ঝিকরগাছায় বিদেশ ফেরত ১২শ, অবাধে চলাফেরায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ১২শ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তি রয়েছে। তারা সম্পতি বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়ি ফিরেছেন। প্রত্যেক ইউনিয়নে কমিটি করে তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে বাধ্য করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে বিদেশ ফেরত এ সকল মানুষের অবাধ বিচারণে সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাজ ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলার বাঁকড়া এলাকায় অনেক নাগরিক ইতালী, মালেয়শিয়া, বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়ি এসেছে। তারা সরকারী কোন আইন না মেনে অবাধে হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম আতংক দেখা দিয়েছে। পুলিশে ফোন দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন গ্রাম থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানিয়েছেন, উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের উজ্জ্বলপুর গ্রামের মৃত জামশেদ আলীর ছেলে সিংঙ্গাপুর প্রবাসী ইসমাইল হোসেন, হাশেম আলীর জামাই বাহরাইন প্রবাসী গোলাম মোস্তফা, নটাই মোড়লের ছেলে মালেয়শিয়া প্রবাসী কামরুল ইসলাম, নুর ইসলামের ছেলে মালেয়শিয়া প্রবাসী শাহাজান আলী, আব্দুস সামাদের দুই ছেলে মালেয়শিয়া প্রবাসী খলিলুর রহমান ও ওলিয়ার রহমান, বাঁকড়া মাঠপাড়ায় রজব আলী ছেলে ইতালী প্রবাসী ভোলা, বাঁকড়া বাজারের সাবেক চেয়ারম্যান ইবাদ আলীর ছেলে লাল্টু রহমান, সোনাকুড় গ্রামের জগনাথের ছেলে ইতালী প্রবাসী বাপ্পি। তবে বাপ্পি হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে বলে তার পিতা জগো জানিয়েছেন।
বৃষ্টিপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মালেয়শিয়া প্রবাসী আল-আমিন, হাজিরবাগ গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে ইতালী প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম, তবে আশরাফুল ইসলাম হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে বলে হাজিরবাগ গ্রামের মাস্টার এনামুল কবীর জানিয়েছেন। হাজিরবাগ ইউপির মুকন্দপুর গ্রামের রমজান আলী, আক্তারুল ইসলাম, রাশেদ খান ও বিল্লাল হোসেন মালেয়শিয়া থেকে দেশে এসে খোলামেলা ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বাঁকড়া বাজারে ইতালী ও মালেয়শিয়া ফেরত প্রবাসীদের দেখে বাঁকড়া পুলিশকে ফোন করলে তারা ঝিকরগাছায় স্বাস্থ্য বিভাগে জানানোর কথা বলেছে বলে এক ব্যবসায়ী জানান।
এদিকে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক প্রত্যেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সদস্য, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও তাদের সদস্যসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে জরুরী সভা করেছেন। প্রত্যেক উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকতা ও প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের অধিনে একটি করে কমিটি গঠন করা হবে। তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। গোটা উপজেলায় মোট ১২শ জন বিদেশ থেকে বাড়িতে আসা মানুষ রয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের তালিকা করবেন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসে জমা দেবেন। এই তালিকা পাওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেব। সবাইকে বাধ্যতামুলক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। এটা আমাদের ১৫ দিনের একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের সকল নাগরিককে সহযোগিতা করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জে ও সকলের সচেতনতায় হয়ত বা দেশ অনেক বড় ঝুঁকির মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
/ মোজাহো