঠাবো এবং
সে যদি সত্যিকার অর্থে অন্যায় করে থাকে তাহলে অব্যশই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রংপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি জানান,ইউনিয়ন কমিটি যাছাই বাছাই করে তালিকা করা উচিৎ ছিলো।
কিন্তু শিক্ষক, চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী তাদের নাম তালিকা করা হয়েছ, যাছাই বাছাই কমিটির যে প্রধান তিনি এই সব দেখেছেন এবং
নিজেই দেখে সাক্ষর করছেন, আর আমি অনেক জায়গায় দেখলাম তিনি নিজেই তালিকায় নিদ্রিষ্ট করে দিয়েছেন।
এরা ভিজিডি র্কাড পাবে, এটা আসলেই অন্যায়, যাদের ৫শতকের উপরে জমি আছে তারা কখনোই
ভিজিডি র্কাড পাওয়ার যোগ্য নয়, আর চাকরি জীবি তো প্রশ্নই ওঠে না।
উল্লেখ্য যে ২০১৯ সালে ভিজিএফএর চাল চুরির দায়ে রংপুর র্যাব ১৩ ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৫।
রংপুরে দুস্থদের ভিজিডির চাল ওই মামলায় জেলহাজতও গিয়েছেন তিনি। পরে জামিনে বেড়িয়ে ক্ষমতার দাপটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।




Pingback: বন্ধু ভারতের বিপদে চার ট্রাক ওষুধ সামগ্রী পাঠাল বাংলাদেশ - দ্যা বাংলা ওয়াল