বায়তুশ শরফ এলামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
“নবীন-প্রবীণ মিলিত হই, মোরা শরফিয়ান” স্লোগানকে সামনে রেখে গত ৭ ফেব্রুয়ারী, রোজ- শুক্রবার পর্যটনকেন্দ্র রাঙ্গামাটি-তে প্রায় ২৫জন কর্মরত শিক্ষকমণ্ডলী ও সহস্রাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদরাসা’র প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন বায়তুশ শরফ এলামনাই এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত “১ম মিলনমেলা ও প্রীতিভোজ-২০২০”।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বায়তুশ শরফ দরবারের মহান রূপকার, বায়তুশ শরফ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা, হাদীয়ে জামান শাহসূফী হযরতুল আল্লামা শায়খ আবদুল জব্বার (রহি’মাহুল্লাহ)’র কবর যিয়ারতের মাধ্যমে ২০টি বাসযোগে রাঙ্গামাটির রাঙ্গামাটি বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স’র উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হয়। রাঙ্গামাটি বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানমালায় ছিলো প্রাক্তন ছাত্রদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য, আগত শিক্ষকমণ্ডলীর শুভেচ্ছা বক্তব্য এবং সর্বশেষ আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র।
আলহাজ শামসুল হক ফাউণ্ডেশনের সম্মানিত চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জনাব মুহাম্মাদ নাসির উদ্দীনের সঞ্চালনায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য প্রদান করেনঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক, ড. মাহবুব কায়সার; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, ড. রোকন উদ্দীন; আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও এলামনাইয়ের সম্মানিত আহ্বায়ক, মোহাম্মাদ ইফতেখার উদ্দীন; একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, ড. আযিযুর রহমান; একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, ড. মাসুম বিল্লাহ; USTC’র সহযোগী অধ্যাপক, ডা. মোহাম্মাদ ইলিয়াস; বিশিষ্ট ডেন্টিস্ট ডা. মোস্তফা এনামুল হক; বুলবুলে বায়তুশ শরফ খ্যাত, মাওলানা কাজী শিহাব উদ্দীন; সাবেক কাউন্সিলর, অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী; প্রকৌশলী মিজানুর রহমানসহ আরো অনেকে। বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে গৌরবজ্জ্বল বায়তুশ শরফের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং প্রাক্তনদের মিলনমেলা আয়োজনের জন্য তাঁরা বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তাঁরা এই মাদরাসার উন্নয়নে প্রাক্তনদের সর্বাত্মক সহযোগীতা প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।
বর্তমান শিক্ষকমণ্ডলীর পক্ষ থেকে মূল্যবান নাসীহা ও দু’আ পেশ করেন উপাধ্যক্ষ জনাব আমিনুল হক, অধ্যাপক জামাল উদ্দীন ও মাদরাসার জনপ্রিয় সিনিয়র শিক্ষক জনাব শাহজাহান। সর্বশেষ পিকনিক উপকমিটির চেয়ারম্যান, জনাব মাইনুর রহমানের সমাপনী বক্তব্য এবং মাদরাসার উন্নতি , বর্তমান শিক্ষকবৃন্দের সুস্বাস্থ্য ও মরহুম শিক্ষকবৃন্দের রফে’ দারাজাত কামনা করে মুনাজাত পরিচালনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পরিবেশন করা হয় চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানী। কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফের বিশিষ্ট খাদেম ও পাচক জনাব আবদুল মান্নান বাবুর্চির নেতৃত্বে পরিচালিত এই মেজবানী সকলের প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়। মিলনমেলার সর্বশেষ আকর্ষণ ছিলো ৪টি নৌকাযোগে নৌ-বিহার। প্রায় ঘন্টা তিনেকের এই নৌ-বিহারে নবীন-প্রবীণ সকলেই বাঁধভাঙ্গা তারুণ্যের উচ্ছ্বলতায় ফিরে যায়। এই সময় প্রতিটি নৌকাতে চলছিলো কুরআনের সুমধুর তিলাওয়াত, ইসলামী সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত এবং মরমী সঙ্গীত।
উল্লেখ্য, এদিন উপস্থিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সামনে এসোসিয়েশনের সংবিধান পাশ করা হয় এবং দাখিল-১৯৯০ থেকে দাখিল-২০১৬ পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাচের ব্যাচ প্রতিনিধি শতভাগ ইসলামিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত করা হয়। ব্যাচ প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থী ছিলো না। বরং, ডেলিগেটগণই তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে। নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, রাঙ্গামাটি বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের সম্মানিত প্রিন্সিপ্যাল, জনাব মাওলানা শামসুল আরেফীন। ভোট গণনায় ছিলেন বায়তুশ শরফের সম্মানিত সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা ফরহাত আলম, জনাব জামাল উদ্দীন এবং জনাব শাহজাহান।
বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচিত ব্যাচ প্রতিনিধিগণের সাহায্যে অতিসত্বর একটি কার্যকরী কমিটি প্রদান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
/ মোআআ