শার্শার পল্লীতে কিশোর গ্যাং এর মাদকের রমরমা ব্যবসা
শার্শার পল্লীতে কিশোর গ্যাং এর সহযোগিতায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা।
যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী গ্রাম সংলগ্ন বেলতলা বাজারে হাত বাড়ালেই মিলছে ভয়ানক মাদক।
যার অন্যতম নৈপথ্যে ভূমিকায় এলাকার উঠতি বয়সী কিশোর গ্যাং। বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এলাকার দক্ষিণ পাশে মাত্র ২ কিলোমিটার
রাস্তা গাড়িতে গেলে ৭ থেকে ১০ মিনিটের পথ, উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী বেলতলা বাজার এলাকায়
প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে মাদক ব্যবসা চলছে কিশোরদের দিয়েই।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাত যত গভীর হয় ওই এলাকায় মাদক ব্যবসা তত জমজমাট হয়।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত আর সেই রাতের আধারটাকে পুজি করে বাগুড়ী দক্ষিণপাড়া বেলতলা মোড় সংলগ্ন সেই মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ির চারপাশ ঘিরে
কয়েকজন কিশোররা চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা মাদকের ব্যবসা। বেশির ভাগই ১৪ থেকে ১৫ বা ১৫ থেকে ১৭ বছরের।
গাঁজার ছোট পুরিয়া অর্থ্যাৎ এক পুড়িয়া ২০ টাকা আর প্যাকেট ১০০ টাকা, বড় প্যাকেট ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
তা ছাড়া এখানে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় এক পিচ ইয়াবা বিক্রি হয়।
এসব মাদক স্পট বর্তমানে যারা পরিচালনা করছে তারা এর আগে একাধিকবার থানা পুলিশের হাতে আটক হলেও পুনরায় জেল থেকে বেরিয়ে এসে
মাদক কেনা-বেচার সাথে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন এসব স্পট থেকে বিভিন্ন ক্রেতার কাছে মাদক সরবরাহ করা হচ্ছে। পরিচিত ক্রেতারা ফোনে
অর্ডার দিচ্ছে, সেই অনুযায়ী তাদের দেওয়া ঠিকানায় মাদক পৌঁছে দিয়ে আসছে বিক্রেতারা।
রাজশাহী রেলওয়ে অটোমেটিক ওয়াশিং প্ল্যান্টের উদ্বোধন
এর জন্য টাকা কিছুটা বেশি নেওয়া হয়। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বিষয়টি জেনেও রহস্যময় কারনে তাদেরকে গ্রেফতার করছেনা।
তাদের খুটির জোর কোথায় সেটা এখন এলাকার মানুষের মধ্যে ঘুরে ফিরে আলোচনায় আসছে।
কিন্তু পুলিশের গাড়ি এলে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই সতর্ক হয়ে যায়। বা যার যার মত তারা গা ঢাকা দেয়।
গাড়ি দেখলে বিক্রেতারা হাঁকডাক দেন না ক্রেতারাও দ্রæত পালিয়ে যায়। তাঁদের ধারণা, গাড়িতে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারে।
এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের সতর্ক করার কাজটি করে থাকে কিশোর দল।
লাভজনক এই ব্যবসায় কিশোররাই প্রধান ‘হাতিয়ার ও অন্যতম টার্গেট। বাগুড়ী প্রাইমারি স্কুল মাঠ পাড়া ভেতরের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
এই এলাকাটি কিশোররা মাদক খাওয়া ও বিক্রির নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে।
জানা গেছে বাগুড়ী বেলতলা বাজারের পাশে ইউনুস আলীর দোকানের পেছনে মাসুদের আমবাগান, মুড়ির মিল (আমিরির মোড়) পালপাড়া,
বাগুড়ী মাঠ পাড়া, মাঝের পাড়া, বাগুড়ী সীমানা ঘেষা বেত্রাবতী নদীর ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে মাদক ব্যবসায়ীরা।
টাকা-পয়সার ভাগ বটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা প্রায়ই ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, বেলতলা বাজারের একজন দোকান ব্যবসায়ী জানান, আমার ছেলের বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছর।
ময়লার স্তুুপ সরিয়ে ৩৫ দোকানীর মুখে হাসি ফুটেছে
দীর্ঘ ৪ বছর ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় মাদকের টাকার জন্য বাড়িতে ঝগড়া ও সংসারের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
কোন কিছুতেই আমার ছেলেটিকে ভালো করতে পারছি না।
তিনি বলেন, আজ যদি এলাকায় মাদক বেচাকেনা না হতো তাহলে আমার ছেলেটির এমন পরিনতি হতো না।
তবে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতে মাদক, অপরাধ ও যৌনতা একটি বৃত্তের মধ্যে থাকে। মাদক বহন করতে গিয়ে একজন কিশোর প্রথমে ওই প্যাকেট খোলে।
শার্শার পল্লীতে কিশোর গ্যাং সেখান থেকে সে মাদকাসক্ত হয়। মাদকাসক্ত হলে ওই কিশোরের টাকার প্রয়োজন হয়।
তখন ডিলাররা তাকে ২০টি গাঁজার পুড়িয়া বিক্রি করলে দুটি বিনা মূল্যে দেওয়ার কথা বলে।
এভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িত কিশোররা ভবিষ্যতে পেশাদার সন্ত্রাসী হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।
শার্শার বাগুড়ি বেলতলায় কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর মাদকের আখড়াকে অনতি বিলম্বে যদি ধ্বংস না করা হয় তাহলে
অতি অল্প সময়ের মধ্যে এলাকার শিশু, কিশোর, যুব সমাজ মাদকে নিমজ্জিত হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ফরিদ ভূইয়া জানান, মাদকের ব্যাপারে কোন আপোষ নেই।
মাদকের বিক্রির খবর শোনার পর আমরা বিভিন্ন স্পট গুলোতে অভিযানের পাশাপাশি নজরদারিতে রেখেছি।
আমি যতদিন এখানে আছি মাদকের কোন ছাড় হবেনা বলে জানান তিনি।