বাঘার আলাইপুরে বিজিবির উপর চোরাকারবারীর হামলা
রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবির উপর চোরাকারবারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উপজেলার শীর্ষ চোরাকারবারী ঝন্টুর পিতাকে আটক করে বিজিবি। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৪-মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার আলাইপুর সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিজিবির ৩ সদস্য শারীরিক ভাবে আহত হয়।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মীরগঞ্জ বিজিবির নায়েব সুবেদার নুর আমিনের নেতৃত্বে একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মীরগঞ্জ-আলাইপুর সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় পদ্মা নদীর বাধ ঘেরা আলাইপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আকরাম আলীর ছেলে শীর্ষ মাদককারবারী ঝন্টুর বাড়ীতে মাদক আছে বলে বাড়ী তল্লাশী করতে চাইলে বিজিবি।
ঘটনার এক পর্যায় বিজিবির সাথে অশালিন আচারণ এবং মারমুখি হয়ে উঠে আকরাম আলী। পরে তার ছেলে মাদকব্যবসায়ী ঝন্টু বাড়ীর মধ্যে থেকে হাসুয়া নিয়ে বিজিবির উপর হামলা চালায় এবং চিৎকার দিয়ে বিজিবিকে ধাওয়া করতে উদ্যাত হয়। এ ঘটনায় তাকে সহায়তা করে অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা। এতে বিজিবির ৩জন সদস্য শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত হয়।
এ সময় বিজিবির কাছ থেকে সরকারী মোবাইল ওয়ারলেস-সহ তিনটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় বলে জানান নায়েব সুবেদার নুর আমিন। এ সংবাদ পেয়ে মীরগঞ্জ ও আলাইপুর বিজিবির ক্যাম্পের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ঝন্টুসহ তার দলবল পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে চোরাকারবারী ঝন্টুর পিতা আকরাম আলীকে আটক করে মীরগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আনা হয়। সেখানে পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করে চেয়ারম্যানের জিম্মায় আকরাম আলীকে ছেড়ে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। যার সত্যতা স্বীকার করেন কোম্পানী কমান্ডার রফিক আলম। তবে তার ছেলে ঝুন্টুর বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ঝন্টুর দলবল ইতিপুর্বেও বিজিবির সঙ্গে বাড়ী তল্লাশি করাকে কেন্দ্র করে তাদের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে ছিলো। বিষয়টি নিশ্চিত করে সুবেদার রফিক আলম বলেন, সোর্সের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে বিজিবির সদস্যরা তার বাড়ি তল্লাশী করতে গেলে পরিকল্পিত ভাবে এর আগেও চোরাকারবারীরা বিজিবির উপর হামলা চালানোর চেষ্টা চালায়। তবে বাড়িতে মাদক না পাওয়ায় সেই বার তারা বেঁচে যাই।
পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ বলেন, ঝুন্টুর বাড়িতে ফেন্সিডিল থাকার সংবাদে বিজিবি দুপুরে অভিযানে যায়। এ সময় ঝুন্টু সরকারি কাজে বাধা দিয়ে বিজিবির উপর হামলা করা কাজটি ঠিক করেনি। এ হামলায় বিজিবির পোশাক ছিঁড়ে গেছে এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতে চিহৃ দেখা গেছে। আমরা কতিপয় স্থানীয় লোকজন ছেলের অপরাধে বাবাকে শাস্তি না দেয়ার জন্য অনুরোধ করি বিজিবির কাছে। পরে তারা একটি মুচলেকা নিয়ে পিতাকে ছেড়ে দেন।