২১ আগষ্টের হামলায় নিহত ছেলের খুনিদের বিচার চান বাবা
জীবনের শেষে প্রান্তে দাঁড়িয়ে ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত ছেলের খুনিদের বিচার দেখে মরতে চান এই বৃদ্ধ বাবা।
নিজের দৈনন্দিন কাজের অবসর কাটে নিহত ছেলের সমাধীকে কেন্দ্র করে।
ছেলের সমাধীতে যাতায়াতের রাস্তা পাকা করণ, সেখানে বিদুৎ সংযোগ, গোড়স্থানের সীমানা প্রাচির সহ সামান্য প্রত্যাশা তার।
পাঁচ ওয়াক্ত মোনাজাতে দুই নাতীর মঙ্গল কামনা করেন ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার
ব্যক্তিগত দেহরক্ষি কুষ্টিয়ার খোকসার মাহবুবের বৃদ্ধ বাবা হারুন অর রশিদ।
২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ঘাতকদের ছোঁড়া গ্রেনেড আর বুলেটে মাহাবুবের মৃত্যুতে
বৃদ্ধ বাবা হারুন অর রশিদের সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
বগুড়া র্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে ছেলের রেখে যাওয়া বিবর্ণ সব স্মৃতি, স্বপ্ন আর হতাশার মধ্যেও যথেষ্ট প্রাপ্তি কথা জানালেন তিনি।
গত বুধবার কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তিহাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে দেখা মেলে কর্ম ব্যস্ত বৃদ্ধ হারুন অর রশিদের।
ছেলের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে হারুন অর রশিদের আক্ষেপের কথা গুলো বেড়িয়ে আসছিল।
ছোটো মেয়ে আবিদার একটি সরকারী চাকুরি হওয়ার পর তার বিয়ে হয়েছে একজন ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে।
এই শুসংবাদ দিয়ে প্রাপ্তির কথা শুরু করলেন।
তিনি দাবি করেন, স্ত্রী শামীমা আক্তার আসমা ও দুই পুত্র আশিক ও রবিনকে নিয়ে
জীবন যুদ্ধে সফল সৈনিক ছিলেন নিহত মাহাবুব। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিহত সৈনিকের শৈশব স্মৃতি জড়িত
ফুলবাড়ি স্কুলের পাশের কবর স্থানের সমাধী স্থলটি পাকা করে দেওয়ার পর থেকে
তিনি সেখানেই অবসর সময় কাটাতেন। কিন্তু পাকা রাস্তা না থাকায় বৃষ্টির দিনে সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করা কষ্ট।
তিনি বলেন, গ্রীল না থাকায় দৃষ্টি নন্দন সমাধী স্থলটির উপর কুকুর, শেয়াল চলা ফেরা করছে।
লিল গ্রাম থেকে গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার
সমাধী স্থলটির সুষ্ট সংরক্ষনের জন্য করব স্থানের সীমান প্রাচীর, রাস্তা ও বিদ্যুতের সংযোগ খুবই জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কথা বলেন গ্রেনেড হামলার বিচার নিয়েও। তিনি বলেন, ইতিহাসের নিকৃষ্টতম হামলা এটি। কিন্তু বিচার হচ্ছে না।
বিচার বিলম্বিত হওয়ায় তিনি বড়ই হতাশ বলেও জানান। মামলাটির দ্রæত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বাস্তবায়ন দেখে মরতে চান তিনি।
নিহত মাহাবুবের বয়বৃদ্ধ মা হাসিনা বেগমের ভাবনা দুই নাতি ও পুত্র বধূর ভবিষৎ নিয়ে।
শত কষ্ট ও হতাশার মধ্যেও নিহত ছেলে মাহাবুবকে নিয়ে গর্বিত এই বাবা।
শেখ হাসিনাকে ঘাতকদের বুলেট থেকে রক্ষায় তার ছেলের জীবন উৎসর্গ করার ঘটনাটি এখনো গর্বের সাথে উচ্চারণ করেন হারুন অর রশিদ।
এক সময়ের বিড়ি তৈরীর কারিগর পিতা হারুন অর রশিদের দ্বিতীয় পুত্র মাহাবুব।
বাড়ির পাশের ফুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার লেখা পড়ার হাতে খড়ি।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক ১
পাশের উপজেলা পাংশার বাহাদুরপুর শহীদ খবির উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এসএসসি পাশ করেন।
নিজের চেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে সৈনিক পদে নিয়োগ পান।
এতে দরিদ্র বাবার সংসারে এক মাত্র আশার প্রদীপ জ্বলে ওঠে।
ছোট চাকুরির আয়ে সংসারের উল্লেখ যোগ্য উন্নতি না করতে পারলেও তিন বেলা খাবারের নিশ্চয়তা হয়।
পাঁচ বোনের মধ্যে তিন বোনকে বিয়েও দেন। ছোটদের লেখা পড়ার খরচ চালাতেন তিনি।
সতির্থ সৈনিকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ২০০০ সালের দিকে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা এবং
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ড্রাইভার হিসাবে যোগদান করেন। বিশ্বস্ততা অর্জন করায় অল্প সময়ের মধ্যে নেতৃর ব্যক্তিগত দেহরক্ষির দায়িত্ব পান।
২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলার সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মাহাবুব নিহত হয়।
