সুনামগঞ্জে প্রবেশনে নিজ বাড়িতে সাজা ভোগ করবে ১৪ শিশু
সুনামগঞ্জে ১০ শিশু অপরাধের পৃথক মামলার যুগান্তকারী রায় এক আদেশে প্রবেশনে নিজ বাড়িতে থেকে সাজা ভোগ করবে ১৪ শিশু।
বখাটেপনা ও মাদক গ্রহণের দায়ে কারাগারে না পাঠিয়ে প্রবেশনে নিজ বাড়িতে থেকে ১৪ শিশু’র সাজা ভোগ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ১০ টি পৃথক মামলার একসঙ্গে দেওয়া রায়ে সুনামগঞ্জের
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই আদেশ দেন।
ছাতকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযোগ দায়ের
সাজাপ্রাপ্ত শিশুদের অপারাধের মধ্যে রয়েছে, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে টাকা গ্রহণ।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি ভিকটিমের ছবির সঙ্গে সংযুক্ত করে ফেইস বুকে ছড়িয়ে অশ্লীল ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ।
পুলিশকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা তামিলে বাঁধা প্রদান ও আসামী পলায়নে সহায়তা, শ্লীলতাহানী, দায়বদ্ধভাবে লাঠি দিয়ে মারপিট করে করার অপরাধ,
মাদক রাখার অপরাধ এবং জুয়া খেলার অপরাধ।
১০টি পৃথক মামলার বিভিন্ন ধারার মামলার পর্যালোচনা ও শুনানী শেষে বুধবার আদালত একসঙ্গে দেওয়া রায়ে অপরাধে জড়িত
১৪ শিশুকে বাড়িতে থেকে সাজা ভোগ করার আদেশ দেন।
দুর্গা পূজায় টানা চার দিনের ছুটির ফাঁদে বেনাপোল স্থলবন্দর
এসময় তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মো. শফিউর রহমান।
নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায় বলেন, আদালত ১০ শিশু অপরাধ মামলায় একসঙ্গে যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জে প্রবেশনে আদেশে আদালত বলেছেন, প্রবেশনের সময় অপরাধে জড়িত শিশুরা
বাবা মা’র আদেশ নির্দেশ মেনে চলা ও বাবা মা’র সেবা যতœ করতে হবে।
ধর্মীয় অনুশাসন মানা ও ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে হবে। প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০ টি করে গাছ লাগানো ও পরিচর্যা করতে হবে।
অসৎ সঙ্গ ত্যাগ ও মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে পারবে না।
প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মো. শফিউর রহমান বলেন, আদালতের উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিশুদের কারাগারে না দিয়ে প্রবেশনের সময় পারিবারিক বন্ধনে রেখে
শিশুদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
প্রবেশন কর্মকর্তা এবং শিশুদের অভিভাবকরা নিবিড় তত্বাবধানে রেখে ভবিষ্যতে যাতে শিশুরা অপরাধে না জড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা,
জীবনের শুরুতেই যাতে শাস্তির কালিমা তাদের স্পর্শ না করে সেজন্য শাস্তি না দেওয়া, সংশোধানাগারে অন্যান্য যারা বিভিন্ন অপরাধে আটক আছে,
তাদের সংস্পর্শ থেকে দুরে রাখা, পরিবারের সংস্পর্শে রেখে শিশুদের স্বাভাবিক মানসিক বিকাশের ব্যবস্থা করা।
সর্বোপরি শিশুর সার্বিক কল্যান সাধন করার আদালতের উদ্দেশ্য।
একসঙ্গে পৃথক পৃথক ১০ শিশু অপরাধের মামলার রায় শুনার জন্য বুধবার সকাল থেকেই সুনামগঞ্জের
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আইনজীবী ও গণমাধ্যম কর্মীরা ভিড় করেন।