দেশব্যাপীপরিবেশ ও সমাজজীবনশৈলীভ্রমণশিরোনামসর্বশেষসব খবর

বেনাপোল ও যশোর ২৯ হোটেল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার

বেনাপোল ও যশোর ২৯ আবাসিক হোটেল এখন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার
ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় আটকা পড়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে

ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় আটকা পড়া বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে।
এর মধ্যে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী দেশে ফিরেছে ৮৮ জন আর ভারতীয় ফিরে গেছে মাত্র ৪ জন।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে গত এক সপ্তাহে
১ হাজার ২৯৬ জন পাসপোর্টযাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে দেশে ফিরেছেন।
অপরদিকে বাংলাদেশে আটকা পড়াদের মধ্যে ১২০ জন পাসপোর্টযাত্রী ভারতে ফিরে গেছেন।

সোমবার (০৩ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব।
তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার ভারতের করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ রোধে ২৬ এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এতে করে ভারতে আটকা পড়ে কয়েক হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী। সেসব আটকা পড়া পাসপোর্ট যাত্রীদের নিজ দেশে ফিরতে হলে
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে
আরটিপিসিআর ল্যাবের করোনা টেস্টের সনদ নিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশনা দেন বাংলাদেশ সরকার।
যেসব যাত্রী করোনায় আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে দেশে ফিরছেন তাদের যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে করোনা ইউনিটে পাঠানো হচ্ছে।

নড়াইলে কৃষক অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ শুভ উদ্বোধন

এদিকে বেনাপোল ও যশোরের ২৯টি হোটেল এখন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার।
বেনাপোল ও যশোর ২৯ টা হোটেলগুলোসহ বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে রোববার পর্যন্ত মোট এক হাজার ২৯৬ জন
ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
এছাড়া যশোরের আশপাশের চার জেলার হোটেলগুলোও কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, খুলনা, ঝিনাইদহ ও নড়াইল।
ভারতে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীরা বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন।
এ তালিকা কয়েকদিন দীর্ঘ হলেও আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে।

সেইসাথে অনেকের দেহে মিলছে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট।
ভারত ফেরত প্রত্যেক পাসপোর্টযাত্রীকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক সেলফ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
যা নিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগসহ জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বিপুল সংখ্যক এসব মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে গিয়ে জেলা প্রশাসন যশোরের প্রায় সব আবাসিক হোটেল রিক্যুইজিশন করেছে।

এরমধ্যে তারকা হোটেলগুলোও বাদ পড়েনি।
শুক্রবার জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে হোটেল মালিকদের নিয়ে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অবশ্য এ সভার আগেই বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবাসিক হোটেল রিক্যুইজিশনের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।

যশোরে রিক্যুইজিশন করা ১৬টি আবাসিক হোটেল হলো জাবির হোটেল ইন্টারন্যাশনাল, হাসান ইন্টারন্যাশনাল, সিটি প্লাজা,
শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ডরমেটরি, ম্যাগপাই, আর এস, মণিহার, ম্যাক্স, সোনালী, সিটি হোটেল,
শাহরিয়ার, বলাকা, নয়ন, নিউওয়ে, প্রিন্স, সিটি এবং যশোর হোটেল।

এসব হোটেলে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারত থেকে ফিরে আসা পাসপোর্টযাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে হোটেল নয়নে ৩৭ জনকে, হাসান ইন্টারন্যাশনালে ৪৪, ম্যাগপাইয়ে ১৭, আরএস হোটেলে সাতজন, হোটেল ম্যাক্সে ১১ জন ও
শেখ হাসিনা আইটি পার্কের ডরমেটরিতে ছয়জনকে রাখা হয়েছে।

এছাড়া ঝিকরগাছা উপজেলার গাজীর দরগাহ এতিমখানা ও মাদ্রাসায় দুশ’জন, যশোর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ২৯ জন,
উপশহর ক্লিনিকে সাতজন, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন, বেনাপোলের রজনীগন্ধা, পোর্টভিউ, আ্যারিস্টোকেট,
জুয়েল আবাসিক, চৌধুরী হোটেল, নিশাদ হোটেল, ফ্রেশ হোটেল, নাহিদ হোটেল, হোটেল সানসিটি, মৌ হোটেল,
হোটেল সিটি, বেনাপোল পর্যটন ও রহমানিয়া হোটেলে রয়েছেন তিনশ’ ৫৩ জন।

ইতিমধ্যে বেনাপোলের হোটেলগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে।
একইসাথে যশোরের পাশের জেলার মানুষের আবেদনের প্রেক্ষিতে খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ ও
নড়াইলের হোটেলগুলোতেও তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ হিসেবে খুলনায় ব্যবস্থা করা হয়েছে সাতশ’ জনের, ঝিনাইদহে দুশ’ ৫০ জন, নড়াইলে একশ’ ৫০ জন ও সাতক্ষীরায় চারশ’ জন।

পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে চারঘাটে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

এদেরমধ্যে যারা আর্থিক সংকটে আছেন তাদেরকে ঝিকরগাছার গাজির দরগাহ মাদ্রাসায় রাখা হচ্ছে।
তাদেরকে জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া যাদের আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে তারা ইচ্ছা করলেই পাঁচ তারকা হোটেলে থাকতে পারবেন।
একইসাথে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসা এসব মানুষের মধ্যে রোববার এসেছেন ৮৮ জন।

নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান জানান, যেসব স্থানে ভারত ফেরত যাত্রীদের রাখা হয়েছে,
সেখানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।
১৪ দিন অবস্থানের পর করোনা নেগেটিভ সনদপ্রাপ্তি সাপেক্ষে এসব যাত্রীকে নিজ বাড়িতে যেতে দেয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকতা ডাক্তার ইউসুফ আলী জানান, এছাড়া সেসব পাসপোর্ট যাত্রীরা দেশে ফিরছেন
তাদের বাধ্যতামূলক বেনাপোলের কয়েকটি আবাসিক হোটেল,
ঝিকরগাছার গাজিরদরগা এতিমখানায় ও যশোরের বিভিন্ন হোটেলের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছিল।

এসব আবাসিক হোটেলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় যশোরের আশেপাশের ৪ জেলায়ও আবাসিক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ভারত ফেরতদের চিকিৎসার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
যাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই, তাদেরকে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ভারত থেকে যত যাত্রী ফেরত আসার কথা আমরা চিন্তা করছিলাম,
তার থেকে অনেক বেশি এসেছে কয়েকদিনে। বেনাপোলের হোটেলগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে।
যে কারণে এখন যশোর শহরের হোটেল মালিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে রিক্যুইজিশন করা হয়েছে।
তিনি জানান, হোটেলের মালিকরা ভারত ফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বল্প খরচে থাকার ব্যবস্থা করতে সম্মত হয়েছেন।
এসব হোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

/ মোঃ জামাল হোসেন

https://shopnotelevision.wixsite.com/reporters
http://shopno-tv.com/
The Bangla Wall
http://shopno-tv.com/
https://shopnotelevision.wixsite.com/reporters
http://shopno-tv.com/

বেনাপোল (যশোর) করেসপনডেন্ট

Md. Jamal Hossain Mobile: 01713-025356 Email: jamalbpl@gmail.com Blood Group: Alternative Mobile No: Benapole ETV Correspondent

2 thoughts on “বেনাপোল ও যশোর ২৯ হোটেল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *