খোকসাতে পাট শিল্প ধংসের মুখে কমেছে পাটের চাষ
খোকসা ( কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া জেলার খোকসাতে আশাঅনুরুপ পাটের লাভ না হওয়ায় খোকসাতে কমেছে পাট চাষ ও পাটের বেচাকেনা।
এছাড়া জেলায় পর্যাপ্ত সরকারি পাটকেন্দ্র না থাকায় লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। এর ফলে খোকসায় কমে গেছে পাটের চাষ ও মহাজনদের পাট বিক্রি খোকসাতে পাট ব্যাবসায়ীরা এখন পাটের ব্যাবসা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন পালন করছেন।

বিশিষ্ট্য পাট ব্যাবসায়ি মো: লিয়াকত হোসেন বিশ্বাস জানান খোকসা উপজেলাতে এক সময় পাটের স্রোত বয়ে যেত। দেশ বিদেশের ব্যাবসায়ী ক্রেতা এসে আমাদের কুষ্টিয়া জেলার খোকসা জানিপুর বাজার থেকে বড় বড় লরি ট্রাক ও নদী পথে পাট ক্রয় করে নিয়ে যেত। কুষ্টিয়া জেলার খোকসা জানীপুর উপজেলার পাট অনেক নামকরা ছিল। এ অঙ্চলের পাটের অনেক কদর আছে।
খোকসা উপজেলাতে সরকারী ভাবে পাটের কোন কারখানা বা বেসরকারি কোন কলকারখানা না থাকায় হারাতে হচ্ছে আমাদের পাট শিল্প। পাটের ব্যাবসাকে কেন্দ্র করে কিছু কিছু সরকারি বেসরকারি ব্যাংক এলেও এখন ব্যাবসা না থাকায় বসে বসে দিন পার করে। এদিকে পাটের আরেক বড় ব্যাবসায়ী নিত্য মিন্টু বাটু বিশ্বাস জানান আমরা পাটের সিজেনে পাঁচ হাজার থেকে বিশ হাজার মন করে পাট স্টক করতাম চাষীদের কাছ থেকে।
এখন পাটের বেচা কেন না থাকায় আর রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বাজার হারিয়েছি। চাষিরা নিরুসাহিত হচ্ছে পাট চাষের দিকে ঝুকতে, আর আমরা হারাচ্ছি সোনালী আশ।
ব্যাবসায়িরা আরও বলেন খোকসা মহিনি মিল সহ অনেক সরকারি জায়গা পরিত্যাগত ভাবে পড়ে আছে সরিকারি বা বেসরকারি ভাবে পাটকল স্থাপন হলে খোকসা উপজেলা বাসীসহ অত্র ্শেএলাকা ও এলাকার আশে পাশের এলাকার লোকজন যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে পাট চাষিরা আবার ঝুকবে পাট চাষে। পাট ব্যাবসায়িরাও পাবে নতুন জীবন।
কুষ্টিয়া জেলা মুখ্য পাট পরির্দশকের কার্যালয়ের তথ্য মতে, কুষ্টিয়া জেলার ছয় উপজেলায় গত বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৯৭৫ একর। আর চলতি বছর কুষ্টিয়া পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ একর। তবে সেখানে পাট চাষ হয়েছে ৬৮ হাজার ৮১৩ একর।
জানা যায়, চলতি বছর কুষ্টিয়ার সদর উপজলোয় পাট চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৩১০ একর,উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৭ হাজার ৯৩০ একর। কুমারখালি উপজলোয় পাট চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৩৮৬ একর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৯ হাজার ৩৭০ একর। খোকসা উপজলোয় পাট চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৮৬৭ একর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ হাজার ৬৪০ একর। মরিপুর উপজলোয় পাট চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৯২৮ একর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ হাজার ১৮১। ভেড়ামারা উপজলোয় পাট চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৪৪৭ একর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ হাজার ৪৩১ একর এবং দৌলতপুর উপজলোয় পাট চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৫ একর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০২ বলে।
মরিপুর উপজেলার চথিলিয়া গ্রামরে কৃষক আব্দুল মোমিন বলনে, ‘গত বছর ৩ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম । কিন্তু পাটের ভালো দাম না পাওয়ায় লোকসান হয়েছে। ফলে এ বছর পাটের জমিতে ধানের চাষ করেছি।’
ভেড়ামারা উপজলোর সোলদাগ গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী বলনে, ‘গত বছর আমি সাড়ে ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এবার কমিয়ে ৭ বিঘা জমিতে চাষ করছি । তবে অতিবৃষ্টির কারণে ৫ বিঘা জমির পাট অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ভেড়ামারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের র্কমর্কতা আব্দুল মজিদ বলনে, ‘চাষিরা ধান চাষে ঝুঁকে পড়ায় পাট চাষ কমে গেছে। এরপরও কৃষকদরে পাট চাষে আগ্রহ বাড়াতে নানাভাবে পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে।’
কুষ্টিয়ার মুখ্য পাট পরির্দশক সোহরাব উদ্দনি বিশ্বাস বলেন, ‘গত বছর কৃষকরা পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে এবং এলাকায় র্পযাপ্ত সরকারি পাটক্রয় কেন্দ্র না থাকায় কৃষকরা পাট বিক্রি করতে পারেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে এ মাসের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজিএমস) কুষ্টিয়ার পাটক্রয় কেন্দ্র থেকে সরকারিভাবে পাট কেনা শুরু হবে।’
/ কেএমতোহোজু