দেশব্যাপীব্যবসা বাণিজ্যশিরোনামসর্বশেষসব খবর

বেনাপোলে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বন্দর শ্রমিক সর্দারের বিরুদ্ধে: শ্রমিক সর্দার বলছে যড়যন্ত্র

বেনাপোল স্থলবন্দরের ইকুইপমেন্ট সাইটের গ্রæপ সর্দার রকিব উদ্দীন নকি মোল্লার বিরুদ্ধে সাধারণ শ্রমিকদের প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বেনাপোল বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক নেতারা বলছেন, আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিতে ২৫ দিন (৩০ মে) সময় নিয়েছেন অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার। যদি সময় মত টাকা পরিশোধ না করেন তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

ভুক্তভোগী বন্দর শ্রমিকরা জানান, ভারত থেকে যে পণ্য আমদানি হয় তা বন্দর থেকে খালাসের কাজ করে থাকেন শ্রমিকরা। বর্তমান বন্দরে পণ্য খালাসে কাজ করছেন প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক। এসব শ্রমিকদের নিয়ে দুটি হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন হয়েছে। এর একটি সংগঠন ৯২৫ যার সভাপতি রাজু আহম্মেদ এবং সম্পাদক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ওহিদুজ্জামান। অপরটি ৮৯১ এর সভাপতি কলি মোল্লা আর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানে।

৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলি মোল্লার চাচাত ছোট ভাই বেনাপোল পৌরসভার বড়আঁচড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা। সাধারণ শ্রমিকদের পণ্য খালাসের পারিশ্রমিকের একটি অংশ সঞ্চয়ী হিসাবে জমা থাকতো নকি মোল্লার কাছে। হিসাবে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৩২ লাখ টাকার মত। মাঝে শ্রমিকরা কয়েকবার এ টাকা চাইলে বিভিন্ন অজুহাতে দিনদিন ঘোরাচ্ছিলেন তিনি। বর্তমানে করোনার কারণে কাজ হারিয়ে সাধারণ শ্রমিকরা বেকার হয়ে অর্থ সংকটে পড়ে। এসময় তারা পাওনা টাকা নিতে ইউনিয়নে বিচার দেন। কিন্তু নকি মোল্লা আবারো টালবাহানা করলে সাধারন শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইউনিয়নে সালিশের মাধ্যমে ২৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবে সময় চেয়ে নেন নকি মোল্লা।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলি মোল্লা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মঙ্গলবার দুপুরে জানান, শ্রমিক সর্দার নকির কাছে প্রায় তিন বছর ধরে সাধারণ শ্রমিকদের পাওনা হয়েছে প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ টাকা। এসব টাকা শ্রমিকরা তার কাছে সঞ্চয় রেখেছিল। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে সালিশ হয়েছে। ২৫ দিনের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করবে সময় চেয়ে নিয়েছে নকি মোল্লা। আশা করছি তিনি সময় মত এ টাকা পরিশোধ করবেন।

সাধারণ শ্রমিকরা বলেন, প্রভাবশালী শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে তারা সব সময় শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন। প্রতিবাদ করলে কাজ হারাতে হয়। শ্রমিক নেতাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও যাদের রক্তে ঘাম ঝড়িয়ে অর্থ আয় হয় তাদের কোনো পরিবর্তন হয় না। সব সময় দুঃখ দুর্দশার মধ্যে তাদের দিন পার করতে হয়। এর আগেও প্রায় দুই কোটির মত টাকা আত্মসাত করে আর এক শ্রমিক নেতা। এ নিয়ে মামলা ও আইন আদালত হলেও প্রমাণের অভাবে অর্থ ফেরত পাননি শ্রমিকরা। আর সাধারণ শ্রমিকদের সে সাহস নেই শ্রমিক নেতাদের কাছে টাকা জমা রেখে প্রমাণ হিসেবে রশিদ চেয়ে নেবে। আর কিছু শ্রমিক নেতা সে সুযোগ গ্রহণ করে অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন।

অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা জানান, শ্রমিকদের কোনো টাকা তিনি আত্মসাৎ করেননি। বন্দর থেকে তাকে সরানোর জন্য এটি একটি পক্ষের ষড়যন্ত্র। টাকা পরিশোধ করা হবে মর্মে তাকে দিয়ে জোর করে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

/ মোজাহো

বেনাপোল (যশোর) করেসপনডেন্ট

Md. Jamal Hossain Mobile: 01713-025356 Email: jamalbpl@gmail.com Blood Group: Alternative Mobile No: Benapole ETV Correspondent

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *